নতুন রূপে ফেরা খালেদের ‘প্রথম’

অভিষেকের তিন বছর পর প্রথম টেস্ট উইকেট পাওয়া খালেদ আহমেদের সময়টা দারুণ কাটছে। বিশেষ করে, দক্ষিণ আফ্রিকা সফর থেকেই নিজেকে নতুন করে চেনাচ্ছেন এই পেসার। ডানবান টেস্টে অল্পের জন্য ৫ উইকেট নিতে পারেননি। তবে খুব বেশি দিন অপেক্ষা করতে হয়নি তাকে। রবিবার সেন্ট লুসিয়া টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে পেয়ে গেলেন ক্যারিয়ারের প্রথম ‘ফাইফার’।

২০১৮ সালের নভেম্বরে অভিষেক হয় খালেদের। অভিষেকের তিন বছর পর টেস্টের প্রথম উইকেট পান এই পেসার। একের পর এক ম্যাচ খেলেই যান, কিন্তু কোনও উইকেটের দেখা পান না। যদিও চোটের কারণে প্রায় দুই বছর জাতীয় দলের বাইরে ছিলেন। প্রথম তিন বছর খেলেছিলেন তিনটি টেস্ট।

মিরপুরে পাকিস্তানের বিপক্ষে নিজের চতুর্থ টেস্ট খেলতে নেমে প্রথম উইকেটের দেখা পান খালেদ। এরপর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ডারবান টেস্টে নেন ৪ উইকেট, পরের টেস্টে ৩টি। ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ভালো না করলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্টের পর দ্বিতীয় টেস্টেও ভালো বোলিং করেছেন।

বাংলাদেশকে চেপে ধরেছিলেন ক্যারিবীয় ব্যাটাররা। এক ওভারে খালেদ ২ উইকেট নিয়ে কিছুটা হলেও চাপমুক্ত করেছিলেন। ৩৯তম ওভারের প্রথম বলটি আউটসাইড অফ ডেলিভারি দিয়েছিলেন খালেদ। রেমন রিফারের ব্যাট ছুঁয়ে বল যায় স্টাম্পে। একই ওভারের শেষ বলে এনক্রুমা বনারকে ফেরান খালেদ। বনারও ইনসাইড এজ হয়ে ফেরেন।

ডানহাতি পেসারের তৃতীয় শিকার আলজারি জোসেফ। লিটন দাসের হাতে ক্যাচ বানিয়ে সাজঘরে পাঠান খালেদ। তার শর্ট বলে পুল করতে চেয়েছিলেন জোসেফ। কিন্তু ব্যাটে বলে ঠিকমতো সংযোগ হয়নি। খালেদের চতুর্থ শিকার বাংলাদেশের পথের কাঁটা হয়ে ওঠা কাইল মায়ার্স। ১১৯তম ওভারে খালেদের করা স্লোয়ার ডেলিভারি বুঝতে পারেননি মায়ার্স। ফ্লিক করতে চেয়েছিলেন, টাইমিং ঠিকঠাক হয়নি। মিড অনে ধরা পড়েন শরিফুল ইসলামের হাতে। ১৮ চার ও ২ ছয়ে ২০৮ বলে ১৪৬ রানের  ইনিংস খেলে বিদায় নেন তিনি।

মায়ার্সকে ফিরিয়ে পঞ্চম উইকেটের অপেক্ষায় ছিলেন খালেদ। দক্ষিণ আফ্রিকার মতো এবার আর হতাশ হতে হয়নি। ক্যারিবীয় শেষ ব্যাটার জেডেন সেলসকে উইকেটকিপার নুরুল হাসান সোহানের ক্যাচ বানিয়ে প্রথম ফাইফার তুলে নেন ডানহাতি পেসার। সব মিলিয়ে ৩১.৩ ওভারে ১০৬ রান দিয়ে খালেদ ৫ উইকেট শিকার করেন।

ক্রিকেট বিশ্বে পেসারদের ৫ উইকেট সাধারণ ঘটনা হলেও বাংলাদেশের জন্য সেটা বিশেষ কিছুই। ২০০৮ সালে শাহাদাত হোসেন ২৭ রানে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন। ১৪ বছর কেটে গেলেও বাংলাদেশের কোনও পেসার শাহাদাতকে টপকাতে পারেননি। এইতো চলতি বছরের শুরুর দিকে এবাদত হোসেন ৬ উইকেট নিলেও কিছু বাড়তি রান দেওয়াতে পেস বোলারদের তালিকায় দুই নম্বরে আছেন। মঞ্জুরুল ইসলাম, রুবেল হোসেন, রবিউল ইসলামরা পাঁচবার করে উইকেট নিতে পারলেও বাকিরা হতাশাই উপহার দিয়েছেন। তবে চলতি বছর এবাদতের পর খালেদ ৫ উইকেট নিয়ে পেসারদের নতুন দিনের জয়গান শোনাচ্ছেন!