ঢাকায় গড়া ১৯৫৯ সালের ‘বিশ্বরেকর্ড’ ভাঙলেন মুশফিক-লিটন

৬ মার্চ, ১৯৫৯। বর্তমানে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম তখন পরিচিত ছিল ঢাকা স্টেডিয়াম নামে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২২ রানের মধ্যে ৫ উইকেট হারিয়েছিল পাকিস্তান। সেই ম্যাচে ৬ষ্ঠ উইকেটে ওয়ালিস ম্যাথিয়াস ও সুজাউদ্দিন মিলে ৮৬ রানের জুটি গড়ে দলটিকে উদ্ধার করেছিলেন। ২৫ রানের মধ্যে ৫ উইকেট হারানোর পর এতদিন ওটাই ছিল ৬ষ্ঠ উইকেটে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড। ৬৩ বছর পর মিরপুরের হোম অব ক্রিকেটে রেকর্ডটি নিজেদের করে নিলেন মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাস।

মিরপুরে সোমবারের সকালটুকু ভুলে যেতে চাইবেন বাংলাদেশের টপ অর্ডার ব্যাটাররা। লঙ্কান দুই পেসার কাসুন রাজিথা ও আসিথা ফার্নান্ডোর পেস বোলিংয়ের সামনে খেই হারায় স্বাগতিক দল। মাত্র ২৪ রানে হারায় ৫ উইকেট। তারপর বাংলাদেশকে ম্যাচে ফেরান দুই উইকেটকিপার ব্যাটার মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাস।

কঠিন বিপর্যয়ের মুখে অবিশ্বাস্য ব্যাটিংয়ে বিশ্বরেকর্ড গড়েছে লিটন-মুশফিক জুটি। সোমবার বাংলাদেশের দুই ব্যাটারের রেকর্ড জুটিটি ছিল দুইশ’ ছাড়ানো। যা অব্যাহত আছে এখনও।

কাসুন রাজিথা ও আসিথা ফার্নান্ডোর পেস বোলিংয়ে মাহমুদুল হাসান জয়, তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসান রানের খাতা না খুলেই আউট হন। অন্যদিকে নাজমুল হোসেন শান্ত (৮) ও মুমিনুল হক (৯) রান করে আউট হন। ২৪ রানে টপ অর্ডারের ৫ ব্যাটার নেই। এমন অবস্থায় একশ’ রানের নিচে আউট হওয়ার শঙ্কায় ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু খাদের কিনারা থেকে দলকে টেনে তোলার কাজটা নিপুণভাবে করেছেন লিটন ও মুশফিক।

ঠিক ১৯৫৯ সালে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে আজকের মতো ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়েছিল পাকিস্তানও। ৬ষ্ঠ উইকেটে ওয়ালিস ম্যাথিয়াস ও সুজাউদ্দিনের ৮৬ রানের জুটিতে ১৪৫ রান করতে পারে তারা। প্রথম ইনিংসে ম্যাথিয়াস ও সুজাউদ্দিনের দারুণ ব্যাটিংয়েই মূলত ৪১ রানের বড় জয় পায় পাকিস্তান।

৬৩ বছর পর মিরপুরে একই পরিণতি হয়েছিল বাংলাদেশের। কিন্তু লিটন-মুশফিকের প্রতিরোধে বাংলাদেশের বিপর্যয় হয়নি। উল্টো সফরকারীদের চাপে রেখেছে মুশফিক ও লিটন।

শুধু বিশ্বরেকর্ড ভেঙে ক্ষান্ত হননি দুই উইকেটকিপার ব্যাটার। বাংলাদেশের হয়ে ৬ষ্ঠ উইকেট জুটির রেকর্ডটিও নিজেদের করে নিয়েছেন তারা। আগের রেকর্ডটিতে মুশফিকের সঙ্গী ছিলেন আশরাফুল। এবার তার সঙ্গী লিটন। ২০০৭ সালে কলম্বোতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মুশফিকুর রহিম ও মোহাম্মদ আশরাফুল মিলে ১৯১ রানের জুটি গড়েছিলেন। সোমবার ২০০ ছাড়ানো জুটিতে অবিচ্ছিন্ন আছেন মুশফিক ও লিটন।

বিশ্বরেকর্ড ও ৬ষ্ঠ উইকেটে বাংলাদেশের সেরা রেকর্ড জুটি গড়ার পথে দুইজনই আবার সেঞ্চুরিও পেয়েছেন। প্রথমে সেঞ্চুরি তুলে নেন লিটন। ১৪৯ বলে ১৩ চারে শতক পূরণ করেন তিনি। গত ৬ মাসের মধ্যে লিটনের এটি দ্বিতীয় সেঞ্চুরি, সব মিলিয়ে তৃতীয়। লিটনের পর ব্যাক টু ব্যাক সেঞ্চুরি পেয়ে যান মুশফিকও। ২১৮ বলে ১১ চারে মুশফিক নবম সেঞ্চুরিতে পৌঁছান।

মুশফিক ও রহিমের জোড়া সেঞ্চুরিতে মিরপুর টেস্টের প্রথম দিন বাংলাদেশের হয়ে রইলো।