আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে তামিম ইকবালের কাছে ‘ভয়ের’ নাম ছিলেন পেসার ফজল হক ফারুকী। তিন ম্যাচেই দেশসেরা ওপেনারের একই রকম বলে একই শটে সাজঘরে ফিরেছেন। প্রথম দুই ম্যাচে এলবিডব্লিউ হলেও শেষ ম্যাচে হয়েছেন বোল্ড। বারবার ফারুকীর কাছে হেরে গেলেও লজ্জার কিছু দেখেন না বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক।
সোমবার ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে তামিম বলেছেন, ‘আমার এতো বড় ক্যারিয়ারে খুব কম সময়ই গোটা সিরিজে রান করতে পারিনি। আগে হয়তো দুই-একবার হয়েছে এমন। হ্যাঁ, আমি হতাশ। বিশেষ করে, আমার কাছে মনে হয়, এক বোলারের বলেই বারবার… এটা মেনে নেওয়ায় লজ্জার কিছু নেই যে সে আমাকে হারিয়ে দিয়েছে। এটা নিয়ে কাজ করতে হবে।’
যদিও ফারুকীর একই ধরনের বলে বারবার আউট হয়ে হতাশ তামিম, ‘আউট হওয়ার ধরনের চেয়ে আমি বেশি হতাশ যে দলে অবদান রাখতে পারিনি। ওটা নিয়ে দুর্ভাবনা বেশি নেই আমার, কারণ এই জায়গাটায় আমি আগেও আউট হয়েছি, অনেক রানও করেছি। তবে গোটা সিরিজে রান না করা ও তিনবার আউট হওয়া হতাশাজনক।’
দুঃস্বপ্নের শুরু সেই প্রথম ওয়ানডেতে। ফারুকীর একটি গুড লেন্থ ডেলিভারিতে পরাস্ত হন তামিম। রক্ষণাত্মকভাবে খেলতে গিয়ে ব্যাটে-বলে করতে পারেননি। লাইনে পিচ করা ডেলিভারিটির ইম্প্যাক্ট ছিল স্টাম্প বরাবর। আম্পায়ার আউট না দিলেও রিভিউ নিয়ে উইকেটটি পেয়ে যায় আফগানিস্তান। দ্বিতীয় ওয়ানডেতেও ছিল একই পরিণতি। আফগান পেসারের ভেতরের দিকে ঢোকা ডেলিভারি চেষ্টা করেও খেলতে পারেননি দেশসেরা ওপেনার। বল গিয়ে আঘাত হানে তার প্যাডে; আবারও এলবিডব্লিউ। সোমবার একই ডেলিভারিতে বলের লাইনই বুঝতে পারেননি তামিম। সামনে পা বাড়িয়ে ব্যাট চালালেও উপড়ে যায় স্টাম্প। তাতে ৮, ১২-র পর করলেন মাত্র ১১ রান।
এবার ব্যর্থ হলেও তামিম মনে করেন, একই ধরনের ডেলিভারির বিপক্ষে রান করার অভিজ্ঞতাও আছে তামিমের, ‘একই ধরনের ডেলিভারিতে তিনবার আউট হয়েছি বলেই যে কাজ করতে হবে, এমন নয়। কারণ, ওই জায়গায় আমি অনেক রানও করেছি। হয়তো আমাকে আরেকটু ভালো করতে হবে। একটু ভালো হতে হবে। আর এটা নিয়ে আমি কাজ করে যাবো। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার হিসেবে, আমি সবসময় বলে এসেছি, কাজ করে যেতে হবে, করে যেতেই হবে। কাজ করতে থাকলে এতে ভালো হয়ে উঠবেনই।’
সময় এখন খারাপ গেলেও ভালো কিছুর অপেক্ষায় বাংলাদেশ অধিনায়ক, ‘নিজের ব্যাটিংয়ে আমি অনেক গর্ব খুঁজে নিই এবং নিজের কাছে নিজের ব্যাটিংয়ের মানদণ্ড অনেক উঁচুতে... এটা নিয়েই এগোতে হবে। এখানেই দুনিয়ার শেষ নয়। কখনও সময় আসে, যখন রান করা হয়ে ওঠে না। আবার সময় আসে, যখন রানের জোয়ার বয়ে যায়। আমার সময় এলে, নিশ্চিত করবো যেন অনেক রান করতে পারি।’
মূলত বাজে ফুটওয়ার্কের মাশুল দিচ্ছেন তামিম। যে সমস্যাটা খুব পুরনো। বাংলাদেশের হয়ে ২২০ ওয়ানডেতে ব্যাটিং করে ২১১ বার আউট হয়েছেন ওয়ানডে অধিনায়ক। এর মধ্যে এলবিডব্লিউ হয়েছেন ২০বার, বোল্ড ৩২বার।
তামিমের ফুটওয়ার্ক নিয়ে ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছেন ব্যাটিং কোচ জেমি সিডন্স। কয়েকদিন আগে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছিলেন, ‘তামিম চায় তার সামনের পা একটু সোজা রাখতে। এটা খুব দ্রুত হবে না। আমরা বলছি দীর্ঘমেয়াদি ভাবনার কথা। আরও তিন-চার বছর খেলতে হলে, ওর সামনের পা আরেকটু সোজা করতে হবে। আরও অনেক সাফল্য সে পাবে। যদি এলবিডব্লিউ না হয়, ওকে আউট করা খুব কঠিন হয়ে যাবে। অনেক রান করবে ও।’