দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটে ইদানীং মিশ্রবর্ণ আর কৃষ্ণাঙ্গদের জয়ধ্বনি শোনা গেলেও একসময় ছিল ভিন্ন ছবি। ২২ বছরের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ১৯৯১ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার সময় অশ্বেতাঙ্গ ক্রিকেটার বলতে গেলে ছিলই না। রোডস-ক্রনিয়ে-ডোনাল্ড-ম্যাকমিলানদের মতো শ্বেতাঙ্গরাই তখন জাতীয় দলের সম্পদ।
ওই সময় ক্রিকেট-জীবন শুরু করায় নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করেন ৫২ টেস্ট ও ২৪৫ ওয়ানডে খেলা রোডস। বেঙ্গালুরুতে ভারতের সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেছেন, ‘দেশের ৫০ শতাংশ মানুষের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হয়নি। নিঃসন্দেহে এটা বাড়তি সুবিধা দিয়েছে আমাকে। আসলে শুধু শ্বেতাঙ্গ খেলোয়াড়দের সঙ্গে লড়াই করেছি। দেশের বাকি মানুষের সঙ্গে লড়াই করতে হলে হয়তো জাতীয় দলে সুযোগই পেতাম না। আর আপনারাও আমাকে মাঠে ঝাঁপিয়ে পড়তে দেখতেন না। যখন সুযোগ পেয়েছিলাম, তখন আমার ক্রিকেট পরিসংখ্যান ছিল একেবারেই সাধারণ।’
চমকে ওঠার মতো আরেকটি তথ্যও দিয়েছেন। নতুন সূচনার পরও নাকি দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটে বর্ণবাদের বিষবাষ্প ছিল, ‘আপনারা তো (ক্রিকেটে) শ্বেতাঙ্গদের সুবিধা নিয়ে অনেক কথাই বলেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এটা নিয়ে অনেক তর্ক-বিতর্কও হয়। এটা কিন্তু বাস্তব। আমি নিজেও এ বিষয়ে জানি। আমরা দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবাদ বহন করে চলেছি। আমাদের দেশে এখনও জাতিগত কারণে পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায় আছে। তারা হয়তো রাজনৈতিক স্বাধীনতা পেয়েছে, কিন্তু অর্থনৈতিক স্বাধীনতা পায়নি।’
ক্রিকেটে না হলেও রাগবি আর ফুটবলে অশ্বেতাঙ্গদের জয়জয়কার। গত বছর প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ অধিনায়ক সিয়া কোলিসির নেতৃত্বে রাগবি বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকা দলে ৬ জন মিশ্রবর্ণের খেলোয়াড় ছিল। রোডস তাই রাগবির কাছ থেকে শেখার পরামর্শ দিচ্ছেন ক্রিকেট প্রশাসকদের, ‘রাগবি একটা কাঠামো গড়তে পেরেছে, পিছিয়ে পড়া মানুষের এলাকায় অনেক কাজ করেছে। রাগবির কাছ থেকে ক্রিকেটের অনেক কিছু শেখার আছে।’