আবার টেস্ট অধিনায়ক সাকিব

আবারও টেস্টের নেতৃত্বে ফিরলেন সাকিব আল হাসান। মুমিনুল হক স্বেচ্ছায় দায়িত্ব ছাড়ার পর লাল বলে বাংলাদেশের অধিনায়ক হলেন এই অলরাউন্ডার। নেতৃত্বের জায়গাটা একরকম হাতবদলই হলো। কারণ, সাকিবের নিষেধাজ্ঞায় টেস্টের দায়িত্ব পেয়েছিলেন মুমিনুল। সেই তার কাছ থেকেই আবার নেতৃত্বে ফিরলেন সাকিব। আর ডেপুটি হয়েছেন লিটন দাস। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন।

আজ (বৃহস্পতিবার) বোর্ড সভায় বসেছিলেন বিসিবির পরিচালনা পরিষদ। সেখানে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল টেস্ট অধিনায়ক। যেহেতু মুমিনুল আগেই বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের কাছে অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন, তাই বোর্ড সভায় নির্বাচন করা হয়েছে নতুন অধিনায়ক। সাকিব নেতৃত্ব পাওয়ায় তার প্রথম মিশন শুরু হচ্ছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ দিয়ে। এ মাসেই ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ। ১৬ জুন শুরু অ্যান্টিগা টেস্ট।

অধিনায়ক নির্বাচন প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমকে পাপন ‍বলেছেন, ‘তিনটি নাম এসেছিল আলোচনায়। সেখান থেকে সাকিবকে বেছে নেওয়া হয়েছে।’ কতদিনের জন্য সাকিবকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, এমন প্রশ্নে বিসিবি সভাপতি বললেন, ‘এটা পরবর্তী ঘোষণা পর্যন্ত। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ থেকে শুরু করুক। ভবিষ্যতে দেখা যাবে।’

জুয়াড়ির সঙ্গে যোগাযোগের বিষয় ‘গোপন’ করায় ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) দুই বছর নিষিদ্ধ করেছিল সাকিবকে, যেখানে ছিল এক বছরের স্থগিত নিষেধাজ্ঞা। ২০১৯ সালের অক্টোবরে তিনি নিষিদ্ধ হওয়ার পর টেস্টের অধিনায়ক করা হয়েছিল মুমিনুলকে। অনেকটা আচমকাই দায়িত্ব পেয়েছিলেন বাঁহাতি ব্যাটার। এরপর থেকে লাল বলের দায়িত্ব তিনিই সামলেছেন। তবে দলীয় পারফরম্যান্সের সঙ্গে ব্যক্তিগত জায়গায় ব্যর্থতায় দুই দিন আগে দায়িত্ব ছাড়ার কথা জানান মুমিনুল। যদিও বিসিবি আনুষ্ঠানিকভাবে তখন কিছু জানায়নি।

শেষ পর্যন্ত এলো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা। বিসিবি থেকে জানানো হয়েছে, স্বেচ্ছায় দায়িত্ব ছাড়া মুমিনুলের জায়গায় টেস্ট অধিনায়ক করা হয়েছে সাকিবকে। আর তার সহকারী হিসেবে দায়িত্ব সামলাবেন লিটন।

এ নিয়ে তৃতীয়বার টেস্ট দলের নেতৃত্ব পেলেন সাকিব। প্রথমবার ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের প্রথম টেস্ট চলাকালীন সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা চোটে পড়লে দায়িত্ব পান তিনি। প্রথম দফায় ১৩ মাস দায়িত্ব পালন করেন টেস্ট দলের। সেবার ৯ টেস্টে নেতৃত্ব দিয়ে একটিতে জেতেন বাঁহাতি এই অলরাউন্ডার। এরপর ২০১১ সালে জিম্বাবুয়ে সফরে টেস্ট ম্যাচ হারলে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় তাকে।

দ্বিতীয় দফায় সাকিব দায়িত্ব পান ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে। সেবার টেস্টের পাশাপাশি টি-টোয়েন্টি দলের নেতৃত্বভারও তুলে দেওয়া হয় তার কাঁধে। এই সময় তার অধিনায়কত্বে পাঁচ টেস্টে ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুই ম্যাচ জেতে বাংলাদেশ, হেরে যায় আফগানিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র টেস্ট।

সাকিবের অধিনায়কত্ব লম্বা হতো, কিন্তু ২০১৯ সালে ফিক্সিং বিতর্কে জড়িয়ে নেতৃত্ব হারান। তার নেতৃত্বে মোট ১৪ টেস্ট খেলে বাংলাদেশ জয় পেয়েছে তিনটিতে, হেরেছে ১১টি। অন্যদিকে মুমিনুলের নেতৃত্বে ১৭ টেস্টে তিন জয়, দুই ড্র ও ১১ হার বাংলাদেশের। তবে মুমিনুলের হাত ধরে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে প্রথম জয়ের স্বাদ পায় বাংলাদেশ।