কানপুর টেস্টের আগের দিন আকস্মিক এক সিদ্ধান্তে সবাইকে অবাক করেছেন সাকিব আল হাসান। টেস্ট এবং টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট থেকে বিদায়ের ঘোষণা দিয়েছেন বাঁহাতি এই অলরাউন্ডার। গত বিশ্বকাপেই তার শেষ টি-টোয়েন্টি খেলা হয়ে গেছে। ঘরের মাঠে আসন্ন দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ দিয়ে টেস্টকে বিদায় জানানোর কথা বলেছেন। তবে সেটি সম্ভব হবে যদি তিনি সরকার ও বিসিবি থেকে দেশে ফেরার নিরাপত্তা পান।
রাজনৈতিক কারণে সাকিবের দেশে ফেরা এখন অনেক কিছুর ওপর নির্ভর করছে। তাছাড়া তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলাও আছে। তাই সাকিব দেশে এসে দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ খেলতে পারলেও প্রয়োজনে দেশ ত্যাগ করতে পারবেন- তার কোনও নিশ্চয়তা নেই। কানপুরে সংবাদ সম্মেলনে সাকিব বলেছেন, ‘আমি যেন গিয়ে খেলতে পারি এবং নিরাপদ অনুভব করি। যখন দেশের বাইরে আসার দরকার হবে, দেশের বাইরে আসতেও যেন আমার কোনও সমস্যা না হয়। বোর্ড খেয়াল করছে। বিষয়গুলোর সঙ্গে যারা জড়িত তারা দেখছেন। তারা হয়তো আমাকে একটা সিদ্ধান্ত দেবে, যেটার ভিত্তিতে আমি দেশে গিয়ে খুব ভালোভাবে খেলে অন্তত টেস্ট ফরম্যাটটা ছাড়তে পারবো।’
এদিকে, বোর্ড সভাপতি ফারুক আহমেদ সাফ জানিয়ে দিয়েছেন নিরাপত্তা ইস্যুতে সাকিবকে কোনও সাহায্য তারা করতে পারবেন না, ‘গতকাল দুই দফায় কথা হয়েছে সাকিবের সঙ্গে। আমি তো আসলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কেউ না। সেটার পার্ট হতে পারবো না। একজনকে ব্যক্তিগতভাবে নিরাপত্তা দেওয়ার সামর্থ্য নাই। সেটা আসলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দিক থেকে এবং তার দিক থেকে আসতে হবে। বোর্ড থেকে ক্লিয়ারেন্স দেওয়ার সামর্থ্য বিসিবির নাই।’
তবে সাকিবের অবসরের সিদ্ধান্তের খবরটি জানতেন বলেই জানালেন ফারুক আহমেদ, ‘বাংলাদেশের ক্রিকেটের কিংবদন্তির চেয়ে বড় একজন, একটা-দুইটা ফরম্যাট থেকে বিদায় নিতে যাচ্ছে। আমাদের পরিচালকরা সবাই জানেন। আমিও তাদের ইনফর্ম করার চেষ্টা করেছি। আমার সঙ্গে গতকাল-পরশু দুই দফা আলোচনা হয়েছে। আমার নতুন করে কিছু বলার নেই। ওর সাক্ষাৎকারটা আমি দেখেছি। আমার সঙ্গে যে কথা হয়েছে সেটাই তুলে ধরেছে। নতুন করে যোগ করার কিছু নেই।’
পরে সাকিবের নিরাপত্তা নিয়ে আরেক প্রশ্নে ফারুক বলেছেন, ‘আমি কোনও এজেন্সি না, পুলিশ বা র্যাব না। কিংবা বিসিবিও এখানে কেউ না। এটা সরকারের তরফ থেকে নিরাপত্তার বিষয়টা আসতে হবে। নিরাপত্তাটা দুই রকম। একটা হচ্ছে, ‘‘ক্লিয়ারিং ফ্রম’’ (দেশ ছাড়ার)। এটা হয়তো আপনাদের বলেছে। আরেকটা হলো দর্শকদের থেকে নিরাপত্তা। এটা আসলে তার সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমরা এখানে পার্ট হতে পারবো না আসলে। এই মুহূর্তে বোর্ড থেকে এ সম্পর্কে কিছু বলা সম্ভব না। বোর্ড ব্যক্তিগতভাবে কাউকে নিরাপত্তা দিতে পারবে না আসলে। সেই অ্যাবিলিটিও নেই।’
নিরাপত্তা ইস্যুতে বিসিবির কিছু করার নেই উল্লেখ্য করে সাকিবের কোর্টেই বল ফেলে দিলেন ফারুক, ‘বিষয়টা বিচারাধীন, তাই আমাদের বেশি কিছু করার নেই। সেক্ষেত্রে এই মুহূর্তে বেশি কিছু ভাবনার নেই আসলে। ও (সাকিব) যদি আসতে পারে। ও ইচ্ছা পোষণ করেছে শেষ টেস্ট খেলতে চায় মিরপুরে। তখন ওই পরিস্থিতি যখন অ্যারাইজ করবে তখন আমরা ওটা নিয়ে চিন্তা করবো। এখন আসলে এত আগে চিন্তা করতে চাই না।’