ডাবল সেঞ্চুরি না হলেও রেকর্ডবুকে মুশফিক

২০১৩ সালে গল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মুশফিকুর রহিমের ব্যাট থেকে আসে বাংলাদেশের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি। ২০২৫ সালে এসে একই ভেন্যুতে আবারও সেই কীর্তির পথে এগোচ্ছিলেন তিনি। আগের দিন সেঞ্চুরি তুলে নেওয়ার পর দ্বিতীয় দিন সাবলীল ব্যাটিংয়ে পৌঁছে যান দেড়শর ঘরে। কিন্তু হঠাৎ নেমে আসা বৃষ্টি ছন্দ কাটায়। বিরতির পর ফিরে এসে আর নিজেকে টানতে পারলেন না। ১৬৩ রানে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরলেন সাজঘরে। ডাবল সেঞ্চুরির আক্ষেপ থাকলেও রেকর্ডবুকে নিজের নামটা আরও উজ্জ্বল করে গেলেন মুশফিক।  

বুধবার যথাসময়ে খেলা শুরু হলেও লাঞ্চ বিরতির পর বৃষ্টির কারণে প্রায় আড়াই ঘণ্টার মতো খেলা বন্ধ ছিল। খেলা শুরুর হওয়ার পর লিটন দাস ও মুশফিক মিলে দেখেশুনে খেলছিলেন। আসিথা ফার্নান্ডোর ১৩৯তম ওভারে ‘আম্পায়ার্স কলে’ বেঁচে গিয়েছিলেন মুশফিক। পরে অবশ্য সেই আম্পায়ার্স কলেই সাজঘরে ফিরতে হয়েছে তাকে। তার আগে ঝলমলে ইনিংস খেলার পথে অ্যাডাম গিলক্রিস্টকে পেছনে ফেলেছেন তিনি।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যারা উইকেটকিপার, কিন্তু কখনোই বল করেননি, তাদের মধ্যে সর্বোচ্চ রানের মালিক এখন মুশফিক। সব ফরম্যাট মিলে তার রান ১৫ হাজার ৪৯১, ব্যাট হাতে ধারাবাহিকতা আর দীর্ঘ ক্যারিয়ারে গড়া সংগ্রহে তিনি পেছনে ফেলেছেন এক সময়ের দাপুটে উইকেটকিপার-ব্যাটার গিলক্রিস্টকে (১৫৪৬১)। 

বুধবার গল টেস্টের দ্বিতীয় দিনে ৩ উইকেটে ২৯২ রান নিয়ে খেলা শুরু করেছিল বাংলাদেশ। শান্ত অপরাজিত ছিলেন ১৩৬ রানে। আসিথার করা দিনের সপ্তম ওভারের প্রথম বলে ক্যাচ তুলে দেন অ্যাঞ্জোলো ম্যাথুজের হাতে। আর তাতেই লঙ্কানদের বিপক্ষে সর্বোচ্চ রানের জুটিটি (২৬৪) ভেঙে যায়। এটি দুজনের প্রথম তিন অঙ্কের জুটি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চতুর্থ উইকেট জুটিতে এটাই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ। তবে সব মিলিয়ে দুই রানের জন্য চতুর্থ উইকেটে বাংলাদেশর সর্বোচ্চ জুটির রেকর্ড ভাঙতে পারেননি তারা। ২০১৮ সালে মিরপুর টেস্টে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মুমিনুল হক আর মুশফিকের ২৬৬ রানের জুটিটাই চতুর্থ উইকেটে সর্বোচ্চ হয়ে রইলো।

সকালে নিজের নামের পাশে আর ১৭ রান যোগ করে ১৪৮ রানে থেমেছেন শান্ত। আগের দিন দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের ধারাবাহিকতা ধরে রাখলেও ডাবল সেঞ্চুরির পথে শেষ পর্যন্ত থেমে যেতে হয় এই বাঁহাতিকে। তার আউটের পর মুশফিক ও লিটন মিলে গড়েন আরেকটি মূল্যবান জুটি। দুই অভিজ্ঞ ব্যাটার মিলে চালিয়ে যান ইতিবাচক মেজাজে খেলা। মুশফিকের বিদায়ের ঠিক পরের ওভারেই সাজঘরে ফিরতে হয় লিটনকে, যিনি হয়ে যান ‘নার্ভাস নাইন্টিজ’-এর শিকার। ১২৩ বলে ৯০ রানের ইনিংসে থাকে ওয়ানডে মেজাজ! শেষ পর্যন্ত রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে থেমে যেতে হয় সেঞ্চুরি থেকে মাত্র ১০ রান দূরে থাকতে।

একদিকে শান্ত-মুশফিকের সেঞ্চুরি থেকে ডাবল মিস, অন্যদিকে লিটনের নব্বইয়ের আক্ষেপ। তবে ব্যক্তিগত আক্ষেপের মাঝেও দল হিসেবে বাংলাদেশ বেশ স্বস্তিদায়ক অবস্থানে। পাঁচশ রানের কাছাকাছি পৌঁছেছে বাংলাদেশ। যদিও শেষ দিকে কিছু দ্রুত উইকেট হারানো একটু চিন্তার কারণ, তবুও প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের দাপট স্পষ্ট। এখন সব চোখ বাংলাদেশের বোলিং ইউনিটের দিকে। স্পিন সহায়ক গলের উইকেট কতটা কাজে লাগাতে পারে সেটাই দেখার!