শান্ত-মুশফিকের সেঞ্চুরিতে প্রথম দিন বাংলাদেশের

সংক্ষিপ্ত স্কোর: বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে ৯০ ওভারে ২৯২/৩ (মুশফিক ১০৫*, শান্ত ১৩৬*; এনামুল ০, সাদমান ১৪, মুমিনুল ২৯)

গল টেস্টে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টপ অর্ডারে ব্যাটিং ব্যর্থতার পর বাংলাদেশের জুটি বাঁধেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুশফিকুর রহিম। ৪৫ রানে তিন উইকেট হারানোর পর তারা ক্রিজে একসঙ্গে হন। তারপর পুরোটা দিন দুজনের একচ্ছত্র আধিপত্য। শান্ত ও মুশফিক সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন। দুজনের ৪৪৩ বলে ২৪৭ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে প্রথম দিনের খেলা শেষে বাংলাদেশের রান ৩ উইকেটে ২৯২। শান্ত ১৩৬ রানে এবং মুশফিক ১০৫ রানে অপরাজিত খেলছেন।

শেষ সেশনে একটু আক্রমণাত্মক ছিল বাংলাদেশ। এই সময়ে ১১০ রান যোগ হয় স্কোরবোর্ডে। প্রথম দুই সেশনে ৯০ ও ৯২ রান তোলে সফরকারীরা। 

শান্তর পর মুশফিকের সেঞ্চুরি

৮৬তম ওভারের তৃতীয় বলে ঝুঁকি নিয়ে সিঙ্গেল নিলেন মুশফিকুর রহিম। তাতে ১৭৬ বলে ১২তম সেঞ্চুরি পূর্ণ করলেন বাংলাদেশের ব্যাটার। তার এই ইনিংসে ছিল ৫ চার। ২০২৪ সালের ২১ আগস্ট রাওয়ালপিন্ডিতে ১৯১ রান করেছিলেন তিনি। ম্যাচ জয়ী ওই ইনিংস খেলার পর থেকে টেস্টে রানখরা চলছিল তার ব্যাটে। ৭ ম্যাচ পর লাল বলের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে শতকের দেখা পেলেন মুশফিক।

শান্তর সেঞ্চুরির পর দুইশ ছাড়ালো জুটি

প্রথম সেশনের পর থেকে লঙ্কানদের ওপর চড়াও হয়ে খেলেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুশফিকুর রহিম। চতুর্থ উইকেটে এই জুটির দাপট অব্যাহত আছে শেষ সেশনেও। শেষ সেশনেই ২০২ বলে সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। শান্ত তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগারের দেখা পেয়েছেন ২০২৩ সালের নভেম্বরের পর। যা তার ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ সেঞ্চুরি। লঙ্কানদের বিপক্ষে অবশ্য এটি দ্বিতীয়। 

শান্তর সঙ্গে সমানতালে এগিয়ে চলেছেন মুশফিকও। তাদের দুজনের ব্যাটে ভর করে ভালো প্রতিরোধ গড়েছে সফরকারী দল। দুইশ ছাড়িয়েছে তাদের জুটি।    

দ্বিতীয় সেশনে কোনও উইকেট পড়তে দেননি শান্ত-মুশফিক

প্রথম সেশনে ৩ উইকেট পতনের পর থেকে দৃঢ়তা দেখিয়েছেন মুশফিকুর রহিম ও নাজমুল হোসেন শান্ত। চতুর্থ উইকেটে বড় জুটিতে দলকে এগিয়ে নিচ্ছেন তারা। দ্বিতীয় সেশনে কোনও উইকেট পড়তে দেননি। ১৩৭ রানে অবিচ্ছিন্ন থেকে চায়ের বিরতিতে গেছেন। লঙ্কান স্পিনাররা চেষ্টা করলেও তাদের কোনওভাবে প্রভাব ফেলতে দেননি মুশফিক-শান্ত। ফিফটির দেখা পেয়েছেন দু’জনেই। দ্বিতীয় সেশনে ৩০ ওভারে কোনও উইকেট না হারিয়ে বাংলাদেশ যোগ করেছে ৯২ রান। সব মিলে সংগ্রহ ৩ উইকেটে ১৮২ রান। মুশফিক অপরাজিত ৬৬ রানে, শান্ত ব্যাট করছেন ৭০ রানে। 

গলের উইকেট প্রথম দুই দিন বা তার বেশি ব্যাটিংয়ের জন্য ভালো। এখন দেখার অপেক্ষা বাংলাদেশ সেই সুবিধা কতটা কাজে লাগাতে পারে। 

শান্ত-মুশফিকের ফিফটিতে বাংলাদেশের প্রতিরোধ

সাদমান-মুমিনুলের দ্রুত আউটের পর থেকে প্রতিরোধ গড়ে খেলছেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুশফিকুর রহিম। প্রথম সেশনে অবিচ্ছিন্ন থেকে বড় জুটি গড়েছেন তারা। দ্বিতীয় সেশনের প্রথম ঘণ্টায় নির্বিঘ্নে কাটিয়েছেন তারা। শতরান ছাড়ানো জুটিতে ফিফটিও তুলে নিয়েছেন দু’জনে। শান্ত তুলে নিয়েছেন ষষ্ঠ টেস্ট ফিফটি। মুশফিক তুলে নিয়েছেন ২৮তম। তিনি অবশ্য ফিফটি প্লাস স্কোর পেয়েছেন গত বছরের আগস্টের পর। এই  

প্রথম সেশনে ৩ উইকেট হারিয়ে লাঞ্চ বিরতিতে বাংলাদেশ

গলে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে পঞ্চম ওভারেই এনামুল হক বিজয়ের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। প্রথম ঘণ্টায় তার পর বিপদ হতে দেননি সাদমান-মুমিনুল। পরের ঘণ্টায় অভিষিক্ত স্পিনার থারিন্দুর ঘূর্ণিতে সাদমান-মুমিনুল টানা দুই বলে ফিরলে কিছুটা চাপ বাড়ে। কিন্তু নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুশফিকুর রহিম জুটি দৃঢ়তা দেখিয়ে সেই চাপ সামাল দিয়ে প্রথম সেশন শেষ করেছেন। স্পিনারদের আর চড়াও হওয়ার সুযোগ দেননি তারা। লাঞ্চ বিরতিতে যাওয়ার আগে সফরকারীদের সংগ্রহ ছিল ২৮ ওভারে ৩ উইকেটে ৯০ রান। মুশফিক-শান্ত জুটি অবিচ্ছিন্ন ৪৫ রানে। মুশফিক ব্যাট করছেন ২০ রানে, শান্ত অপরাজিত আছেন ২৫ রানে। 

বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি সাদমানের প্রতিরোধ।দ্রুত ফিরলেন সাদমান, মুমিনুল

দ্রুত প্রথম উইকেট পতনের পর জুটি গড়ার চেষ্টায় ছিলেন মুমিনুল-সাদমান। ৩৪ রানের সেই জুটি ভেঙে দিয়েছেন অভিষেক টেস্ট খেলতে নামা স্পিনার থারিন্দু রত্নায়েকে। নিজের চতুর্থ ওভারে তার ঘূর্ণিতে ধনাঞ্জয়াকে সহজ ক্যাচ দেন বাঁহাতি ওপেনার। তাতে ৫৩ বলে ১৪ রানে ফেরেন তিনি। 

সাদমানের উইকেটটি পড়েছিল আগের ওভারের (১৫তম) শেষ বলে। এক ওভার বিরতি দিয়ে আবার আঘাত হানেন থারিন্দু। এবারা প্রথম বলে মুমিনুল হককে সেই ধনাঞ্জয়ার ক্যাচ বানান অভিষিক্ত স্পিনার। পেছনে সরে কাট করতে চেয়েছিলেন মুমিনুল। কিন্তু ৩৩ বলে ২৯ রানে কাটা পড়েছেন তিনি। 

পঞ্চম ওভারেই ফিরলেন এনামুল 

পঞ্চম ওভারেই লঙ্কান পেস বোলিংয়ে ওপেনার এনামুল হক বিজয়কে হারিয়েছে বাংলাদেশ। আসিথা ফার্নান্ডোর অফ স্টাম্পের যথেষ্ট বাইরের বল পা বাড়িয়ে ডিফেন্ড করতে গিয়েও নাগালে পাননি তিনি। বল সুুইং করায় সেটা ব্যাটের কানায় লেগে জমা পড়ে কিপারের গ্লাভসে। তাতে শূন্য রানে ফিরেছেন বিজয়।  

টস জিতে ব্যাটিং নিয়েছে বাংলাদেশ

আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন চক্র শুরু হচ্ছে আজ সোমবার। শুরুতেই প্রথম টেস্টে গলে মুখোমুখি বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা। সফরকারী বাংলাদেশ অবশ্য টস জিতেছে। শুরুতে ব্যাটিং নিয়েছে তারা। 

অবশ্য এই টেস্টে বৃষ্টি একটা প্রভাবক হয়ে উঠতে পারে। ভোরে বৃষ্টি হয়েছে। আকাশও এখন মেঘলা।   

টস জয়ের পর শান্ত বলেছেন, উইকেট শুষ্ক। শ্রীলঙ্কা অধিনায়ক ধনাঞ্জয়া বলেছেন, তিনিও টস জিতলে ব্যাটিং নিতেন। 

একাদশে কারা

জ্বরে আক্রান্ত মেহেদী হাসান মিরাজ শেষ পর্যন্ত ছিটকে গেছেন। তার জায়গায় এসেছেন অফস্পিনার নাঈম হাসান। বিশেষজ্ঞ স্পিনার হিসেবে তার সঙ্গে রয়েছেন তাইজুল। পেসার হিসেবে রয়েছেন নাহিদ রানা ও হাসান মাহমুদ। 

এদিকে, গলে এই টেস্ট দিয়েই বিদায় নিচ্ছেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ। তার বিদায়ী টেস্টে অভিষেক হয়েছে দু’জনের। একজন টপ অর্ডার ব্যাটার লাহিরু উদারা, আরেকজন সব্যসাচী স্পিনার থারিন্দু রত্নায়েকে।   

বাংলাদেশ একাদশ: নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), সাদমান ইসলাম, এনামুল হক, মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম, লিটন দাস, জাকের আলী, তাইজুল ইসলাম, নাহিদ রানা, হাসান মাহমুদ ও নাঈম হাসান।

শ্রীলঙ্কা একাদশ: পাথুম নিসাঙ্কা, লাহিরু উদারা, দিনেশ চান্ডিমাল, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ, কামিন্দু মেন্ডিস, ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা (অধিনায়ক), কুশল মেন্ডিস (উইকেটরক্ষক), মিলান রত্নায়েকে, থারিন্দু রত্নায়েকে, প্রবাধ জয়াসুরিয়া ও আসিথা ফার্নান্ডো।