দেশে ফিরলেও বাবাকে দেখা হচ্ছে না বিপ্লবের

ক্রিকেটারদের এ এক কঠিন জীবন। ব্যস্ত সূচির কারণে উৎসবের মুহূর্তগুলো পরিবারের সঙ্গে ঠিকমতো উদযাপন করা হয় না। এমনকি পরিবারের কেউ অসুস্থ কিংবা মারা গেলেও অনেকেরই পাশে থাকার সৌভাগ্য হয় না। তেমনই একজন লেগ স্পিনিং অলরাউন্ডার আমিনুল ইসলাম বিপ্লব। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চলমান টি-টোয়েন্টি সিরিজের দলে থাকা বিপ্লব দূরদেশে থেকে জানলেন, তার বাবা আব্দুল কুদ্দুস আর নেই। বাবার মৃত্যুর খবরে দেশে ফিরলেও শেষ দেখা হচ্ছে না বিপ্লবের।

আব্দুল কুদ্দুস দীর্ঘদিন ধরেই হৃদরোগে ভুগছিলেন। শরীরের নানা জায়গাতে পানি চলে এসেছিল। বৃহস্পতিবার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে ভর্তির চেষ্টা করলেও বিপ্লবের বাবা হতে চায়নি। পরে বাসায় নেওয়ার পথে রাত ১০টার দিকে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬২ বছর।

বাবার অনুপ্রেরণায় বিপ্লবের ক্রিকেটার হয়ে ওঠা। পেশায় সিএনজি অটোরিকশাচালক আব্দুল কুদ্দুস নিজে কষ্ট করলেও ছেলেকে বড় ক্রিকেটার হিসেবে গড়ে তুলতে সাধ্যের সবকিছুই করেছেন। কষ্ট বৃথা যায়নি। স্বপ্নের এক একটা সিঁড়ি ভেঙে তার ছেলের হঠাৎই সুযোগ মিলেছে জাতীয় দলের জার্সিতে। মাত্র ১৯ বছরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পথ চলা শুরু হয় বিপ্লবের। সেই বাবাকে শেষবারের মতো না দেখার আক্ষেপ কতদিন বয়ে বেড়াবেন এই বিপ্লব! 

যদিও বড় ভাই মুমিনুল ইসলাম বাবলুকে মোবাইল ফোনে বিপ্লব জানিয়েছেন, বাবাকে যেন কষ্ট দেওয়া না হয়। বাংলা ট্রিবিউনকে বাবুল বলেছেন, “বিপ্লব খুব অস্থিরতার ভুগছে। তবুও সে (বিপ্লব) বলেছে, ‘বাবাকে যেন কষ্ট দেওয়া না হয়। দ্রুততম সময়ে যেন বাবার দাফন কার্যক্রম শুরু করা হয়। আমার কোনও কষ্ট নেই, আমার ২৪ ঘণ্টা লাগবে। শুধু শুধু বাবাকে ২৪ ঘণ্টা কষ্ট দিয়ে লাভ নেই।”

কথাগুলো বলতে বলতেই বাবলু কেঁদে উঠলেন, ‘আমার ছোট ভাই বাবাকে দেখতে পারলো না। ওর আসতে আসতে আগামীকাল সকাল ১০টা বেজে যাবে। ওর (বিপ্লবের) যে কতটা কষ্ট হচ্ছে, আমি বুঝতে পারছি। আমার বাবার জন্য সবাই দোয়া করবেন।’

খিলগাঁওর সিপাহীবাগ বাজার জামে মসজিদের পাশের কবরস্থানে বাদ জুমা বিপ্লবের বাবার দাফন সম্পন্ন হবে।

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) বিপ্লবের বাবার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। পাশাপাশি দ্রুততার সঙ্গে তার দেশে ফেরার সব রকম ব্যবস্থা করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা।