দুটি রান আউটের কারণ হয়ে নার্ভাস ছিলেন জাকের

টস জিতে ব্যাটিং নিয়ে দারুণ শুরু করে বাংলাদেশ। পারভেজ হোসেন ইমনের সঙ্গে ২৮ বলে ৪৪ রানের জুটি গড়েন লিটন দাস। শুরুটা ভালো হলেও কিছুক্ষণের মধ্যে চাপে পড়ে যায় দল। জাকের আলী অনিকের ভুলে শামীম হোসেন ও শেখ মেহেদী হাসান রান আউট। তার ভুলে দুই সতীর্থ রান আউট হলে নার্ভাস হয়ে পড়েন তিনি। কিছুটা সময় নিয়ে সংকল্প করে ফেলেন ভুলের প্রায়শ্চিত্ত তাকেই দিতে হবে। যেই ভাবনা সেই কাজ। শেষ পর্যন্ত তার ৭২ রানের ইনিংসের ওপর ভর করেই বাংলাদেশ দারুণ জয় পায়।

বাংলাদেশের ইনিংসের ১৫তম ওভারের ঘটনা। রোস্টন চেজকে ডিপ মিড উইকেটে ঠেলে দুই রানের জন্য দৌড়ান জাকের। দ্বিতীয় রান নেওয়ার সময় ভুল বোঝাবুঝিতে শুরুতে নিজে রান আউট হয়েছেন ভেবে মেজাজ খারাপ হয় তার। টিভি রিপ্লে দেখে শামীমকে দেওয়া হয় আউট। বেঁচে যান জাকের। ১৮ রানে জীবন পেয়েই বেধড়ক পেটানো শুরু করেন ক্যারিবিয়ান বোলারদের। 

শুধু এই একটাই ঘটনা নয়, এর কিছুক্ষণ পর আবারও জাকেরের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউটের শিকার হন মেহেদী। এনিয়ে কিছুটা হলেও অনুশোচনায় ভুগছিলেন জাকের। তবে ম্যাচ শেষে তিনিই জয়ের নায়ক। পরপর দুটি রান আউট প্রসঙ্গ নিয়ে তার কথা, ‘অবশ্যই চাপ ছিল। খেলাটা খুব ভালো জায়গায় পৌঁছে গিয়েছিল। এরপর দুটো রান আউট। আমি খুব নার্ভাস হয়ে পড়েছিলাম। তারপরও আমি কেবল চেষ্টা করেছি শেষ পর্যন্ত খেলার। সৌভাগ্যবশত এরপর রান করতে পেরেছি। আর এতে আমি খুব খুশি। আজকের উইকেট আগের দুই ম্যাচের তুলনায় অনেক ভালো ছিল।’

কিছুদিন আগে ‘এ’ দলের হয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে এসেছিলেন জাকের। ওই সফরে বাউন্সারে বেশ ভুগেছিলেন তিনি। ‘এ’ দলের অভিজ্ঞতা মাথায় নিয়েই এবারের সিরিজে প্রস্তুতি নিয়েছিলেন জাকের। ক্যারিবিয়ান বোলারদেরকে কীভাবে মোকাবিলা করা যায় সেই প্রস্তুতির কারণেই এই সিরিজে সফল হয়েছেন এই ব্যাটার। নিজের প্রস্তুতি নিয়ে জাকের বলেছেন, ‘আমি ‘এ’ দলের হয়ে খেলতে এসেছিলাম, তখনও ওরা (ক্যারিবিয়ানরা) আমাকে অনেক টাফ টাইম দেয়। ওই সময় থেকে আসার ব্যাকঅফটা মাইন্ডে ছিল, ওরা আমার বিপক্ষে বাউন্সার ট্রাই করবে। এই কারণে ওয়েস্ট ইন্ডিজে আসার আগে আমি ওইভাবেই প্রস্তুতি নিয়েছি।’

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ফরম্যাটেই দারুণ সফল জাকের। টেস্ট ও টি-টোয়েন্টিতে তো সিরিজের সর্বোচ্চ রান এসেছে তার ব্যাট থেকে। টেস্টে ৪ ইনিংসে ৪৪ গড়ে জাকের করেছেন ১৭০ রান। ওয়ানডেতে তিন ম্যাচে ৫৭ গড়ে তার রান ১১৩। রান সংগ্রাহকের তালিকায় পাঁচ নম্বরে আছেন তিনি। অন্যদিকে কুড়ি ওভারের ক্রিকেটে ৬০ গড়ে ১২০ রান এসেছে জাকেরের ব্যাট থেকে, যা সিরিজের সর্বোচ্চ রান। তিন ফরম্যাটের ক্রিকেটে কীভাবে নিজেকে মানিয়ে নিচ্ছেন এমন প্রশ্নে জাকের বলেছেন, ‘মানসিকতায় পরিবর্তন এনেছি। যে ফরম্যাটই আসুক আমি আমার দল যেটা চাইবে, যেন সেই দায়িত্বটা পূরণ করতে পারি- এমন কিছুই আমার মাথায় থাকে। খুব বেশি ভাবি না, কোনও কিছু নিয়েই।’

ফিনিশারের ভূমিকা নিয়ে জাকের বলেছেন, ‘আমাকে যেই জায়গায় সুযোগ দেওয়া হোক না কেন, আমার চেষ্টা থাকবে পারফরম্যান্স করার। আপাতত আমি সাদা বলে ফিনিশিংয়ের দায়িত্বটা পাচ্ছি। চেষ্টা থাকবে, দল যেটা চাইবে সেই চাহিদা পূরণ করার।’