সুযোগ পেলে আইপিএলে সেরাটা দিতে প্রস্তুত সাকিব

মাত্র একটি ম্যাচ খেলেছেন সাকিবকলকাতা নাইট রাইডার্সের বিপক্ষে আইপিএলে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের প্রথম ম্যাচে ছিলেন সাকিব আল হাসান। জন্মদিনটা রাঙাতে পারেননি জয়ে। এরপর আরও ৭ ম্যাচ খেলে ফেলেছে গতবারের রানার্স-আপরা। কিন্তু আর ডাক পাননি বাংলাদেশের টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক। ড্রেসিংরুমেই সময় কাটাচ্ছেন তিনি। দলে ভূমিকা রাখতে না পারার যন্ত্রণা এবং টি-টোয়েন্টিতে অফস্পিনারদের ভূমিকা নিয়ে নিজের মতামত ব্যক্ত করলেন তিনি ক্রিকইনফোর সাক্ষাৎকারে:

প্রশ্ন: টি-টোয়েন্টিতে একজন স্পিনারের কেমন কাটে সেটা নিয়ে বলুন?

সাকিব: কঠিন। বিশেষ করে অফস্পিনারদের জন্য এটা খুব কঠিন। যদি আপনি লেগস্পিনার হন, তাহলে কিছুটা সুবিধা পান। কিন্তু বেশির ভাগ মাঠ তেমন বড় নয়। আর এটা এমন ফরম্যাট, যেখানে ব্যাটসম্যানরা সবসময় চড়াও হয়ে থাকে। এই ফরম্যাটে টিকে থাকতে কিংবা ভালো করতে হলে আপনাকে যে কোনও কিছুর জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।

প্রশ্ন: লেগস্পিনারদের জন্য কী সুবিধা একটু ব্যাখ্যা করতেন যদি?

সাকিব: কারণ এটা কিছুটা আনঅর্থোডক্স। ৫ থেকে ১০ বছর আগে এমন বোলার ছিল খুব কম। শেন ওয়ার্ন ও অনিল কুম্বলে ছাড়া খুব বেশি লেগস্পিনারদের নাম আপনি বলতে পারবেন না। তাই লেগস্পিনারদের মোকাবিলায় অভ্যস্ত নয় ব্যাটসম্যানরা। এটা খেলোয়াড়দের কাছে নতুন। যখন তারা অভ্যস্ত হবে তখন লেগস্পিনারদের ভিন্ন পরিকল্পনা নিয়ে নামতে হবে মাঠে।

প্রশ্ন: খুব তাড়াতাড়ি এমন কিছু হবে?

সাকিব: ৩ থেকে ৪ বছরের মধ্যে এটা হবে। কারণ আজকাল সব দলেই একজন বা দুজন লেগস্পিনার দেখা যায়। তাই ব্যাটসম্যানরা চেষ্টা করছে সেভাবে খেলতে। আর তাদের বিপক্ষে ভালোই খেলছে। যখন তারা আরও ভালো খেলতে থাকবে, তখন আরও উন্নত পরিকল্পনা নিয়ে লেগস্পিনাররা মাঠে নামবে।

প্রশ্ন: হরভজন সিং বলেছেন বল টার্নের চেষ্টা করলেই অফস্পিনাররা উইকেট পাবে, আপনি কি একমত?

সাকিব: উইকেট পেতে হলে একজন অফস্পিনারকে বল টার্ন করাতেই হবে। একই সময়ে সুযোগও নিতে হবে। কিন্তু উইকেট পেতে হলে আপনাকে বল ঘুরাতে হবে।

প্রশ্ন: টি-টোয়েন্টিতে এটা কঠিন নয় কি?

সাকিব: হ্যাঁ। যতক্ষণ না টার্ন করানো যায়, এটা খুব কঠিন। কারণ তখন আপনাকে টিকে থাকার চেষ্টা করতে হবে- যেন বাউন্ডারি না হয় এবং বল যেন ব্যাটসম্যানের প্যাডে কিংবা একটু ইয়র্কার বা অন্য কিছু হয়। কিন্তু রেকর্ডের দিকে তাকান, আমি মনে করি এখনও অনেক উইকেট পাচ্ছে স্পিনাররা।

প্রশ্ন: এই মৌসুমে এখন পর্যন্ত সানরাইজার্স হায়দরাবাদের অবস্থা কেমন দেখছেন?

সাকিব: আমি বেশি ম্যাচ খেলিনি। এটা হতাশার, কিন্তু একই সঙ্গে বড় চোখে এটা দেখতে হবে। সব বিদেশি খেলোয়াড়রা সত্যিই ভালো করছে এবং দলও। তাই এই অবস্থায় আমার জন্য খেলা খুব কঠিন। কিন্তু আমাকে পরিশ্রম করতে হবে, যখন সুযোগ আসবে তখন যেন সর্বোচ্চটা দিতে পারি।

এই মুহূর্তে আমি মনে করি আমরা ভালো করেছি। আমরা কয়েকটি ম্যাচে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করেছি, সেগুলো জেতা উচিত ছিল কিন্তু হেরে গেছি। এটাই এই ফরম্যাটের সৌন্দর্য। আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যেন গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে আমরা লড়াই জিততে পারি।

প্রশ্ন: টানা তিন ম্যাচ হারের পর দলে কী আলোচনা হয়েছিল?

সাকিব: প্রত্যেকে হতাশ ছিল। কিন্তু জানি এটা টি-টোয়েন্টি, এমনটা হতেই পারে। এই বাজে সময় কাটাতে একটা দারুণ মুহূর্ত দরকার। আমরা সেটার জন্য অপেক্ষা করছি এবং বলা যায় সেটা পেয়েও গেছি। আমরা যদি সেটা ধরে রাখি তাহলে খুব ভালো অবস্থায় থাকবো।

প্রশ্ন: একজন সিনিয়র খেলোয়াড় হিসেবে সাইডলাইনে থাকা এবং দলকে সাহায্য করতে না পারা কি হতাশার নয়?

সাকিব: অবশ্যই কষ্টের। এটা হতাশার। কিন্তু একই সঙ্গে আমাকে পরিস্থিতি বুঝতে হবে। আমি নেটে আমার সেরাটা করছি। আমার স্কিল ও ফিটনেস নিয়ে সত্যিই অনেক পরিশ্রম করছি। আমি আমার সুযোগের অপেক্ষায় আছি এবং নিশ্চিত করতে চাই সুযোগ পেলেই আমার সেরাটা যেন দিতে পারি।