ক্যান্ডি টেস্টে হারের মুখে মুমিনুলরা!

ক্যান্ডিতে দ্বিতীয় টেস্ট জিততে এমনই এক লক্ষ্য দিয়েছে শ্রীলঙ্কা। যা করতে হলে বাংলাদেশকে টেস্টের ইতিহাসই বদলাতে হবে। কারণ এত বড় লক্ষ্য আগে তাড়া করতে পারেনি কেউ। বাস্তবতার নিরিখে দেখলে সেটি আর সম্ভব হচ্ছে না। কিন্তু শ্রীলঙ্কান স্পিনারদের আধিপত্যে এখন টিকে থাকাই চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশের। চতুর্থ দিন শেষে বাংলাদেশের যা অবস্থা, তাতে হারই চোখ রাঙাচ্ছে সফরকারীদের। ৪৩৭ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ১৭৭ রানে ৫ উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ। ক্রিজে আছেন লিটন দাস (১৪) ও মেহেদী মিরাজ (৪)। 

বাংলাদেশকে ফলোঅন না করিয়ে চতুর্থ দিন বড় লক্ষ্য পেতে সফল ছিল শ্রীলঙ্কা। প্রথম সেশনে বাংলাদেশ ৪টি উইকেট তুলে নিলেও তখনই লঙ্কানদের লিড হয়ে যায় ৪১৪ রান। লাঞ্চের পর আরও কিছুক্ষণ ব্যাট করার লক্ষ্য থাকলেও বাংলাদেশের বোলিং নৈপুণ্যে দ্রুত উইকেট হারিয়ে বসে স্বাগতিকরা। শেষ পর্যন্ত ৯ উইকেটে ১৯৪ রান তুলেই দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে তারা। ততক্ষণে লিডও হয়ে যায় ৪৩৬ রানের।

বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে সফল ছিলেন বামহাতি স্পিনার তাইজুল। ৭২ রানে নিয়েছেন ৫ উইকেট।

এত বড় লক্ষ্যে খেলতে নেমে আগ্রাসী সূচনা করেছিলেন ওপেনার তামিম।৭ ওভারে স্কোর হয়ে যায় ৩১। কিন্তু পরের ওভারে রামেশ মেন্ডিসের অফ স্পিনে পরাস্ত হন তিনি। কটবিহাইন্ড হয়ে তামিম ফেরেন ২৪ রানে। তার ২৬ বলের ইনিংসে ছিল ৩টি চার ও ১টি ছয়।

তামিমের পর রান তোলার দিকে মনোযোগী হতে থাকেন সাইফ। বিগত ইনিংসগুলোতে রান না পাওয়া সাইফ শেষ পর্যন্ত করতে পারেন ক্যারিয়ার সেরা ৩৪ রান। কিন্তু বাজে শটে এর পর ইনিংস লম্বা করতে পারেননি। জয়াবিক্রমার ঘূর্ণিতে তালুবন্দি হয়েছেন লাকমালের।

শান্ত এর পর মুমিনুলকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে গেলেও থিতু হতে পারেননি। প্রথম ইনিংসের সেরা স্পিনার জয়াবিক্রমা অসাধারণ এক টার্নে বোল্ড করেন শান্তকে (২৬)।

অধিনায়ক মুমিনুল প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেছিলেন যদিও। কিন্তু রামেশ মেন্ডিসের ঘূর্ণিতে তিনি বোল্ড হয়ে ফেরেন ৩২ রানে। এর আগে অবশ্য জীবন পেয়ে যান অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম। ২৮.৩ ওভারে মুশফিকের ক্যাচ ফেলে দেন স্লিপে দাঁড়ানো থিরিমান্নে। এর পরেও লড়াই চালিয়ে যান তিনি। লঙ্কান স্পিনারদের মেরে খেলতে থাকেন এক সময়। কিন্তু পাল্টে যাওয়া উইকেটের চরিত্রই এক সময় বিপদ ডেকে আনে মুশফিকের। রামেশ মেন্ডিসের হঠাৎ বাউন্স করা ঘূর্ণি বল গ্লাভস ছুঁয়ে জমা পড়ে ধনাঞ্জয়ার হাতে। 

এর পর লিটনের বিদায়ও নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল অনফিল্ড আম্পায়ারের ভুল সিদ্ধান্তে। কিন্তু রিভিউ নিয়ে জীবন পেয়েছেন এই উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান। একইভাবে বেঁচেছেন মেহেদী মিরাজও। আলোর স্বল্পতায় দিনের শেষ ভাগের খেলা আগে পরিত্যক্ত না হলে হয়তো আজকেই পরিসমাপ্তির আরও কাছে থাকতে পারতো ক্যান্ডি টেস্ট! কারণ লঙ্কান দুই স্পিনারই রাজত্ব করছেন পিচে।

প্রথম ইনিংসে আলো ছড়ানো জয়াবিক্রমা ৫৮ রানে নিয়েছেন ২টি উইকেট। রামেশ মেন্ডিস ৮৬ রান দিয়ে নিয়েছেন তিনটি।