গত বছরের জুলাইয়ের পর ড্র দেখলো টেস্ট ক্রিকেট 

বৃষ্টির কারণে নষ্ট হয়েছে ১৪২ ওভার। তার পরেও পোর্ট অব স্পেনে সিরিজের প্রথম টেস্টে জয়ের স্বপ্ন দেখছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। সেই লক্ষ্যে প্রথম সেশনে দ্রুত রান তুলে দুই সেশনের বেশি বল করার সুযোগ পেয়েও ক্যারিবিয়ানদের প্রতিরোধ তারা ভাঙতে পারেনি। প্রোটিয়ারা ২৯৮ রানের লক্ষ্য দিলেও শেষ দিনে ক্যারিবিয়ানরা ৫ উইকেটে ২০১ রানে দিন শেষ করায় ড্রয়ে শেষ হয়েছে এই টেস্ট। 

ক্যারিবিয়ানদের হয়ে দৃঢ়চেতা মানসিকতায় ব্যাট করেছেন অ্যালিক আথানেজ। মাত্র অষ্টম টেস্ট ম্যাচ খেলতে নামা এই ব্যাটার ক্যারিয়ার সেরা ৯২ রানের ইনিংস উপহার দিয়েছেন। শুধু কি তাই? টেস্ট বাঁচাতে কাভেম হজ ও জেসন হোল্ডারকে সঙ্গে নিয়ে উপহার দিয়েছেন দুটি হাফসেঞ্চুরি জুটি! তাতে ২৮ ম্যাচ আর গত বছরের জুলাইয়ের পর ড্র দেখলো টেস্ট ক্রিকেট।   

অবশ্য জয়ের সম্ভাবনা থাকার পরেও এই টেস্ট ড্র হওয়ায় প্রোটিয়াদের একাদশ নির্বাচন নিয়ে এখন প্রশ্ন উঠেছে। পঞ্চম ফ্রন্ট লাইন বোলারের বদলে বাড়তি ব্যাটার নেওয়ায় সেটা জন্ম দিয়েছে প্রশ্নের। তাতে বাড়তি চাপটা পড়েছে দুই বোলার কেশব মহারাজ ও কাগিসো রাবাদার ওপর। দুই ইনিংসে বামহাতি স্পিনার মহারাজ ৬৬.২ ওভার বল করতে বাধ্য হয়েছেন। গতিময় বোলার রাবাদাকেও করতে হয়েছে ৩০ ওভারের মতো! লুঙ্গি এনগিদি ও ভিয়ান মুল্ডার ৩০.৫ ওভার বোলিংয়ে অবদান রেখেছেন। দ্বিতীয় স্পেশালিস্ট স্পিনার না থাকায় এইডেন মারক্রাম করেছেন ২১ ওভার। 

পঞ্চম সকালে রান তোলার লক্ষ্য নিয়েই মাঠে নামে সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রথম দশ ওভারে টনি ডি জর্জি ও মারক্রাম মিলে ৪৮ রান তুলেছেন। দুই ওপেনার মিলে যোগ করেন ৭৮ রান। জর্জি ৪৫ রানে আউট হলে ভাঙে জুটি। তার পর মারক্রাম ৩৮ রানে ফিরেছেন। এই সময় ঝড়ো গতিতে ব্যাট করেছেন ত্রিস্টান স্টাবস। আউট হওয়ার আগে ৫০ বলে ৬ চার ও ২ ছক্কায় ৬৮ রান তুলেছেন তিনি। অধিনায়ক বাভুমা ১৫ রানে অপরাজিত থেকেছেন। তাতে ৩ উইকেটে দ্বিতীয় ইনিংসে ১৭৩ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে প্রোটিয়া দল। 

২৯৮ রানের লক্ষ্যে যেভাবে ক্যারিবিয়ান শুরু করেছিল তাতে বিপদই বাড়ছিল তাদের। ১৮ রানের মধ্যে মহারাজ ও রাবাদার বোলিংয়ে ফেরেন দুই ওপেনার। এই সময়ে বৃষ্টির কারণে নষ্ট হয়েছে আরও এক ঘণ্টা। 

কেসি কার্টিকে নিয়ে তার পর বিপদ সামাল দেন আথানেজ। কার্টি ৩১ রানে ফিরলেও আথানেজ প্রতিরোধের দেয়াল গড়ে খেলেছেন। এক পর্যায়ে জয়ের সম্ভাবনা যখন মিলিয়ে গেছে তখন ৬.৪ ওভার বাকি থাকতেই ম্যাচের সমাপ্তি মেনে নেয় সফরকারী দল। দিন শেষে হোল্ডার ৩১ রানে অপরাজিত ছিলেন। জশুয়া ডা সিলভা ছিলেন ২ রানে। 

দ্বিতীয় ইনিংসে ৮৮ রানে ৪ উইকেট নিয়েছেন মহারাজ। ৩৮ রানে একটি শিকার রাবাদার। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর: দক্ষিণ আফ্রিকা ৩৫৭ (টনি ৭৮, বাভুমা ৮৬;ওয়ারিক্যান ৪/৬৯, সিলস ৩/৬৭) ও ১৭৩/৩ডি. (স্টাবস ৬৮, জর্জি ৪৫; ওয়ারিক্যান ২/৫৭) 

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২৩৩ (কার্টি ৪২, হোল্ডার ৩৬; মহারাজ ৪/৭৬, রাবাদা ৩/৫৬) ও ২০১/৫ (আথানেজ ৯২, কার্টি ৩১, হোল্ডার ৩১*; মাহারাজ ৪/৮৮)
ফল: ম্যাচ ড্র