ফিটনেস টেস্টের আগে আরও সময় চান ক্রিকেটাররা

ফিটনেসের উন্নতি হওয়ায় রাজ্জাক-আশরাফুলরা খুশিবিসিবির নিয়ম অনুযায়ী, এবারের জাতীয় লিগে খেলতে হলে ফিটনেস টেস্টে পাশ করতে হবে ক্রিকেটারদের। গত মঙ্গলবার এই পরীক্ষায় পাস করতে পারেননি মোহাম্মদ আশরাফুল, আব্দুর রাজ্জাক, নাসির হোসেন, ইলিয়াস সানি সহ বেশ কয়েকজন। রবিবারও তারা নির্ধারিত ১১ পয়েন্টে পৌঁছাতে ব্যর্থ। অবশ্য আগের চেয়ে উন্নতি হয়েছে। দ্বিতীয়বার ‘ফেল’ করার পর রাজ্জাক-আশরাফুলদের অভিমত, ফিটনেস টেস্টের আগে আরেকটু সময় দেওয়া উচিত ক্রিকেট বোর্ডের।

এবার ফিটনেস টেস্টের আগে মাত্র দুই সপ্তাহ সময় পেয়েছেন ক্রিকেটাররা। গতবার বিপ টেস্টে ৯ পয়েন্ট ধরা হলেও এবার বেড়ে গেছে ২ পয়েন্ট। যে কারণে রাজ্জাক-আশরাফুলদের মতো পঁয়ত্রিশোর্ধ্ব ক্রিকেটাররা পড়েছেন সমস্যায়।

রবিবার ফিটনেস পরীক্ষা শেষে ট্রেনার তুষার কান্তি হাওলাদার সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, ‘আজ ৩০/৩৫ জন ক্রিকেটার বিপ টেস্ট দিয়েছেন। আগেরবার যারা ফেল করেছিল, তারা এবার পাশ করতে না পারলেও উন্নতি হয়েছে। তাদের ব্যাপারে নির্বাচকরা সিদ্ধান্ত নেবেন।’

ফিটনেস টেস্টে পাস না করা ক্রিকেটাররা কি জাতীয় লিগে খেলতে পারবেন না? এমন প্রশ্নে নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছেন, ‘নির্ধারিত মানদণ্ড দেওয়া আছে। তারপরও আমরা কয়েকজন খেলোয়াড়ের ব্যাপারে কিছুটা নমনীয় হবো। তাদের বয়স, পারফরম্যান্স এবং বর্তমান অবস্থা বিবেচনা করা হবে।’

দ্বিতীয়বার ফেল করলেও পরবর্তী পরীক্ষায় ভালো করতে আশাবাদী রাজ্জাক, ‘আজকের বিপ টেস্ট ভালো হয়েছে। আগের দিনের চেয়ে অনেক ভালো। আশা করি, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পয়েন্ট বাড়বে।’

আশরাফুলের কণ্ঠেও তৃপ্তি, ‘আগের দিনের চেয়ে উন্নতি হয়েছে। সেদিন ছিল ৯.৭ পয়েন্ট, আর আজকে পেয়েছি ১০। সামনে একটু একটু করে বাড়তে থাকবে। আগে জাতীয় লিগ নিয়ে আমরা তেমন সিরিয়াস ছিলাম না। কিন্তু এখন সবাই অনেক সিরিয়াস। বেশিরভাগ ক্রিকেটার ১১ পেয়েছে ফিটনেস টেস্টে। আমরা যারা পাইনি,  তারাও পেয়ে যাবো। আমার বিশ্বাস, ১১ পয়েণ্ট পাওয়া কঠিন কিছু নয়।’

রবিবারের বিপ টেস্টে সবচেয়ে বেশি ১২.২ পয়েন্ট পেয়েছেন আল আমিন হোসেন। তবু সন্তুষ্ট নন এই পেসার, ‘আমি কিছুটা হতাশ। আমার লক্ষ্য ছিল ১৩। অবশ্য পায়ে একটু ব্যথা ছিল।’

ফিটনেসের মান বাড়াতে বিসিবির এই কার্যক্রমকে সাধুবাদ জানিয়েছেন ক্রিকেটাররা। তবে পরীক্ষার ঘোষণার জন্য আরেকটু সময় দাবি তাদের। রাজ্জাক বলেছেন, ‘জাতীয় দল এবং পাইপলাইনে থাকা ক্রিকেটারদের জন্য ফিটনেস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জাতীয় দলে ঢোকার পর ফিটনেস নিয়ে কাজ করার মতো পর্যাপ্ত সময় পাওয়া যায় না। এটা আরেকটু পরিকল্পনা অনুযায়ী করলে সবারই স্কোর ভালো হবে। আমাদের অনেক ট্রেনার আছেন। তারা বছর জুড়ে ক্রিকেটারদের নিয়ে কাজ করলে আমাদের ফিটনেস ভালো থাকবে। আবার ট্রেনাররাও বুঝতে পারবেন কাকে নিয়ে কীভাবে কাজ করা যায় বা কার জন্য কত পয়েন্ট নির্ধারণ করা উচিত। আমার বয়সে ফিটনেস টেস্টে ১২ পয়েন্ট তোলা শুধু কঠিন নয়, প্রায় অসম্ভব।’

আল আমিনেরও তেমনই অভিমত, ‘ফিটনেস টেস্টের জন্য একটা মানদণ্ড নির্ধারণ করা উচিত। কার কার ১০, ১১ বা ১২ পয়েন্ট প্রয়োজন তা বিসিবিকেই নির্ধারণ করতে হবে। আগামী বছর কবে ফিটনেস টেস্ট হবে সেটা একটু আগেই জানিয়ে রাখলে আমাদের পক্ষে আরও উন্নতি করা সম্ভব।’

হাবিবুল বাশারও ফিটনেস টেস্টের জন্য আরও সময় দেওয়ার পক্ষে। তিনি বলেছেন, ‘গত বছর থেকেই আমরা ফিটনেসের ওপর জোর দিচ্ছি। এবারের জাতীয় লিগ শেষ হওয়ার পরই পরবর্তী ফিটনেস টেস্টের তারিখ এবং কত নম্বর প্রয়োজন তা ক্রিকেটারদের জানিয়ে দেওয়া হবে। বছরে একাধিক ফিটনেস টেস্টের কথাও আমরা ভাবছি।’