ইতিহাসের সাক্ষী হতে কলকাতায় হাজারো বাংলাদেশি

কলকাতার গ্যালারি মাতাতে তৈরি বাংলাদেশি সমর্থকরা (ফাইল ছবি)উপমহাদেশে প্রথমবারের মতো দিবা-রাত্রির টেস্ট। তাও আবার বাংলাদেশের! বেশি দূরে নয়, কলকাতায়। এই সুযোগ হাতছাড়া করতে চায় না কেউ। ঐতিহাসিক এই ম্যাচের সাক্ষী হতে বাংলাদেশ থেকে হাজার হাজার ক্রিকেটপ্রেমী এসেছেন কলকাতায়। খেলা দেখতে এসেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও।

এমনিতেই ভারতের বিপক্ষে ক্রিকেট নিয়ে এক ধরনের উত্তেজনা কাজ করে বাংলাদেশি সমর্থকদের মনে। আর মাঠটা যদি হয় ইডেন গার্ডেনস, তাহলে তো কথাই নেই। তাই তো বহু সমর্থক এরই মধ্যে কলকাতায় পাড়ি দিয়েছেন। কেউ টিকিটি পেয়েছেন, কেউ বা আবার অপেক্ষায় আছেন কালো বাজারে টিকিট পাওয়ার।

কলকাতার নিউমার্কেট এলাকায় কথা হয় রফিকুল ইসলামের সঙ্গে। তিন বন্ধু সিলেট থেকে এসেছেন খেলা দেখতে। কিন্তু টিকিটের কোনও কূলকিনারা করতে পারেননি, তবে আশায় আছেন। ভারতীয় এক নাগরিক তাকে আশ্বস্ত করেছেন, একটু বেশি খরচ করলে টিকিটের ব্যবস্থা করে দেবেন।

ম্যাচ দেখতে কলকাতায় সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশি এসেছেন বৃহস্পতিবার। স্থানীয় সময় রাত ১১টার দিকে রাস্তায় অনেক বাংলাদেশি সমর্থককে আড্ডা দিতে দেখা গেছে। কলকাতার বিভিন্ন হোটেলে বাংলাদেশের মানুষ এসে উঠেছেন। বাংলাদেশ ক্রিকেট টিমের বেশ কিছু সাপোর্টার গ্রুপ এসেছেন। এছাড়া ব্যক্তিগত উদ্যোগেও অনেকে এসেছেন গোলাপি বলে বাংলাদেশের প্রথম টেস্টের সাক্ষী হতে। 

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ জনের একটি শিক্ষার্থী গ্রুপ খেলা দেখতে এসেছেন বাংলাদেশ থেকে। তারা অবশ্য টিকিট পেয়েছেন। এবার ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হওয়ার পালা। গ্রুপটির একজন শহিদুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছেন, ‘প্রথম টেস্ট যেভাবে হেরেছে বাংলাদেশ, তাতে তো খেলা দেখতেই ইচ্ছে করে না। তবুও কি মন মানে! তাই বন্ধুদের নিয়ে ইতিহাসের সাক্ষী হতে কলকাতায় চলে এলাম। এবার অনেক সমর্থক পাবে বাংলাদেশ। মুশফিকদের উদ্দেশ্যে বলবো, তোমরা মাঠে সেরাটা দাও, আমরা গ্যালারিতে আছি।’

বাংলাদেশি ক্রিকেট ভক্তদের আগমনে নিউমার্কেট, পার্ক স্ট্রিট, মারকুইস স্ট্রিট, সদর স্ট্রিটের আশপাশের হোটেলগুলো লোকে লোকারণ্য। বৃহস্পতিবার রাতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে তিল পরিমাণ জায়গা নেই কোনও হোটেলেই। স্থানীয় এক হোটেলের ম্যানেজার জানালেন, ‘সব সময়ই বাংলাদেশি লোকজনে ভরা থাকে এই জায়গাটা। তবে ইডেনের টেস্টকে কেন্দ্র করে এত যে মানুষ একসঙ্গে, এটা খুব একটা দেখা যায় না। তাদের থাকার ব্যবস্থা করে দিতে হোটেলগুলো সত্যিই হিমশিম খাচ্ছে।’

ভারতীয় ক্রিকেটের খোঁজ সব সময়ই রাখেন সুবীর দত্ত। তিনিও গোলাপি বলের টেস্ট নিয়ে রোমাঞ্চিত। বাঙালি বন্ধু আরিফকে পাশে রেখেই বললেন, ‘এই টেস্টটা স্মরণীয় করে রাখবে বাংলাদেশ, দেখে নিও।’ আরিফের মুখে হাসি ফুটলো। এই হাসিটা শেষ পর্যন্ত থাকবে প্রত্যাশা কোটি কোটি বাংলাদেশির।