কামিন্স-তোপের পর অস্ট্রেলিয়ারই দিন

মধ্যমণি প্যাট কামিন্স। তার তোপেই কুপোকাত নিউজিল্যান্ডআইপিএলের নিলামে বিক্রি হয়েছেন সাড়ে ১৫ কোটি রুপিতে। কলকাতা নাইট রাইডার্স প্যাট কামিন্সের জন্য এত টাকা কেন ঢালল, তারই প্রমাণ মিলছে মেলবোর্ন টেস্টে। মাত্র ২৮ রান দিয়ে টেস্ট ক্যারিয়ারে পঞ্চমবার পেয়েছেন ৫ উইকেট। আইপিএল ইতিহাসের সবচেয়ে দামি বিদেশির ‘ট্যাগ’ লাগা পেসারের তোপে বিধ্বস্ত নিউজিল্যান্ড। বড় লিডে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে সংগ্রহটা কিউইদের ধরা-ছোঁয়ার বাইরে নিয়ে যাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া।

ট্রাভিস হেডের সেঞ্চুরিতে অস্ট্রেলিয়া প্রথম ইনিংসে অলআউট হয় ৪৬৭ রানে। এরপরই শুরু কামিন্সের তোপ। তার বিধ্বংসী বোলিংয়ে প্রথম ইনিংসে মাত্র ১৪৮ রানে গুটিয়ে গেছে নিউজিল্যান্ড। দ্বিতীয় ইনিংসে স্বাগতিকেরা তৃতীয় দিন শেষে ৪ উইকেটে ১৩৭ রান করে লিড নিয়েছে ৪৫৬ রানের, হাতে আছে আরও ৬ উইকেট।

দ্বিতীয় দিনেই নড়বড়ে লেগেছিল প্রথম ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নামা কিউইদের। তৃতীয় দিনের শুরুতে সেটা স্পষ্ট করে দেয় কামিন্সের তোপ। পরপর দুই বলে রস টেলর (৯) ও হেনরি নিকোলসকে (০) ফিরিয়ে জাগিয়েছিলেন হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনাও। সেটা না হলেও সফরকারীদের টপ অর্ডার ধসিয়ে দিয়েছিলেন ঠিকই। কিউইদের প্রথম পাঁচ ব্যাটসম্যানের চারজনই টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বর বোলারের শিকার। ভেঙে দেন হাফসেঞ্চুরিয়ান টম ল্যাথামের (৫০) প্রতিরোধ, পরে টিম সাউদিকে (১০) তুলে পেয়ে যান পঞ্চম উইকেট।

কামিন্সের সঙ্গে উইকেট উৎসবে যোগ দেন অন্য দুই পেসার মিচেল স্টার্ক ও জেমস প্যাটিনসন। আগের দিন কেন উইলিয়ামসনকে আউট করে উইকেটের খাতা খোলা প্যাটিনসন আজ ফিরিয়েছেন বিজে ওয়াটলিং (৭) ও মিচেল স্যান্টনারকে (৩)। ৩৪ রানে তার ৩ উইকেট। আর ২ উইকেট পাওয়া স্টার্কের শিকার কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম (১১) ও ট্রেন্ট বোল্ট (৮)।

কিউইদের গুঁড়িয়ে দিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে অস্ট্রেলিয়াকে দারুণ শুরু এনে দেন ডেভিড ওয়ার্নার ও জো বার্নস। তাদের উদ্বোধনী জুটিটা ৬২ রানের। ৩৮ রানে ওয়ার্নারকে আউট করে জুটিটা ভাঙেন নিল ওয়াগনার। ২০১৯ সালে ব্যাট হাতে দুর্দান্ত সময় কাটানো মার্নাস লাবুশেনের বছর শেষ হয় দুঃখজনক রান আউটে। ১৯ রান করেছেন তিনি। আরেক ওপেনার বার্নসকে (৩৫) প্যাভিলিয়নে ফেরান বাঁহাতি স্পিনার মিচেল স্যান্টনার।

স্টিভেন স্মিথকে এই টেস্টের পর হয়তো আরও ‘পড়াশোনা’ করতে হবে ওয়াগনারকে নিয়ে। আবারও যে এই বাঁহাতির শিকার তিনি। চলতি সিরিজে খেলা চার ইনিংসেই অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক আউট হয়েছেন ওয়াগনারের বলে। আরেকবার শর্ট বলে স্মিথকে (৭) বোকা বানিয়ে কিউই পেসার ছুঁয়েছেন ২০০ উইকেটের মাইলফলক। স্যার রিচার্ড হ্যাডলির পর নিউজিল্যান্ডের দ্বিতীয় দ্রুততম ২০০ উইকেটের মালিক ওয়াগনার।

স্বাগতিকদের বিপদ আর বাড়তে দেননি ম্যাথু ওয়েড (১৫*) ও প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান হেড (১২*)।

২০০ উইকেট পাওয়া ওয়াগনারই দিন শেষে কিউইদের সফলতম বোলার। ৩৯ রানে নিয়েছেন ২ উইকেট। আর ২২ রান খরচায় স্যান্টনার পেয়েছেন ১ উইকেট।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

(তৃতীয় দিন শেষে)

অস্ট্রেলিয়া: ৪৬৭ ও দ্বিতীয় ইনিংসে ৪৫ ওভারে ১৩৭/৪ (ওয়ার্নার ৩৮, বার্নস ৩৫, লাবুশেন ১৯, ওয়েড ১৫*, হেড ১২*; ওয়াগনার ২/৩৯, স্যান্টনার ১/২২)।

নিউজিল্যান্ড: প্রথম ইনিংসে ৫৪.৫ ওভারে ১৪৮ (ল্যাথাম ৫০, ওয়াগনার ১৮* ব্লান্ডেল ১৫, ডি গ্র্যান্ডহোম ১১, সাউদি ১০; কামিন্স ৫/২৮, প্যাটিনসন ৩/৩৪, স্টার্ক ২/৩০)।