লক্ষ্য এবার হোয়াইটওয়াশ

২০১৩ সালের পর ৫০ ওভারের ক্রিকেটে জিম্বাবুয়ের কাছে হারের রেকর্ড নেই বাংলাদেশের। ৮ বছর আগেই বাংলাদেশ সর্বশেষ তাদের কাছে হেরেছিল। এরপর ঘরের মাঠে তিন ম্যাচের আরও চারটি সিরিজ খেললেও সবকটিতেই শেষ হাসি বাংলাদেশের।

এবার দীর্ঘদিন পর জিম্বাবুয়ের মাটিতে জিম্বাবুয়েকে হোয়াইটওয়াশ করার সুযোগ বাংলাদেশের সামনে। ম্যাচটি জিতলে সফরকারীদের সামনে তিনটি অর্জনের হাতছানি- জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জয়ের হাফসেঞ্চুরি, ষষ্ঠ হোয়াইটওয়াশ ও বিশ্বকাপ সুপার লিগের পূর্ণ ৩০ পয়েন্ট! সেই লক্ষ্য নিয়েই মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় দুপুর দেড়টায় মাঠে নামবে তামিম বাহিনী। হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠ থেকে ম্যাচটি সরাসরি দেখা যাবে বিটিভি, গাজী টেলিভিশন ও টি-স্পোর্টসে।

হোয়াইটওয়াশের লক্ষ্যটা আগেই সহজ করে রেখেছে বাংলাদেশ। অনায়াসে জিতেছে প্রথম ওয়ানডে, দ্বিতীয় ম্যাচে ঘাম ঝরাতে হলেও জয় নিয়েই মাঠ ছেড়েছে। মূলত অভিজ্ঞতার কাছে হার মানতে হয়েছে স্বাগতিক জিম্বাবুয়েকে। সাকিবের দায়িত্বশীল ইনিংসের ওপর ভর করে এক ম্যাচ হাতে রেখে বাংলাদেশ সিরিজ নিশ্চিত করেছে। 

মঙ্গলবার ম্যাচটি তাই সফরকারীদের জন্য নিজেদের সেরাটা ঢেলে দেওয়ার ম্যাচ। কেননা প্রথম দুই ম্যাচে টপ অর্ডারে পারফেক্ট ব্যাটিং হয়নি। জিম্বাবুয়েতে এখন পর্যন্ত খেলা দুই ম্যাচেই ব্যর্থ ছিল টপ অর্ডার। আর তাতে দল জিতলেও পুরোপুরি খুশি হতে পারেননি অধিনায়ক তামিম। টপ অর্ডারের ব্যর্থতায় নাখোশ ওয়ানডে অধিনায়ক দ্বিতীয় ম্যাচ শেষে বলেছিলেন, ‘আমাদের অবশ্যই কিছু পরিকল্পনা ছিল। তবে ব্যাটিং ইউনিট হিসেবে আমরা আরও ভালো করতে পারতাম। আমার মনে হয়, সফট ডিসমিসাল আজকে (রবিবার) একটু বেশিই হয়েছে। ‘

টপ অর্ডারের ফর্মে ফেরার মিশনের পাশাপাশি ম্যাচটি অন্য কারণেও গুরুত্বপূর্ণ। মঙ্গলবারের ম্যাচটি জিতলে হোয়াইটওয়াশের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ আরও ১০টি পয়েন্ট যুক্ত হবে বাংলাদেশের ওয়ানডে সুপার লিগের পয়েন্ট টেবিলে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই ম্যাচ থেকে ইতোমধ্যে ২০ পয়েন্ট তুলে নিয়েছে সফরকারীরা। বাংলাদেশের বর্তমান পয়েন্ট এখন  ৭০। শেষ ম্যাচটি জিতলে বাংলাদেশের পয়েন্ট দাঁড়াবে ৮০। 

ওয়ানডে সুপার লিগে বাংলাদেশের চেয়ে বেশি পয়েন্ট আছে কেবল ইংল্যান্ডের। ৯৫ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে তারা। তৃতীয় অবস্থানে থাকা অস্ট্রেলিয়ার পয়েন্ট এখন ৪০। জিম্বাবুয়েকে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ হোয়াইটওয়াশ করতে পারলে বাংলাদেশ ৮০ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের সুবিধাজনক অবস্থানে থাকবে।

ম্যাচ পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন বলে গেলেন তেমনটাই, ‘জিম্বাবুয়েকে হালকাভাবে নেওয়ার সুযোগ নেই, যেহেতু ঘরের মাঠে সব দলই দুর্দান্ত। এজন্য বেশি মনোযোগ রেখে খেলছি, শতভাগ দিয়ে চেষ্টা করছি। প্রত্যেক সিরিজে হোয়াইটওয়াশের লক্ষ্য থাকবে। প্রক্রিয়া ঠিক থাকলে ৩-০ ব্যবধানে জিতবো ইনশাআল্লাহ।’

দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশকে কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হলেও সবদিক থেকেই জিম্বাবুয়ের চেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ। শুধু সর্বশেষ ম্যাচের ফল নয়, সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স, শক্তির বিচারেও অনেকটা এগিয়ে তামিম-সাকিবরা। পরিসংখ্যানও জানান দিচ্ছে তেমনটাই। সব মিলিয়ে ৭৭বার মুখোমুখি হয়েছে তারা, যেখানে ৪৯ ম্যাচেই জয় বাংলাদেশের। তাদের বিপক্ষে ৫০ ওভারের ক্রিকেটে টানা ১৮ জয়ের সুখস্মৃতি আছে সাকিব-তামিমদের। আফ্রিকার দলটির বিপক্ষে সিরিজ জয়ের ম্যাচে এই পরিসংখ্যান নিশ্চিতভাবেই উজ্জীবিত করবে।

এদিকে প্রথম দুই ম্যাচে চোট সমস্যা নিয়ে খেলতে পারেননি মোস্তাফিজুর রহমান। শেষ ম্যাচে তার ফেরার সম্ভাবনা রয়েছে। সেক্ষেত্রে তাসকিনকে বিশ্রাম দিয়ে সুযোগ দেওয়া হতে পারে মোস্তাফিজকে। এছাড় অন্য কোন পরিবর্তন আনার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। শেষ মুহূর্তে অবশ্য উইকেটের ওপর নির্ভর করে মিরাজকে বিশ্রাম দিয়ে রুবেলকেও একাদশে সুযোগ দেওয়া হতে পারে।

ক্রিকেট ভক্তদের এখন প্রত্যাশা ২০০৬, ২০১৪, ২০১৫, ২০১৮ ও ২০২০ সালের মতো আরও আরেকবার জিম্বাবুয়েকে হোয়াইটওয়াশ করবে বাংলাদেশ। পাশাপাশি এই জয়ে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টানা ১৯ ম্যাচ জিতে দলটির বিপক্ষে জয়ের হাফসেঞ্চুরিও পূরণ করবে তামিম-সাকিবরা।