জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের জন্য ঘোষিত দলে চমক ছিল ফজলে রাব্বির অন্তর্ভুক্তি। তবে হাবিবুল বাশার জানালেন, ঘরোয়া ক্রিকেটে সামর্থ্যের প্রমাণ দিয়েই জায়গা আদায় করেছেন তিনি।
শনিবার মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে দল নির্বাচন নিয়ে কথা বললেন সাবেক অধিনায়ক। নির্বাচক কমিটির এই সদস্যের বক্তব্যের বেশির ভাগ জুড়ে ছিলেন ফজলে রাব্বি, ‘তার ক্যারিয়ারটা কিন্তু বেশ মজার। সে আমাদের হাই পারফরম্যান্স স্কোয়াডে ছিল পাঁচ ছয় বছর আগে। তখন কিন্তু খুবই সম্ভাবনাময়ী ছিল, তারপর একটু ফর্মে ভাটা পড়েছিল। তবে গত তিন বছরে অনেক বদলে গেছে সে। খেলায় অনেক পরিবর্তন এসেছে। এখন সে অনেক পরিণত।’
‘এ’ দলের সফরে ফজলে রাব্বির পারফরম্যান্স নজর কেড়েছে নির্বাচকদের। হাবিবুল বাশার বলেছেন, ‘খুব ভালো ব্যাটিং করেছে সে ‘এ’ দলের হয়ে। তার ফিটনেস ভালো আছে। আর আমাদের এমন একজন ব্যাটসম্যান দরকার যে ঠিক সাকিব আল হাসানের মতো না হলেও বোলিং করতে পারবে। আমরা দেখেছি তার বোলিংটাও বেশ কার্যকরী। এজন্যই তাকে বিবেচনায় রাখা হয়েছে। তার সামনে এখনও অনেক বছর পড়ে আছে। আশা করি সে আমাদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবে।’
৮০টি লিস্ট ‘এ’ ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা আছে ফজলে রাব্বির। পারফরম্যান্সও চোখে পড়ার মতো। ৪ সেঞ্চুরি ও ১২ হাফসেঞ্চুরিতে বরিশাল বিভাগের এই ক্রিকেটারের রান ২ হাজার ২০০। গত জুলাই ও আগস্টে ‘এ’ দলের হয়ে আয়ারল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ব্যাট হাতে দারুণ ছিলেন তিনি, ৭ ম্যাচ খেলে তিনটি হাফসেঞ্চুরি।
ফজলে রাব্বির বিশেষত্ব নিয়ে হাবিবুল বাশার বলেছেন, ‘আমি তাকে অনেক আগে থেকেই দেখেছি। তার ব্যাটিংটা এখন অনেক বদলে গেছে। আমি দেখেছি (আয়ারল্যান্ড সফরে) সে দলের প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যাটিং করতে পারে, প্রান্ত বদল করে খেলে। একই সঙ্গে প্রয়োজনে বড় শট খেলার সামর্থ্য রাখে। এটাই তাকে দলে নেওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলেছে। একই সঙ্গে সে একজন ভালো ফিল্ডার, সঙ্গে স্পিন বল করতে পারে। সব মিলিয়ে আমাদের জন্য তাকে প্যাকেজ বলা চলে।’
সাকিব তিন নম্বরে ব্যাটিং করলেও ফজলে রাব্বিকে কোথায় দেওয়া হচ্ছে চূড়ান্ত হয়নি। তবে মিডল অর্ডারে তাকে রাখার আভাস দিলেন হাবিবুল বাশার, ‘সে খেলা শুরু করেছিল একজন ওপেনার হিসেবে। সেখান থেকে ৩ নম্বরে ব্যাট করেছে। এখন সে মিডল অর্ডারে পাঁচ-ছয় নম্বরে ব্যাট করছে ‘এ’ দলের হয়ে। তাই তার জন্য তিন থেকে পাঁচ-ছয়ের মধ্যে ব্যাট করা আদর্শ হবে।’
সাত নম্বর জায়গায় পাওয়ার হিটার হিসেবে সুযোগ পেয়েছেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। আগে এই জায়গায় ব্যাটিং করতেন সাময়িক নিষেধাজ্ঞায় থাকা সাব্বির রহমান। এখানে আরিফুল হক কিংবা সৌম্য সরকারকে বিকল্প মনে করা হলেও সাইফউদ্দিনকে নেওয়ার কারণ হিসেবে হাবিবুল বাশার বলেন, ‘৭ নম্বরে আমরা একজন বোলিং অলরাউন্ডারের খোঁজে ছিলাম। তারা দুজন (আরিফুল ও সৌম্য) মূলত ব্যাটিং অলরাউন্ডার। তাদের কাছ থেকে আমরা প্রথমে ব্যাটিং ও পরে বোলিং আশা করি। ৭ নম্বরে আমরা এমন কাউকে চাইছিলাম যে মূলত বোলার, সঙ্গে ব্যাটও করতে পারে। এজন্য আমরা সাইফউদ্দিনকে এই সিরিজে নিয়েছি।’
এশিয়া কাপে সাকিব আঙুলের ইনজুরিতে বাদ পড়ায় সেমিফাইনালে সুযোগ পেয়েছিলেন মুমিনুল হক। জিম্বাবুয়ে সিরিজে বাদ পড়লেন তিনি। তাকে না রাখার পেছনে হাবিবুল বাশারের ব্যাখ্যা, ‘মুমিনুলের বাদ পড়া দুর্ভাগ্যজনক। তার ওয়ানডে ক্যারিয়ার এখনই শেষ হয়ে যায়নি। আমার মনে হয় ওয়ানডেতে তার দেওয়ার অনেক কিছুই আছে। কিন্তু আমাদের কয়েকজন ক্রিকেটারকে দেখতে হতো, সামনে যেহেতু অনেকগুলো সিরিজ আছে। তাদের সুযোগ দিতে গিয়েই বাদ পড়েছে মুমিনুল।’
এশিয়া কাপে খেলা মোসাদ্দেক হোসেনের বাদ পড়ার পেছনে ফর্মহীনতাকে দায়ী করেছেন এই নির্বাচক, ‘মোসাদ্দেকের ফর্ম নিয়ে আমরা খুব একটা সন্তুষ্ট নই। তার জায়গা ৭ নম্বরে সে কার্যকরী ব্যাটিং করতে পারছে না।’