গল টেস্টের প্রথম দিনে ৪৫ রানে তিন উইকেট হারানোর পর এক প্রান্তে নাজমুল হোসেন শান্তর দৃঢ়তা, অন্য প্রান্তে মুশফিকুর রহিমের অভিজ্ঞতার ছোঁয়াতে শ্রীলঙ্কার বুকে গড়ে উঠলো এক অপরাজেয় জুটি। দুজনই পেয়েছেন সেঞ্চুরির দেখা। তাদের এই ব্যাটিং ছিল যেন দুই প্রজন্মের কথোপকথন! গলের উইকেট, বৃষ্টি, প্রতিপক্ষ সব পেরিয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে এই দুই ব্যাটারের ব্যাটে ভর করে। শান্ত ১৩৬ রানে এবং মুশফিক ১০৫ রান নিয়ে অপরাজিত আছেন। ২৪৭ রানে অবিচ্ছিন্ন থাকা এই জুটি বুধবার দ্বিতীয় দিনে নতুন করে শুরু করবে। এদিন শান্তকে ক্রিজে থেকে প্রতিনিয়ত সাপোর্ট দেওয়া মুশফিক জানালেন ক্যারিয়ারের শেষ পর্যায়ে থেকে সব কিছুই স্পেশাল হয়ে ওঠে।
বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটে যত বড় জুটি আছে, সবখানেই আছেন মুশফিক। এর আগে দুটি ইনিংসে দুইশ’ রানের জুটি এসেছিল, সেখানেও সঙ্গী ছিলেন তিনি। আজ গল টেস্টে অধিনায়ক শান্তর সাথেও ২৪৭ রানের জুটি গড়ে অপরাজিত আছেন। শান্ত যখন সেঞ্চুরি ছুঁয়েছেন, তখন মুশফিককে দেখা গেছে উদযাপন করতে। তবে এটা নতুন কিছু না। ক্রিজে থাকা যেকোনও সতীর্থ তো কোনও মাইলফলকে পৌঁছালে, মুশফিকই যেন বেশি খুশি হন!
টেস্টর প্রথম দিনের খেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন মুশফিক। সেখানে শান্তর ইনিংসের ভূয়সী প্রশংসা করে তিনি বলেছেন, ‘শান্ত তো মাশাআল্লাহ অনেক দিন ধরেই ভালো খেলছে। টেস্টে ওর রেকর্ড ভালো, অধিনায়ক হিসেবেও তার রেকর্ড ভালো, ব্যাটসম্যান হিসেবেও ভালো। এটা বিশেষ কিছু না। আমার কাছে ওর কন্ট্রলড ইনিংসটা ভালো লেগেছে। এর আগে ক্যান্ডিতে সে সেঞ্চুরি করেছিল। এরপর এই সেঞ্চুরিটা... কন্ট্রোল করে খেলাটাই গুরুত্বপূর্ণ। এটা আমাদের পরের ব্যাটারম্যানদের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। কেউ বড় একটা অর্জন করলে এটা উদযাপন করতেই হয়। সিনিয়র ক্রিকেটার হিসেবে এই দায়িত্বটা আমার ওপর আরও বেশি।'
গলে খেলা মানেই মুশফিকের ব্যাটে রান। ২০১৩ সালে এখানেই পেয়েছিলেন ডাবল সেঞ্চুরি (২০০)। এরপর ২০১৭ সালে দুই ইনিংসে করেছেন ৮৫ আর ৩৪। আজ ১০৫ রানের ইনিংস খেলে আছেন অপরাজিত। আজকের ইনিংসটি কতটা স্পেশাল এমন প্রশ্নে মুশফিকের সোজাসাপ্টা উত্তর, ‘স্পেশাল কিছু না... আমি আমার ক্যারিয়ারের একদম শেষ পর্যায়ে। এখন সবকিছুই স্পেশাল। আমি চেষ্টা করি নিজের সর্বোচ্চটা দেওয়ার, শতভাগ চেষ্টা করে নিজের প্রস্তুতি নেওয়ার। সামনে যে সুযোগই আসে না কেন তা কাজে লাগানোর চেষ্টা করি। এটা অনেক সময় হয়, অনেক সময় হয় না।'
গল কতটা স্পেশাল মুশফিকের কাছে? তার উত্তরও দিয়েছেন তিনি, ‘গল স্পেশাল বলতে এখানে আপনি যখন বাংলাদেশের হয়ে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি করবেন এটা সব সময়ই স্পেশাল। আমাদের একটি জেনারেশনকে স্টেপ বাই স্টেপ উপরে নিয়ে যেতে হবে। ওটার পর নিশ্চিত ওরা বিশ্বাস করতে পেরেছে যে টেস্টে দুইশত করা যায়। তাই অবশ্যই এখন কেউ আড়াইশত করবে তিনশত করবে। সিনিয়র ক্রিকেটার হিসেবে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ।'