সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংসে ৫৭ ওভারে ১৭৭/৩ (মুশফিক ২২*, শান্ত ৫৬*; সাদমান ৭৬, এনামুল ৪, মুমিনুল ১৪)
শ্রীলঙ্কা প্রথম ইনিংসে ১৩১.২ ওভারে ৪৮৫/১০ (প্রবাথ ১১*; উদারা ২৯, চান্ডিমাল ৫৪, ম্যাথুজ ৩৯, নিসাঙ্কা ১৮৭, ডি সিলভা ১৯, কুশল ৫, মিলান ৩৯, কামিন্দু ৮৭, থারিন্দু ০, আসিথা ৪)
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে ১৫৩.৪ ওভারে ৪৯৫/১০ (হাসান ৭*; তাইজুল ৭, জাকের ৮, নাঈম ১০, লিটন ৯০, এনামুল ০, সাদমান ১৪, মুমিনুল ২৯, শান্ত ১৪৮, মুশফিক ১৬৩, নাহিদ ০)
৪ উইকেটে ৩৬৮ রানে চতুর্থ দিনের খেলা শুরু করে শ্রীলঙ্কা। লিড নেওয়ার পথে ছিল তারা। কিন্তু নাঈম হাসানের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ১০ রানে পিছিয়ে থেকে শেষ হয় তাদের প্রথম ইনিংস। বাংলাদেশি স্পিনার ৫ উইকেট তুলে নিয়ে ৪৮৫ রানে অলআউট করেন শ্রীলঙ্কাকে।
৪৯৫ রান করা বাংলাদেশ ১০ রানের লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে খেলতে নামে। এনামুল হক বিজয় (৪) আরেকবার ব্যর্থ হলেও সাদমান ইসলাম ও নাজমুল হোসেন শান্তর ফিফটিতে দিনটা নিজেদের করে নিয়েছে বাংলাদেশ।
মুমিনুল হক (১৪) দলীয় ৬০ রানে বিদায় নেওয়ার পর সাদমান ও শান্ত দৃঢ় ব্যাটিং করেন। তাদের জুটি ছিল ৬৮ রানের। সাদমান ৭৬ রানে থামেন। তারপর মুশফিকুর রহিমকে নিয়ে শান্ত দিন পার করেন। দুজনের জুটি ৪৯ রানের। ১১৩ বলে ৫৬ রানে শান্ত ও ৪৩ বলে ২২ রানে অপরাজিত আছেন মুশফিক।
৩ উইকেটে ১৭৭ রানে শেষ দিন খেলতে নামবে বাংলাদেশ। তাদের লিড বেড়ে এখন ১৮৭ রানের।
শান্তর হাফ সেঞ্চুরি
প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান নাজমুল হোসেন শান্ত। দ্বিতীয় ইনিংসেও আরেকটি পঞ্চাশোর্ধ্ব ইনিংস খেললেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। ১০৬ বলে ৫ চারে হাফ সেঞ্চুরি করেছেন তিনি।
৫৬তম ওভারের তৃতীয় বলে থারিন্দু রত্নায়েকেকে চার মেরে পঞ্চা্শ ছোঁন শান্ত। পরের বলে মেরেছেন আরেকটি চার।
৭৬ রানে আউট সাদমান
নাজমুল হোসেন শান্ত ও সাদমান ইসলামের পঞ্চাশ ছাড়ানো জুটিতে বাংলাদেশের লিড ১০০ ছাড়ায়। সেঞ্চুরির পথে ছিলেন সাদমান। তবে পারলেন না। ৭৬ রান করে মিলান রত্নায়েকের শিকার হলেন বাংলাদেশ ওপেনার।
সাদমানের ১২৬ বলের ইনিংসে ছিল ৭ চার। দলীয় ১২৮ রানে তিন উইকেট হারালো বাংলাদেশ। শান্ত-সাদমান জুটি ৬৮ রান তুলেছে।
চায়ের বিরতিতে থেকে ফিরে সাদমানের ফিফটি
চায়ের বিরতিতে থেকে ফিরে দ্রুত ফিফটির দেখা পেয়েছেন সাদমান। যা ছিল তার টেস্ট ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ ফিফটি। সাদমান পঞ্চাশ পূরণ করেছেন ৭০ বলে। তাতে ছিল ৬টি চার।
৭৫ রানের লিড নিয়ে চায়ের বিরতিতে বাংলাদেশ
গল টেস্টে চতুর্থ দিনে এসে জমে উঠেছে খেলা। শ্রীলঙ্কাকে প্রথম ইনিংসে ৪৮৫ রানে অলআউটের পর বাংলাদেশ লিড বাড়িয়ে নিচ্ছে। যদিও চায়ের বিরতিতে যাওয়ার আগে পতন হয়েছে দ্বিতীয় উইকেটের। এই সেশনে মোট উইকেট পড়েছে ৬টি। বোঝা যাচ্ছে সময় যত গড়াবে পাল্টাবে উইকেটের চিত্র।
বাংলাদেশ ১০ রানের লিড নিয়ে ব্যাট করতে নামার পর ওপেনিং জুটিতে প্রত্যাশা মেটাতে পারেননি ওপেনার এনামুল। ফিরেছেন ৪ রানে। মুমিনুলও দ্রুত বিদায় নিয়েছেন। চায়ের বিরতিতে যাওয়ার আগে আউট হয়েছেন ১৪ রানে। শুধু প্রান্ত আগলে প্রতিরোধ গড়ে খেলেছেন ওপেনার সাদমান ইসলাম। তিনি ব্যাট করছেন ৪৪ রানে। সঙ্গে রয়েছেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। দ্বিতীয় সেশন শেষে বাংলাদেশের স্কোর ২ উইকেটে ৬৫ রান। তাদের লিড ৭৫ রানের।
আশা জাগিয়েও দ্রুত ফিরলেন মুমিনুল
এনামুলের বিদায়ে শুরুর জুটি ২৪ রানে ভাঙার পর ভালো কিছুর ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন মুমিনুল। সাদমানকে সঙ্গে নিয়ে জুটি গড়ার চেষ্টায় ছিলেন তিনি। ৩৬ রানের সেই জুটি ভাঙে মুমিনুলের বিদায়ে। থারিন্দু রত্নায়েকের বলে সুইপ করতে গিয়ে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। তাতে ৬৪ রানে পড়ে বাংলাদেশের দ্বিতীয় উইকেট।
আবারও ব্যর্থ এনামুল
১০ রানের লিডে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে আবারও ব্যর্থ ওপেনিং জুটি। প্রত্যাশা মেটাতে পারেননি ওপেনার এনামুল হক। প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও দ্রুত সাজঘরে ফিরেছেন তিনি। ব্যক্তিগত ৪ রানে প্রবাথ জয়াসুরিয়ার বলে খোঁচা মারতে গিয়ে গ্লাভসবন্দি হয়েছেন। তাতে ২৪ রানে পড়েছে বাংলাদেশের প্রথম উইকেট। প্রথম ইনিংসে এনামুল ফিরেছেন শূন্য রানে।
নাঈমের ৫ উইকেট শিকারে ৪৮৫ রানে শেষ শ্রীলঙ্কার ইনিংস
লাঞ্চের আগে শ্রীলঙ্কাকে লিড নেওয়ার স্বপ্ন দেখাচ্ছিলেন কামিন্দু মেন্ডিস ও মিলান রত্নায়েকে। লাঞ্চ থেকে ফিরেই লঙ্কানদের সেই স্বপ্ন চূর্ণ করে দেন হাসান মাহমুদ ও নাঈম হাসান। শুরুতে মিলানকে ফিরিয়ে ৮৪ রানের জুটি ভাঙেন হাসান। তার পর পথের কাঁটা হয়ে থাকা কামিন্দুকে ৮৭ রানে থামান নাঈম। তাতেই লঙ্কানদের প্রতিরোধ মুহূর্তে দুর্বল হয়ে পড়ে। একই ওভারে নাঈম থারিন্দুকেও বিদায় দিলে ১০ বলের মধে ৩ উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। তার পর প্রবাথ-আসিথা ব্যবধান আরও কমিয়ে নেওয়ার জন্য মেরে খেলার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু আসিথাকে বোল্ড করে শ্রীলঙ্কাকে ৪৮৫ রানে থামিয়েছেন নাঈম। তাতে ১০ রানের লিড পেয়েছে বাংলাদেশ দল।
নাঈম টেস্ট ক্যারিয়ারে চতুর্থবারের মতো পাঁচ উইকেট শিকার করেছেন। ১২১ রানে নিয়েছেন ৫ উইকেট। হাসান ৭৪ রানে নিয়েছেন ৩টি। একটি করে নিয়েছেন তাইজুল ইসলাম ও মুমিনুল হক।
হাসানের পরের ওভারে আঘাত হানেন নাঈম। তার দারুণ ঘূর্ণিতে বল ব্যাটের কানায় লেগে জমা পড়ে লিটন দাসের গ্লাভসে। তাতে ৮৭ রানে থেমেছেন কামিন্দু। একই ওভারের শেষ বলে নাঈমের শিকার হন নতুন ব্যাটার থারিন্দু। তাকে বোল্ড করলে ৯ উইকেট হারিয়ে ফেলে শ্রীলঙ্কা।
লাঞ্চ থেকে ফিরে ৮৪ রানের জুটি ভাঙলেন হাসান
সপ্তম উইকেটে প্রতিরোধ গড়ে বাংলাদেশের হতাশা বাড়াচ্ছিলেন কামিন্দু মেন্ডিস ও মিলান রত্নায়েকে। ব্যবধান কমিয়ে নিয়েছে মূলত এই জুটি। মিলান রত্নায়েকেকে বোল্ড করে ৮৪ রানের এই জুটি ভেঙেছেন হাসান মাহমুদ। মিলান ৩৮ রানে আউট হয়েছেন।
হাসানের ডেলিভারিটি আহামরি ছিল না। শর্ট লেংথের অফ স্টাম্পের বাইরের বল টেনে খেলতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনেন মিলান।
৩০ রানে পিছিয়ে থেকে লাঞ্চে শ্রীলঙ্কা
চতুর্থ দিনের প্রথম সেশনে লঙ্কানদের প্রতিরোধ দুর্বল করার কৌশলে শুরুতে সফলই ছিল বাংলাদেশ। দ্রুত সময়ে ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা ও কুশল মেন্ডিসের উইকেট তুলে নেন নাঈম হাসান ও হাসান মাহমুদ। তার পর অবশ্য কামিন্দু আর রত্নায়েকের প্রতিরোধে এগিয়ে চলেছে শ্রীলঙ্কা। ব্যবধানও কমিয়ে ফেলেছে। লাঞ্চে যাওয়ার আগে শ্রীলঙ্কার স্কোর ছিল ৬ উইকেটে ৪৬৫। স্বাগতিকরা এখনও ৩০ রানে পিছিয়ে।
অবশ্য এই জুটি ভাঙার সুযোগও এসেছিল। তাহলে লঙ্কানদের আরও বিপদে ফেলা যেত। মিলান রত্নায়েকের ক্যাচ ছেড়েছেন তাইজুল। তখন তিনি ৭ রানে ব্যাট করছিলেন। মিলান ৩৮ রানে অপরাজিত। ব্যাট হাতে দিশা দেখানো কামিন্দু পঞ্চম ফিফটি তুলে অপরাজিত ৮৩ রানে। দু’জনে অবিচ্ছিন্ন ৭৯ রানে।
ক্যাচ ছেড়েছেন তাইজুল
দ্রুত দুই উইকেট নিয়ে লঙ্কানদের চাপে ফেলার মঞ্চ গড়লেও প্রান্ত আগলে লড়ে যাচ্ছেন কামিন্দু মেন্ডিস। মিলান রত্নায়েকেকে নিয়ে জুটি গড়ে খেলছেন। তুলে নিয়েছেন ক্যারিয়ারের পঞ্চম ফিফটি। কামিন্দুর ব্যাটে ভর করেই ব্যবধান কমাচ্ছে শ্রীলঙ্কা। পার করেছে চারশ রান। অবশ্য ১০৯.৬ ওভারে লঙ্কানদের আরও বিপদে ফেলার সুযোগ তৈরি হয়েছিল। মিলান রত্নায়েকে ফিরতি ক্যাচ দিলেও মাথার ওপর দিয়ে যাওয়া বল হাতে জমাতে পারেননি তাইজুল! মিলান তখন ৭ রানে ব্যাট করছিলেন।
দ্রুত ফিরলেন কুশল মেন্ডিসও
চতুর্থ দিনের সকালে দ্রুত উইকেট নেওয়ার লক্ষ্যে সফল বাংলাদেশ। নাঈমের পর দ্রুত আঘাত হেনেছেন পেসার হাসান মাহমুদও। লেগ স্টাম্পের বাইরে বল করে নতুন ব্যাটার কুশল মেন্ডিসকে খেলতে প্রলুব্ধ করেছিলেন। সেই বল খেলে লিটনের ক্যাচে পরিণত হন কুশল। লঙ্কান ব্যাটার ফেরেন ৫ রানে। দ্রুত ২ উইকেট তুলে লঙ্কানদের চাপে রাখতে পেরেছে সফরকারীরা।
চতুর্থ দিনের শুরুতে উইকেট নেওয়ার লক্ষ্যে সফল হয়েছে বাংলাদেশ। দিনের দ্বিতীয় ওভারে নাঈমের লেগ স্টাম্পের বাইরে দেওয়া ঘূর্ণি বলটি খেলতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনেন ধনাঞ্জয়া। বল তার ব্যাট ছুঁয়ে জমা পড়ে লিটন দাসের গ্লাভসে। তাতে ১৯ রানে কাটা পড়েন ধনাঞ্জয়া।
শ্রীলঙ্কাকে দ্রুত থামিয়ে দেওয়ার আশায় চতুর্থ দিন শুরু বাংলাদেশের
বাংলাদেশের ৪৯৫ রানের প্রথম ইনিংসের জবাবে পাল্টা জবাব দিচ্ছে শ্রীলঙ্কাও। ১২৭ রানে পিছিয়ে থেকে চতুর্থ দিনের খেলা শুরু করেছে স্বাগতিকরা। বাংলাদেশের লক্ষ্য হচ্ছে তাদের দ্রুত গুটিয়ে ভালো লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করা।
গতকাল লাহিরু উদারা ও পাথুম নিসাঙ্কার ৪৭ রানের ওপেনিং জুটি ভেঙে ভালো শুরুর ইঙ্গিত দিয়েছিল বাংলাদেশ। উদারা ২৯ রানে ফিরলেও শ্রীলঙ্কা ঘুরে দাঁড়ায় নিসাঙ্কা ও দিনেশ চান্ডিমালের ব্যাটে। দুজনের ১৫৭ রানের জুটি ভাঙেন নাঈম। ৫৪ রানে চান্ডিমাল ফেরার পর নিসাঙ্কার সেঞ্চুরিতে দ্বিতীয় সেশনও নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখে লঙ্কানরা। শেষ টেস্টে ম্যাথুজ লম্বা ইনিংসের আভাস দিলেও ব্যর্থ হন। ৩৯ রানে তিনি মুমিনুলের শিকার হন। ভাঙে নিসাঙ্কার সঙ্গে তার ৮৯ রানের জুটি। বিপরীতে শুরু থেকে লঙ্কানদের দিশা দেখাতে থাকেন মূলত ওপেনার পাথুম নিসাঙ্কা। তার ব্যাটেই পুরোটা দিন বাংলাদেশের ওপর ছড়ি ঘুরিয়েছে স্বাগতিকরা।
বাংলাদেশ দ্বিতীয় নতুন বল হাতে নিতেই বিপজ্জনক নিসাঙ্কাকে ১৮৭ রানে বোল্ড করেন হাসান মাহমুদ। বাকি সময় ইনিংস সামলান ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা ও কামিন্দু মেন্ডিস।
৪ উইকেটে ৩৬৮ রান নিয়ে তারা চতুর্থ দিন শুরু করেছে। ধনাঞ্জয়া ১৭ ও কামিন্দু ৩৭ রানে অপরাজিত আছেন।