স্যামসন-মোস্তাফিজের বেদনা বিধুর রাত

রাজস্থান রয়্যালসের জয়ের জন্য শেষ ওভারে প্রয়োজন ১৩ রান। পাঞ্জাবের পেসার আর্শদীপ সিংয়ের চতুর্থ বলে ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচ জমিয়ে তুলেছিলেন রাজস্থানের অধিনায়ক সাঞ্জু স্যামসন। জেতার জন্য শেষ দুই বলে প্রয়োজন ৫ রানের। কিন্তু আর্শদীপ রান তো দিলেনই না, উল্টো আইপিএলের চলতি আসলের প্রথম সেঞ্চুরিয়ান স্যামসনকে ফেরালেন। আর তাতেই ৪ রানে নিজেদের প্রথম ম্যাচটি জিতে নিলো পাঞ্জাব কিংস। প্রতিপক্ষের এমন জয়ে নিশ্চিতভাবে সবচেয়ে হতাশ স্যামসন। অন্যদিকে রাজস্থানের হয়ে অভিষেক ম্যাচে নিশ্চিত দুটি উইকেট বঞ্চিত মোস্তাফিজ কী আজ ঘুমাতে পারবেন?

পাঞ্জাবের দেওয়া ২২২ রানের বিশাল লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় রাজস্থান। ২৫ রানে দুই ওপেনারকে হারিয়ে রাজস্থানের সব দায়িত্ব চাপে অধিনায়ক স্যামসনের ওপর। সেই দায়িত্বটা খুব ভালোভাবেই পালন করলেন ২৬ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান। খেলেছেন টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ার সেরা ১১৯ রানের ইনিংস। ৬৩ বলে ১২ চার ও ৭ ছক্কায় স্যামসন নিজের ইনিংসটি সাজিয়েছেন। জস বাটলার (১৩ বলে ২৫), শিবম দুবে (১৫ বলে ২৩) ও রিয়ান পরাগ (১১ বলে ২৫) এই তিন ব্যাটসম্যানের ইনিংসগুলো আরও একটু বড় হলেই জয়ই সঙ্গী হতো রাজস্থানের! এমন ইনিংসের পরও দলকে জেতাতে না পেরে স্যামসনের নিশ্চই বেদনা বিধুর রাত কাটবে।

এদিকে দারুণ দুটি সুযোগ হাতছাড়া হওয়া মোস্তাফিজের জন্যও ম্যাচটি হতাশার। ৪ ওভার বোলিং করে ৪৫ রান খরচায় উইকেটশূন্য ছিলেন মোস্তাফিজ। যদিও তার সামনে দুটি উইকেট নেওয়ার সুযোগ এসেছিল। কিন্তু ফিল্ডারদের ব্যর্থতা ও নিজের আত্মবিশ্বাসহীনতার কারণে দুটি উইকেট থেকে বঞ্চিত হন মোস্তাফিজ।

নিজের প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলেই মায়াঙ্ক আগরওয়ালকে এলবিডাব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেছিলেন মোস্তাফিজ। রিভিউতে নিশ্চিত আউট দেখা গেলেও আম্পায়ার আবেদনে সাড়া দেননি। আর রাজস্থানও রিভিউ নেয়নি, মোস্তাফিজও সাহস করে রিভিউ চাননি। নিশ্চিত একটি উইকেট থেকে বঞ্চিত হন মোস্তাফিজ। আর দ্বিতীয় সুযোগটি পান ১৫তম ওভারে। মোস্তাফিজের প্রথম বলেই দীপক উড়িয়ে মারেন। কিন্তু উইকেটকিপার জস বাটলার ও বেন স্টোকসের ভুল বোঝাবুঝিতে ক্যাচ মিস হয়ে যায়।

টস হেরে আগে ব্যাটিং করা পাঞ্জাব কিংস শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলেছে। ওপেনিং নামা মায়াঙ্ক আগরওয়াল শুরুতে বিদায় নেন। এরপর ক্যারিবিয়ান দানব ক্রিস গেইলকে সঙ্গে নিয়ে দ্বিতীয় উইকেটে ৪৫ বলে ৬৭ রানের জুটি গড়েন অধিনায়ক লোকেশ রাহুল। ২৮ বলে ৪ চার ও ২ ছক্কায় গেইল ৪০ রান করে আউট হন। গেইলের বিদায়ের পর জমে উঠে তৃতীয় উইকেট জুটি। রাহুলের সঙ্গে যোগ দেন দীপক হুদা। ৩০ বলে হাফসেঞ্চুরি করা রাহুল ৯ রানের জন্য সেঞ্চুরি মিস করেছেন। তার আগে অবশ্য ২৮ বলে ৪ চার ও ৬ ছক্কায় ৬৪ রান করা দীপককে ফেরান ক্রিস মরিস। রাহুল যখন আউট হন ততক্ষণে পাঞ্জাবের স্কোর ২০০ পেরিয়ে গেছে। ৫০ বলে ৭ চার ও ৫ ছক্কায় রাহুল নিজের ৯১ রানের ইনিংসটি সাজিয়েছেন। সবমিলিয়ে রাহুল-গেইল-দীপকের দাপটে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ২২১ রানের বড় সংগ্রহ দাঁড় করায় পাঞ্জাব।

রাজস্থানের বোলারদের মধ্যে চেতন সাকারিয়া সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট নেন। এছাড়া ক্রিস মরিস নেন দুটি উইকেট।