শেষ ওভারে স্বাগতিকদের দরকার ছিল ১৫ রান। বল হাতে নেন ট্রেন্ট বোল্ট। প্রথম দুই বলে কোনও রান নিতে পারেননি স্টোকস। তবে তৃতীয় বলে দারুণ এক ছক্কার পরের বলে সৌভাগ্যের ছোঁয়ায় ৬ রান পেয়ে যান তিনি। দ্বিতীয় রান নিতে গিয়ে মার্টিন গাপটিলের থ্রোয়ে তার ব্যাটে বল লেগে বাউন্ডারি হয়ে যায়। শেষ দুই বলে দুটি রান আউট হলেও স্কোর সমতায় ছিল। তাতে হয় ম্যাচ টাই। সুপার ওভারে আগে ব্যাট করতে নামে ইংল্যান্ড। ট্রেন্ট বোল্টের ওই ওভারে স্টোকস ও বাটলারের ব্যাটে ১৫ রান করে তারা। স্টোকস ও বাটলার একটি করে বাউন্ডারি মারেন। রোমাঞ্চ ছড়ায় নিউজিল্যান্ডও। লক্ষ্যে নেমে জোফরা আর্চারের প্রথম দুই বলেই পেয়ে যায় তারা ৯ রান। প্রথম বল ওয়াইডের পর নিশাম ৬ মারেন। তৃতীয় ও চতুর্থ বলে ২টি করে রান নেন নিশাম। তাতে শেষ ২ বলে ৩ রান দরকার ছিল কিউইদের। পঞ্চম বলে দৌড়ে একটি রান নেন নিশাম। তাতে শেষ বলে লক্ষ্য দাঁড়ায় ২ রানের। মার্টিন গাপটিল দ্বিতীয় রান নিতে গিয়ে রান আউট হন। তিনি সীমানায় পৌঁছানোর আগেই জেসন রয়ের থ্রো থেকে বাটলার বল হাতে নিয়ে ভেঙে দেন স্টাম্প। সুপার ওভারও টাই হলে ৫০ ওভারের ইনিংসে বাউন্ডারি বেশি থাকায় জিতে যায় ইংল্যান্ড।
ফেভারিট হিসেবে বিশ্বকাপ শুরু করেছিল ইংল্যান্ড। দ্বিতীয় ম্যাচে পাকিস্তানের কাছে হারলেও স্কোরবোর্ডে দাপট ছিল তাদের শুরু থেকে। কিন্তু হঠাৎ খেই হারিয়ে ফেলে তারা। শ্রীলঙ্কা ও অস্ট্রেলিয়ার কাছে হার খাদের কিনারায় রেখেছিল তাদের। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে ভারত ও নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে ২৭ বছর পর নিশ্চিত করে সেমিফাইনাল, যেখানে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অজিদের উড়িয়ে দিয়ে জায়গা করে নেয় চতুর্থ ফাইনালে। লর্ডস প্রস্তুত ছিল নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়নকে বরণ করে নিতে। শেষ পর্যন্ত ঘরের ছেলেরাই ট্রফি হাতে উদযাপন করলো নিজেদের ব্যালকনিতে। কিন্তু নিউজিল্যান্ডও ফাইনালে লড়াই করলো শেষ বল পর্যন্ত। তারপরও টানা দ্বিতীয়বার হতাশা নিয়ে ঘরে ফিরতে হচ্ছে কিউইদের।
লক্ষ্যে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি ইংল্যান্ডের। প্রায় প্রত্যেক ম্যাচে দলের দারুণ শুরুর ভিত গড়ে দেওয়া জেসন রয় বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। তাকে ১৭ রানে ফেরান ম্যাট হেনরি। কিউই পেসারের আউট সুইং বলটি ঠিকঠাক বুঝে উঠতে পারেননি জেসন। বল তার ব্যাট স্পর্শ করে জমা পড়ে উইকেটরক্ষক টম ল্যাথামের গ্লাভসে। ২০ বলের ইনিংসে মেরেছেন তিনি ৩ বাউন্ডারি।
কিউই পেসারদের চমৎকার বোলিংয়ে মোটেও সুবিধা করতে পারছিলেন না জো রুট। ফাইনালের চাপ সম্ভবত নিতে পারছিলেন এই ব্যাটসম্যান। শেষ পর্যন্ত ৩০ বলে মাত্র ৭ রান করে কলিন ডি গ্র্যান্ডহোমের শিকার হন তিনি। উইকেটরক্ষক ল্যাথামের গ্লাভসে ধরা পড়েন রুট।
‘দ্বিতীয় জীবন’ নিয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি জনি বেয়ারস্টো। লকি ফার্গুসনের বলে বোল্ড হন ইংলিশ ওপেনার। প্যাভিলিয়নে ফেরার আগে ৫৫ বলে ৭ বাউন্ডারিতে করেন ৩৬ রান।
কিউই পেসারদের তোপে ৮৬ রানে ৪ উইকেট হারানো ইংল্যান্ড ঘুরে দাঁড়ায় স্টোকস ও বাটলারের জুটিতে। পঞ্চম উইকেটে ১১০ রানের জুটি গড়েন তারা, যাতে আবার জয়ের আশা জেগে ওঠে তাদের। কিন্তু ৫৯ রানে বাটলারকে ফিরিয়ে ব্রেক থ্রু আনেন ফার্গুসন। পরের ওভারে ক্রিস ওকসকে ২ রানে ল্যাথামের ক্যাচ বানন কিউই পেসার। তাতে আবার চাপে পড়েছিল ইংল্যান্ড।