ঐতিহাসিক জয়ে আপ্লুত সাকিব-তামিম

নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশনে সুখকর নয় বাংলাদেশের অতীত পরিসংখ্যান। আগের ৯ টেস্টের সবক’টিতেই হার, এর মধ্যে পাঁচটিই ইনিংস ব্যবধানে! সর্বশেষ ২০১৯ সালে টেস্ট সিরিজ খেলতে গিয়ে দুটিতেই ইনিংস ব্যবধানে হেরেছিল। সেই বাংলাদেশ মাউন্ট মঙ্গানুইয়ের ২২ গজে দাপট দেখিয়ে ৮ উইকেটে জয় পেয়েছে। ঐতিহাসিক জয়টি এসেছে আবার সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবালের মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটারদের ছাড়া। দলের সঙ্গে না থাকলেও ইতিহাস গড়া জয়ে আপ্লুত এই দুই ক্রিকেটার।

জয় থেকে খানিক দূরে থাকতেই দলকে অভিনন্দন জানিয়েছেন সাকিব। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, ‘কী দারুণভাবেই না নতুন বছর শুরু করলো বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। অধিনায়ক, খেলোয়াড় ও কোচিং স্টাফদের অনেক অনেক অভিনন্দন।’

পারিবারিক কারণে নিউজিল্যান্ড সফরে খেলতে যাননি সাকিব। ওদিকে চোটের কারণে যেতে পারেননি তামিম। দলের সঙ্গে না থাকলে কী, স্মরণীয় এই জয় ভীষণভাবে ছুঁয়ে গেছে বাঁহাতি ওপেনারকে। ফেসবুকে সেই অনুভূতি প্রকাশ করেছেন দীর্ঘ পোস্টে। যার শুরুটা তামিম করেছেন অভিনন্দন জানিয়ে, ‘অসাধারণ জয়, ঐতিহাসিক জয়। গোটা দলকে অভিনন্দন। বছরের পর বছর, সফরের পর সফর আমরা নিউজিল্যান্ড থেকে খালি হাতে ফিরেছি। এবার অনেক কারণেই পরিস্থিতি ছিল আরও কঠিন। কিন্তু সব বাধা দূর করে দারুণ এক জয় এনে দিলো এই দল। নিউজিল্যান্ডে গিয়ে নিউজিল্যান্ডকে হারানো এখন ক্রিকেট বিশ্বের সবচেয়ে কঠিন কাজগুলোর একটি। আমরা দেখালাম, আমরা পারি।’

তামিম দলের সবার অবদান তুলে ধরেছেন পোস্টের পরের অংশে, ‘সবচেয়ে ভালো লাগার বিষয়, সম্পূর্ণ দলীয় প্রচেষ্টার জয় এটি। দারুণ স্পিরিটেড ক্রিকেট খেলেছে দল। এবাদতের অসাধারণ বোলিংয়ে কোনও প্রশংসাই যথেষ্ট নয়। জয় থেকে শান্ত, লিটন থেকে মিরাজ, ইয়াসির, শান্ত, এমনকি বদলি নেমে দুর্দান্ত শেষ ক্যাচটি নেওয়া তাইজুল এবং দলের প্রতিটি সদস্য, সবার সম্মিলিত অবদানের জয় এটি।’

যার নেতৃত্বে কিউই দুর্গ ভাঙলো বাংলাদেশ, সেই অধিনায়ক মুমিনুল হকের কথা আলাদাভাবে লিখেছেন তামিম, “আমি তবু আলাদা করে বলবো একজনের কথা। যখন চরম দুঃসময় এসেছে, কেউ যখন দলের ওপর বিশ্বাস রাখেনি, দলের ভেতরেও অনেকের যখন সংশয় জেগেছে নিজেদের নিয়ে, তখনও বিশ্বাস হারাননি একজন। সে সবসময় বিশ্বাস করে গেছে এবং প্রবল বিশ্বাস নিয়েই দলকে বিশ্বাস জোগানোর চেষ্টা করেছে, ‘আমরা পারি, আমরা অবশ্যই পারি।’ বাজে দিন এসেছে, খারাপ পারফরম্যান্স হয়েছে। তারপরও সে কখনও দলের ওপর বিশ্বাস হারায়নি। টেস্ট ক্রিকেটের প্রতি তার আবেগ তীব্র, টেস্ট ক্রিকেটকে সে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দেয় সবসময়। মুমিনুল হক, আমাদের অধিনায়ককে টুপি খোলা অভিনন্দন!”

দীর্ঘদিন জাতীয় দলের বাইরে থাকা পেসার কামরুল ইসলাম রাব্বি লিখেছেন, ‘অভিনন্দন বাংলাদেশ দল। দারুণ একটি টেস্ট জয়। পুরো দলকে অভিনন্দন ভালো ক্রিকেট উপহার দেওয়ার জন্য।’

যুব বিশ্বকাপজয়ী দলের অধিনায়ক আকবর আলীও নিজের ফেসবুকে ক্রিকেটারদের শুভেচ্ছায় সিক্ত করেছেন, ‘নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক জয়। এই জয় বাংলাদেশের জনগণকে উৎসর্গ করা হয়েছে। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নদের নিজেদের মাঠে পরাজিত করা কখনোই সহজ কোনও কাজ নয়। কিউইদের মাঠে প্রথমবারের মতো জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।’