দুই দল সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে দুই বেলা অনুশীলন করে প্রস্তুতি নিয়েছে প্রথম ম্যাচের। সবুজ ঘেরা সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে রবিবার দুপুর ১টায় শুরু হবে ম্যাচ। যা সরাসরি দেখাবে গাজী টিভি।
৫০ ওভারের ক্রিকেটে এমনিতেই ভালো দল বলে স্বীকৃতি আছে বাংলাদেশের। তার মধ্যে প্রতিপক্ষ যদি হয় জিম্বাবুয়ে, সেক্ষেত্রে বাংলাদেশকে ফেবারিট বলতেই হয়। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পরিসংখ্যানও এই তকমার সাক্ষ্য প্রমাণ। দুই দলের সর্বশেষ ১৩টি ওয়ানডের সবগুলোতেই জিতেছে লাল-সবুজ জার্সীধারীররা। ২০১৩ সালে বুলাওয়েতে সর্বশেষবার বাংলাদেশকে ওয়ানডেতে হারিয়েছিল জিম্বাবুয়ে। ১৯৯৭ সালে প্রেসিডেন্ট কাপে ত্রিদেশীয় সিরিজে কেনিয়ার জিমখানা স্টেডিয়ামে প্রথম জিম্বাবুয়ের মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ। দুই দলের সর্বশেষ সাক্ষাৎ ২০১৮ সালে, চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে এখন পর্যন্ত ওয়ানডেতে মোট ৭২টি ম্যাচ খেলেছে। এর মধ্যে বাংলাদেশের ৪৪ জয়ের পাশে ২৮ ম্যাচ জিতেছে আফ্রিকার দেশটি। এ নিয়ে ১৭তম দ্বিপক্ষীয় ওয়ানডে সিরিজে মুখোমুখি হবে দুই দল। বিগত ১৬ সিরিজের ১০টি জিতেছে বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ে ৬টি।
এত এগিয়ে থেকেও জিম্বাবুয়েকে সহজ প্রতিপক্ষ হিসেবে নিচ্ছেন না অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। শনিবার ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে ওয়ানডে অধিনায়ক বলেছেন, ‘জিম্বাবুয়ে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে অনেক ভালো দল। এই ফরম্যাটে তারা প্রচুর ক্রিকেট খেলেছে। অবশ্যই আমরা ম্যাচ ধরে ধরে যেতে চেষ্টা করব। এখনই তিন ম্যাচ নিয়ে ভাবছি না। আমরা কাল ভালো শুরু করতে পারলে এরপর দ্বিতীয় এবং তৃতীয় ম্যাচে ভালো করতে হবে। কারণ জিম্বাবুয়ে যেকোনও দলকে হারাতে পারে। সবচেয়ে বড় কথা, আন্তর্জাতিক ম্যাচ আন্তর্জাতিক ম্যাচই। জিম্বাবুযের কাছে আমরা হারতেও পারি। এমন না যে আমরা জিম্বাবুয়ের কাছে আগে হারিনি। যে ম্যাচগুলো আমরা জিতেছি, এর মধ্যে দুই-তিনটি ম্যাচ ছিল যে আমরা হারা ম্যাচ জিতে গেছি। তার মানে তারা আমাদের হারাতে পারে। সুতরাং জিততে হলে আমাদের ভালো ক্রিকেট খেলেই জিততে হবে।’
জাতীয় দলের খুব বেশি ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা নেই এই ভেন্যুতে। সিলেটের উইকেট নিয়ে তাই মাশরাফি কিছুটা চিন্তায় আছেন, ‘উইকেটটে কিছুটা ঘাস আছে। কিছুটা হয়তো কাটা হবে। কী পরিমাণ রাখতে হবে অনুমান করা কঠিন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে শেষ ওয়ানডে যখন এখানে খেলি, তখন অনেক স্লো ছিল। শিশির ছিল। রাতে ব্যাটিং করা একেবারে সহজ ছিল। এখন শিশির কতটা থাকবে, অবশ্য গরম প্রায় চলেই এসেছে। কাল (রবিবার) একটা পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যাবে। এখন আউটফিল্ড এবং উইকেট মনে হচ্ছে একই। বড় বড় ঘাস আছে।’
সিলেটে প্রত্যাবর্তন ম্যাচটি অধিনায়ক মাশরাফিরও প্রত্যাবর্তন ম্যাচ। বিশ্বকাপের পরে মাশরাফি কোনও আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেননি। দীর্ঘ ৮ মাস পর খেলতে নামবেন ২২ গজে। আবার কিছুদিন আগে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান বলে দিয়েছেন অধিনায়ক হিসেবে এটিই মাশরাফির শেষ সিরিজ । এরপর দলে জায়গা পেতে তাকে পারফর্ম করে এবং ফিট প্রমাণ করেই আসতে হবে।
মাশরাফি এ ব্যাপারে কিছু বলতে নারাজ। তবুও ৮ মাস পর ফিরে মাশরাফির কি কিছুই প্রমাণের নেই?
বাংলাদেশের সফলতম ওয়ানডে অধিনায়ক অবশ্য বিষয়টিকে সেভাবে দেখেন না, ‘না, এটা না। আমি নিশ্চয়তা দিতে পারব না যে আমি পারফর্ম করব। এই নিশ্চয়তা বিশ্বের কেউই দিতে পারবে না। তবে একটা নিশ্চয়তা দেওয়া যায়, আমি শতভাগ চেষ্টা করছি কি না। একটা খেলোয়াড়ের মূল জায়গা হচ্ছে শতভাগ চেষ্টা করছে কি না, বা টিম ম্যানেজমেন্ট থেকে প্রশ্ন থাকলেও থাকতে পারে ডেডিকেশন ঠিক মতো আছে কি না। আমি প্রমাণ করার জন্য ক্রিকেট খেলছি না। আমি বাংলাদেশের হয়ে খেলেছি, বাংলাদেশকে জেতানো আমাদের প্রত্যেকটা খেলোয়াড়ের দায়িত্ব। সেরাটা দেওয়া আমাদের দায়িত্ব। সেটা আমরা সব সময় চেষ্টা করি। নিশ্চয়তা তো কোনও খেলোয়াড়ই দিতে পারে না।’
এদিকে টেস্টে ভরাডুবির পর ওয়ানডেতে বাংলাদেশের বিপক্ষে ভাগ্য বদলাতে চান জিম্বাবুয়ের নতুন অধিনায়ক চামু চিবাবা, ‘বাংলাদেশের মাটিতে আমাদের রেকর্ড ভালো নয়। কিন্তু আমরা সেটা বদলাতে চাই। এবার তাদের বিপক্ষে আমরা তিনটি ওয়ানডে ও দুটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলবো। আমার মনে হয় বদলানোর দারুণ সুযোগ আমাদের সামনে। টেস্টে আমরা হেরেছি। এবার ভিন্ন ফরম্যাট। আমি মনে করি এটা আমাদের সঙ্গে বেশ যায়। আমরা ইতিবাচক ও আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলতে চাই। আশা করছি আমরা দারুণ একটি সুযোগ তৈরি করতে পারব।’