শুরুটা মোটেও ভালো হলো না

Lipu bhai picতিন ম্যাচের সিরিজে শুরুতেই জয় পাওয়াটা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ, কারণ প্রথম ম্যাচ হেরে গেলে সেখান থেকে পরপর দুটি ম্যাচ জিতে সিরিজ জয় করাটা কঠিন হয়ে পড়ে। আর দলে যখন দেশের প্রথম একাদশের চারজন অনুপস্থিত থাকে, তখন মানসিক চাপটাও অনেকখানি বেড়ে যায় লক্ষ্যে পৌঁছাতে।

আমাদের এই দলে বোলিং সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল মাশরাফি, সাকিব ও সাইফউদ্দিন না থাকায়। বিশেষ করে, সাকিবের ১০ ওভার কোনও স্পিনারের পক্ষেই পূরণ করা সম্ভব নয়। আমাদের বোলিং দুর্বলতায় প্রথম ১৫ ওভারে দ্রুত রান সংগ্রহ করে শ্রীলঙ্কা একটা শক্ত অবস্থানে চলে যায় এবং তাদের ওপরের সারির ব্যাটসম্যানদের আমাদের কোনও বোলারই আউট করতে না পারায় বড় সংগ্রহ অনায়াসেই শ্রীলঙ্কা পেয়ে যায়। তবে শেষের ১৫ ওভার আমাদের নিয়ন্ত্রিত বোলিং শ্রীলঙ্কার নিশ্চিত ৩৪০ রানের সংগ্রহকে ৩১৪-তে বেঁধে রাখে।

দিনের শুরু থেকে আমাদের বোলিং আশা করেছিল দলের খেলোয়াড়দের কাছ থেকে ফিল্ডিংয়ে যোগ্য সমর্থন পাবে। গ্রাউন্ড ফিল্ডিং মাঠের সর্বত্রই ছিল প্রত্যাশার চেয়ে অনেক নিচে এবং মাহমুদউল্লাহর ক্যাচ ফেলে দেওয়ার দৃশ্যটি ছিল বেদনাদায়ক। অনিয়মিত বোলার সৌম্য তার নিয়ন্ত্রিত ৫ ওভারে দেখিয়েছেন ‍এই মন্থর পিচে স্লোয়ার ডেলিভারি কত কার্যকরভাবে করা যায়। যথেষ্ট পরিমাণ শর্ট পিচ বল করেছেন রুবেল হোসেন, যা এই পিচের জন্য মোটেও কার্যকর ছিল না।

শ্রীলঙ্কান দলের ব্যাটিংয়ে দুই, তিন, চার ও পাঁচ নম্বরে ব্যাট করা সবাই অবদান রাখাতে তাদের লোয়ার অর্ডারের দিকে তেমন নির্ভর করতে হয়নি। ইনিংসে বড় ও মাঝারি মানের পার্টনারশিপ হয়েছে। দারুণ ব্যাট করেছেন কুশল পেরেরা, তার ইনিংসটি ছিল সব ধরনের চমৎকার স্ট্রোকসে পরিপূর্ণ।

ফিল্ডিংয়ে যখন আমরা কোণঠাসা, তখন বিভিন্ন সময়ে ক্যামেরায় তামিম ইকবালকে দেখে মনে ‍হয়েছে যে, তিনি এই বোলিং-ফিল্ডিংয়ে যেমন সন্তুষ্ট নন, তেমনি এর একটা প্রেশার তার ব্যাটিংয়ে পড়তে পারে। ম্যাচের অন্যতম সেরা একটি ডেলিভারিতে তিনি সাজঘরে ফেরত আসেন। ৩১৫ রান তাড়া করতে গিয়ে ৩৯ রানে ৪ উইকেট হারালে সেখান থেকে ম্যাচে ফেরত আসতে অসাধারণ পার্টনারশিপ দরকার ছিল। কিন্তু মুশফিক ও সাব্বিরের লড়াই সেটার জন্য যথেষ্ট ছিল না। ইনফর্ম সাকিবের অভাব দলে দারুণভাবে অনুভূত হয়েছে। অথচ দুর্বলতম একটি দলের সঙ্গে তিন নম্বরে ব্যাটিংয়ের সুযোগটা মোহাম্মদ মিঠুনের আরও ভালোভাবে কাজে লাগানো উচিত ছিল। তামিম, সৌম্য ও মাহমুদউল্লাহর কাছে দলের প্রত্যাশা অনেক এবং আগামী দুটি ম্যাচে তাদের ঘুরে দাঁড়ানোর ওপর সবকিছু নির্ভর করছে।

লাসিথ মালিঙ্গা তার বিদায়ী ম্যাচটি উজ্জ্বল করলেন নিজের প্রথম স্পেলে সেরা দুই ডেলিভারিতে আমাদের দুই ওপেনারকে ফেরত পাঠিয়ে। আর এটাই এই ম্যাচে ছিল বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় ধাক্কা। মালিঙ্গা দলের জন্য দারুণ একটা মোমেন্টাম এনে দিলেন। দলকে জেতালেন তিনি শেষ একদিনের ম্যাচে।

তিনি একজন দারুণ ক্রিকেটার ছিলেন, দারুণ যোদ্ধাও। সারা বিশ্বের সঙ্গে আমরাও মাঠে তাকে মিস করব খুব। এই কিংবদন্তি ক্রিকেটারের প্রতি থাকলো শুভেচ্ছা।