মায়ের জন্য মুক্তি মিলছে শাহাদতের

ক্রিকেটাঙ্গনে যে ক’জন ‘ব্যাডবয়’ আছেন, তাদের অন্যতম শাহাদত হোসেন। গৃহকর্মী নির্যাতন থেকে শুরু করে রাস্তায় সিএনজি চালককে মারধর- সবকিছুই করেছেন জাতীয় দলের এই পেসার।

শাহাদতের সর্বশেষ ঘটনাটি ছিল ২০১৯ সালের জাতীয় ক্রিকেট লিগের আসরে। সতীর্থকে মারতে যাওয়ায় ঘটনায় দুই বছরের স্থগিত নিষেধাজ্ঞাসহ ৫ বছরের নিষেধাজ্ঞা ও ৩ লাখ টাকা জরিমানা করা হয় তাকে। যে শাস্তি বর্তমানে ভোগ করছেন দীর্ঘদেহী এই পেসার। গত সপ্তাহে বিসিবির কাছে মায়ের অসুস্থতার কথা জানিয়ে শাস্তি কমানোর আবেদন করেছিলেন তিনি। বিসিবি তার মায়ের কথা বিবেচনা করে আবেদনে সাড়া দেওয়ার চিন্তা-ভাবনা করছে।

দীর্ঘদিন ধরে শাহাদতের মা ক্যানসারে আক্রান্ত। মায়ের চিকিৎসার জন্য গাড়ি পর্যন্ত বিক্রি করে দিয়েছেন। তবু কূল-কিনারা পাচ্ছেন না খেলার বাইরে থাকায়। তাই বোর্ডের কাছে নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্তির আবেদন করেন এই পেসার। বিষয়টি বিবেচনা করে তার শাস্তি কমানোর সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে বিসিবি।

এ ব্যাপারে বিসিবির পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান আকরাম খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছেন, ‘রাজিব (শাহাদত হোসেন) কিছুদিন আগে নিষেধাজ্ঞা মওকুফের জন্য ব্যক্তিগতভাবে ফোন করেছে, চিঠিও দিয়েছে। যেহেতু ও পারিবারিকভাবে সমস্যায় পড়েছে, ওর আম্মার ক্যান্সার হয়েছে, আর ও ক্রিকেটে ফিরতে পারছে না। আমরা কয়েকজন পরিচালক আলোচনা করেছি, ডিসিপ্লিন কমিটির চেয়ারম্যানের সঙ্গেও। ওরা ইতিবাচক। আশা করছি, ওর ব্যাপারে ইতিবাচক কিছু আসবে।'

শাহাদতের ইস্যু নিয়ে বোর্ড সভাপতির সঙ্গেও আলাপ করেছেন আকরাম। মানবিক কারণে ডানহাতি পেসারের ৫ বছরের শাস্তি ১৬ মাসের মধ্যেই হয়তো শেষ হয়ে যাচ্ছে। আকরামের কথাতে তেমনই ইঙ্গিত, ‘বোর্ড সভাপতিকে জানিয়েছি। তিনিও শাস্তি মওকুফের ব্যাপারে ইতিবাচক আছেন। ও যেন এবারের এনসিএলে খেলতে পারে, সেই আশা করছি। আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে শাহাদতের মুক্তির সুপারিশ করে বোর্ডে পাঠাবো। বোর্ড তা অনুমোদন করলে শিগগিরই মুক্ত হবে।’

গত শনিবার শাস্তি কমাতে বোর্ডের কাছে আবেদন করেছিলেন শাহাদত। যাতে ক্রিকেট খেলে ক্যানসারে আক্রান্ত মায়ের চিকিৎসা ব্যয় বহন করতে পারেন। শাহাদাত বলেছিলেন, ‘নিষেধাজ্ঞা কমাতে বোর্ডের কাছে আমি আবেদন করেছি। এখন সব কিছু তাদের ওপর নির্ভর করছে। আমার প্রতিযোগিতামূলক খেলায় ফেরাটা জরুরি। কারণ আমাকে ক্যানসারে আক্রান্ত মায়ের মেডিক্যাল বিল বহন করতে হবে।’

বাংলাদেশের হয়ে ৩৮ টেস্ট, ৫১ ওয়ানডে ও ৬ টি-টোয়েন্টি খেলেছেন শাহাদত। ২০১৫ সালের পর তাকে আর জাতীয় দলে দেখা যায়নি। এর আগে গৃহকর্মী নির্যাতনের ঘটনায়ও নিষিদ্ধ হয়েছিলেন তিনি।