ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে সোচ্চার অস্ট্রেলিয়ার ওপেনার উসমান খাজা। নিজের জুতোয় ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে বিশেষ বার্তা নিয়ে মঙ্গলবার অনুশীলন করতে মাঠে নেমেছিলেন। তার পর তোপের মুখে পড়েছেন তিনি। আইসিসি তাকে এ বিষয়ে বিধিনিষেধের কথা মনে করিয়ে দেওয়ায় এর বিরুদ্ধে লড়াই করার ঘোষণা দিয়েছেন অজি ওপেনার।
এবার আসা যাক কী বিশেষ বার্তা লেখা ছিল খাজার জুতোয়। লাল-সবুজ অক্ষরে জুতোয় লেখা ছিল, ‘সব জীবনের মূল্য সমান এবং স্বাধীনতা একটি মানবাধিকার।’
অনুশীলনের মতো একই বার্তা নিয়ে কাল পাকিস্তানের বিপক্ষে শুরু হতে যাওয়া টেস্টেও মাঠে নামতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তাকে আইসিসির বিধি নিষেধের কথা জানিয়ে দেওয়া হয় এর পরেই। মনে করিয়ে দেওয়া হয় অনুমতি ছাড়া বার্তা সম্বলিত কোনও কিছু ব্যবহার করতে পারবেন না তিনি। পরে অজি অধিনায়ক প্যাট কামিন্স সংবাদ মাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন, খাজা ম্যাচের সময় নিয়ম ভেঙে কিছু করতে যাচ্ছে না।
কিন্তু বিষয়টা যে অজি ওপেনার মন থেকে গ্রহণ করতে পারছেন না সেটা বোঝা যায় বুধবার সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া এক ভিডিও বার্তায়। নিজের কৃতকর্মের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন আবেগঘন উপস্থিতিতে, ‘আমি জুতোয় যা লিখেছি সেটা কোনওভাবেই রাজনৈতিক ছিল না। আমি কারও পক্ষ নিচ্ছি না। আমার কাছে মানবজীবন সব সময়ই সমান। একজন ইহুদির জীবনের মতো একজন মুসলমান-একজন হিন্দু এবং অন্য ধর্মের প্রত্যেকের জীবন আমার কাছে সমান।’
তিনি আরও যোগ করে বলেছেন, ‘আমি শুধু তাদের হয়ে কথা বলছি যাদের কথা বলার কোনও অধিকার নেই।’
খাজা বার্তা সম্বলিত জুতো পরার আগে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া কিংবা দলের কাউকে আগে এ সম্পর্কে অবগত করেননি। গাজায় চলমান যুদ্ধে বেশ কয়েক দিন ধরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব ছিলেন তিনি। আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী এই ধরনের বার্তা সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও বিধিনিষেধ নেই। বিশ্বকাপে পাকিস্তানের উইকেটকিপার ব্যাটার মোহাম্মদ রিজওয়ান একই রকম সোচ্চার হলেও তাকে কোনও ধরনের শাস্তি দেয়নি আইসিসি। কিন্তু আন্তর্জাতিক ম্যাচে এই ধরনের বার্তা সম্বলিত কোনও পোশাক বা কিছু পরিধানের ক্ষেত্রে কড়া বিধিনিষেধ আছে। ২০১৪ সালে একটি টেস্টে একই ইস্যুতে সোচ্চার হয়ে মঈন আলী ‘সেভ গাজা’ বার্তা সম্বলিত আর্মব্যান্ড পরেছিলেন। পরে আইসিসি তাকে সেই আর্মব্যান্ড খুলে ফেলতে বাধ্য করে।
খাজা অবশ্য আইসিসির এমন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে লড়াই করার ঘোষণা দিয়েছেন। পাকিস্তানি বংশোদ্ভুত এই ক্রিকেটার বলেছেন, ‘আইসিসি আমাকে বলেছে আমি ওই জুতো পরে মাঠে নামতে পারবো না। কারণ তাদের বিধি অনুসারে এটা নাকি রাজনৈতিক বিবৃতি। কিন্তু আমি সেটা মনে করি না। এটা মূলত মানবিক আবেদন। এ বিষয়ে আমি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি ও সিদ্ধান্তকে অবশ্যই সম্মান করবো। কিন্তু আমি এর বিরুদ্ধে লড়াই করবো এবং এর অনুমোদন আদায়ের চেষ্টা করবো