তামিমের ‘অবসর নাটক’ শেষে সিরিজ বাঁচানোর মিশন

ফিটনেস শতভাগ নেই, তবুও খেলবেন- প্রথম ওয়ানডের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দিয়ে আলোচনায় আসেন তামিম ইকবাল। ফিট যে হননি, ব্যাট হাতে দেন প্রমাণ। তার মতো করে অন্যরাও ব্যর্থ ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশকে পরাজয়ের তিক্ত স্বাদ এনে দেন। আফগানিস্তানের কাছে হারের ‘পোস্টমর্টেম’ নিয়ে হয়তো আলোচনা চলতে পারতো, কিন্তু তা হয়নি। আবারও তামিম আলোচনায়, দেশের ক্রিকেটে ঝড় তুললেন আচমকা আন্তর্জাতিক অবসরের ঘোষণা দিয়ে। ১৮ ঘণ্টা তাকে নিয়েই চললো নানা কথাবার্তা, তাকে অবসর ভেঙে ফেরাতে যত তোড়জোর চালানো যায়, সবই হলো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যস্থতায় অবশেষে সিদ্ধান্ত পাল্টালেন বাঁহাতি ওপেনার। স্বস্তি ফিরলো কোটি তামিম ভক্তের হৃদয়ে, এ যেন তাদের বিজয়! এবার আনন্দ নিয়ে মাঠে ফেরার পালা।

অবসর ঘোষণায় তামিম বলেছিলেন, এনিয়ে আর কথা না বাড়াতে। কিন্তু কে শোনে তার এই অনুরোধ! দ্বিতীয় ওয়ানডের আগে মাঝের দুই দিন শুধু তামিম আর তামিম। এমনকি ম্যাচের আগের সংবাদ সম্মেলনেও তাকে নিয়ে প্রশ্ন করা হলে সেখান থেকে উঠে যাওয়ার ঈষৎ হুমকি দেন ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক লিটন। তামিম অবশেষে ক্রিকেটে ফেরার ঘোষণা দিয়েছেন। এবার মাঠে ফেরা যেতে পারে। বাংলাদেশের সামনে যে সিরিজ বাঁচানোর মিশন।

আজ শনিবার বেলা ২টায় আফগানিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডে খেলবে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের বিশ্বকাপ তো শুরু হবে এই প্রতিপক্ষের সঙ্গে সাক্ষাৎ দিয়েই। ওই ম্যাচকে মাথায় রেখেই ওয়ানডে সিরিজ শুরু করেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু নখদন্তহীন পারফরম্যান্স তাদের সামর্থ্যকে করেছে প্রশ্নবিদ্ধ। বাজে ব্যাটিংয়ের খেসারত দিতে হয়েছে বৃষ্টি আইনে ১৭ রানে হেরে। ব্যাটিংয়ে কেবল তৌহিদ হৃদয়ের একার লড়াই, আর অন্যদের নির্বিষ ভূমিকা বোলারদের কিছু করে দেখানোর সুযোগই দেয়নি। 

অনুশীলনে বাংলাদেশ

দুই প্রান্ত থেকে রশিদ খান আর মুজিব উর রহমানের স্পিন আর ফজল হক ফারুকীর পেসে ঝলসে গেছে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইন। ওই ম্যাচে ১৩ রান করা তামিম নেই। তার বদলে দলে যুক্ত করা হয়েছে রনি তালুকদারকে, কিন্তু একাদশে তার সম্ভাবনা ক্ষীণ। ওপেনিংয়ে লিটন দাসের সঙ্গে নাঈম শেখকে সম্ভবত দেখা যাচ্ছে। আর এই ম্যাচে প্রত্যাশিতভাবে নেতৃত্ব দিচ্ছেন আফগানিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টে রেকর্ড জয়ের অধিনায়ক লিটন। অবশ্য হুট করে পাওয়া দায়িত্ব তাকে চাপে ফেলছে কি না প্রশ্ন থেকে যায়। যদিও তিনি বলেছেন, ‘না কোনও চাপ নেই, চিল আছি।’ মানে নিজেও ফুরফুরে, দলের অন্যরাও। তামিমের অবসরের সিদ্ধান্ত পাল্টে ফেলার আগে সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, বাঁহাতি ওপেনারের অভাববোধ হবে না। তার কাছে দলই আগে।

এবার মাঠে লিটনের অগ্নিপরীক্ষা, এক ম্যাচ আগেই সিরিজ হার এড়ানোর। প্রতিপক্ষের স্পিন হুমকি মোকাবিলায় তার আশা, বাংলাদেশ মাঝের ওভারগুলোতে উইকেট ধরে রাখবে এবং ম্যাচের পরিস্থিতি অনুযায়ী খেলবে। লিটন বলেন, ‘আমরা জানি তাদের বড় শক্তি হলো স্পিন। আমাদের নিশ্চিত করতে হবে আমরা বেশি উইকেট হারাবো না। তাহলেই আমরা খেলায় থাকবো।’

সিরিজ বাঁচাতে ম্যাচটি জেতার বিকল্প নেই বাংলাদেশের সামনে। তামিমকে নিয়ে চলা গত দুই দিনের অবসর নাটকের প্রভাব ছাপিয়ে তারা ‘ওয়ানডের অদম্য দল’ হিসেবে পুরোনো চেহারায় ফিরতে পারে কি না, সেটাই দেখার অপেক্ষা।