এবাদত জানালেন, লক্ষ্য ঠিক করাই ছিল

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাজে পারফরম্যান্সের পর পাকিস্তানের বিপক্ষে ঘরের মাঠে করুণ অবস্থা- সব মিলিয়ে কঠিন চাপের মধ্যে নিউজিল্যান্ড সফরে যায় বাংলাদেশ দল। সেখানে যাওয়ার পর করোনাভাইরাস, কোয়ারেন্টিন, খেলা বাতিল হওয়ার শঙ্কা- এইসব ইস্যুতে অনুশীলন বাধাগ্রস্ত হয়। মাঠ ও মাঠের বাইরের এত বাধা আসলেও সব একপাশে ঠেলে মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টে স্বাগতিকদের ওপর আধিপত্য বিস্তার করে জয় ছিনিয়ে এনেছে মুমিনুল হকরা। দুর্দান্ত এই জয়ের নায়ক এবাদত হোসেন। কিউই দুর্গ জয় করে তিনি জানালেন, লক্ষ্য ঠিক করেই তারা নিউজিল্যান্ডে এসেছিলেন।

প্রথম টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা নিউজিল্যান্ডের দখলে। তাছাড়া নিজেদের মাঠে এই ফরম্যাটে সবচেয়ে ভয়ংকর দলও তারা। পরিসংখ্যান সেটাই বলছে। দেশের মাঠে টানা ১৭ টেস্টে হারেনি কিউইরা। সেই তারাই কিনা এবাদতের পেস আক্রমণের সামনে দিশেহারা। আজ (বুধবার) ৬ উইকেট নেওয়ার দিনে বাংলাদেশি পেসার ৯ বছরের আক্ষেপ ঘুচিয়েছেন। ২০১৩ সালের পর তার হাত ধরে বাংলাদেশের কোনও পেসার পেয়েছেন ৫ উইকেট।

কিউইদের বিপক্ষে প্রথম টেস্টের ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতেছেন এবাদত। পুরস্কার হাতে নিয়ে বলেছেন, ‘প্রথমে ধন্যবাদ জানাতে চাই আল্লাহকে। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে আমাদের দল ২১ বছর ধরে কোনও ম্যাচ জেতেনি। এবার একটা লক্ষ্য ঠিক করে এসেছিলাম। নিজেদের হাত তুলেছি, আর বলেছি তারা টেস্ট চ্যাম্পিয়ন, আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য তাদের হারানোর উদাহরণ রেখে যেতে হবে।’

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এই টেস্টের আগে এবাদতের বোলিং গড় খুব একটা ভালো ছিল না। ১০ টেস্টে ছিল ১১ উইকেট, গড় ৮১.৫৪! তার গড় নিয়ে ট্রলও হচ্ছিল। সেই এবাদত এক টেস্টে ৭ উইকেট নিয়ে গড় অনেকটাই কমিয়ে এনেছেন। ১১ ম্যাচে ১৮ উইকেট, বোলিং গড় এখন ৫৬.৫৫।

ডানহাতি পেসার জানালেন, এই সাফল্য এমনি এমনি আসেনি, ‘গত দুই বছরে (পেস বোলিং কোচ) ওটিস গিবসনের সঙ্গে আমি কাজ করেছি। ঘরের মাঠে কন্ডিশন সবসময় ফ্লাট থাকে। আমরা এখনও বাইরে কীভাবে বল ও রিভার্স করতে হয়, সেটা শিখছি। আমার সাফল্যের জন্য কিছুটা ধৈর্য ধরতে হয়েছে।’

প্রতিভা অন্বেষণ কার্যক্রম ‘ফাস্ট বোলার হান্ট’ থেকে উঠে এসেছেন এবাদত। বিমানবাহিনীতে চাকরি করা এবাদত ওই দলের হয়ে খেলতেন ভলিবল। ঢাকার ক্রিকেটে তার শুরুটা ২০১৪ সালে সিটি ক্লাবের হয়ে প্রথম বিভাগের ক্রিকেটে। তবে ক্রিকেট সত্তার আসল বিকাশ ঘটেছে রবি পেসার হান্টের মধ্য দিয়ে। তার উদযাপনও অভিনব। কোনও ব্যাটারকে আউট করলেই ‘স্যালুট’ দেন।

এক প্রশ্নের জবাবে এবাদত বলেছেন, ‘আমি বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একজন সদস্য, জানি কীভাবে স্যালুট দিতে হয়। আর ভলিবল থেকে ক্রিকেটে আসার গল্পটা অনেক লম্বা। আমি ক্রিকেটটা উপভোগ করছি, একই সঙ্গে বাংলাদেশ ও বিমানবাহিনীকে প্রতিনিধিত্ব করাটাও।’