সাকিবের নেতৃত্ব পাওয়া এবং কিছু প্রশ্ন

তৃতীয়বারের মতো সাকিব আল হাসানকে জাতীয় দলের অধিনায়ক বেছে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু তার নেতৃত্ব পাওয়ার পর ‘নৈতিকতার’ প্রসঙ্গটি সামনে চলেই আসে। সাকিব ২০১৯ সালে ফিক্সিং বিতর্কে জড়িয়ে অধিনায়কত্ব হারিয়েছিলেন। ফলে বিসিবির এমন সিদ্ধান্তে তরুণ ক্রিকেটারদের মাঝে ইতিবাচক বার্তা কী পৌঁছালো- এমন প্রশ্নই এখন সবার মুখে মুখে। 

অথচ ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার দারুণ এক উদাহরণ সামনে আনতে পারতো বিসিবি। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটার ক্যামেরন ব্যানক্রফট বল টেম্পারিং করলে তার দায় গিয়ে পড়ে তখনকার অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ ও সহ-অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নারের কাঁধেও। ম্যাচের চতুর্থ দিন সকালেই তাদের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয় ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া। মূলত অজি ক্রিকেটের সঙ্গে এমন কিছু যায় না বলেই তারা কঠিন এই পদক্ষেপটি বেছে নিয়েছে।

এরপর তদন্তে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় শাস্তিও পেতে হয়েছে স্টিভেন স্মিথ ও ডেভিড ওয়ার্নারকে। দুই ক্রিকেটার নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরলেও তাদের এখন পর্যন্ত নেতৃত্বে ফিরিয়ে আনা হয়নি। তরুণদের প্রতি নেতিবাচক বার্তা যেতে পারে- এমন ভাবনা কাজ করেছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার। শুধু অস্ট্রেলিয়াই নয়, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নীতিবিরুদ্ধ অপরাধে দোষী কেউই পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেললেও অধিনায়ক হতে পারেননি। 

ব্যতিক্রম উদাহরণ হয়ে থাকলেন কেবল সাকিব। যেখানে ওয়ার্নার-স্মিথ কম শাস্তি পেয়েও অধিনায়ক হতে পারেননি কেবল নৈতিকতার প্রশ্নে। শুধুমাত্র টেম্পারিংয়ের মতো অপরাধ করে। অন্যদিকে সাকিব ম্যাচ পাতানোর প্রস্তাব গোপন করে আইসিসির নিষেধাজ্ঞা পেয়েও অধিনায়কের মতো বড় পদ গ্রহণ করতে যাচ্ছেন। বোর্ড এবং সাকিবের এই সিদ্ধান্ত তরুণ ক্রিকেটারদের নিশ্চিতভাবেই ইতিবাচক কোনও বার্তা দেবে না।  তবে বোর্ড সভাপতির কথার পরিপ্রেক্ষিতেই স্পষ্ট ছিল সাকিবের ক্যারিয়ারে কালো অধ্যায় যুক্ত হওয়ার বিষয়টি তারা আলাদা করেই দেখেছেন, ‘এগুলো (সাকিবের নৈতিকতা) নিয়ে সব আলোচনা করেই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ওর ব্যাপারটা একটু ভিন্ন ছিল, অন্যদের মতো ছিল না। এটা আমি আজকে এখানে বলতে চাই না, তবে ওর ব্যাপারটা একটু আলাদা ছিল।’

সেই ‘আলাদা’ভাবে দেখার বিষয়টিকে আবার এভাবে যৌক্তিকও দেখাতে চাইলেন নাজমুল হাসান, ‘টেস্টে আমার কাছে এই মুহূর্তে যে বিকল্পগুলো ছিল, আমাদের মনে হয়েছে এটাই সেরা অপশন। এটা হলো প্রথম কথা এবং আপনারা একটা ব্যাপার খেয়াল করবেন, আইসিসি থেকে যে বিবৃতি ও শাস্তি দেওয়া হয়েছিল, অন্যদের সঙ্গে একটা বিরাট পার্থক্য আছে। ক্লিয়ার কাট পার্থক্য। আপনারা একবার পড়ে দেখেন, নিজেরাই পার্থক্যটা বুঝতে পারবেন।’