সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকে প্রাপ্য প্রাইজমানি না পাওয়ায় অনেক ঘটনা ঘটে গেছে ওমানের। অবশেষে সেই প্রাইজমানি বণ্টনের ঘোষণা দিয়েছে ওমান ক্রিকেট। বিলম্বের কারণ হিসেবে তারা দাবি করেছে, প্রক্রিয়াগত ঝামেলার কথা।
ওমান ক্রিকেট বিবৃতিতে জানিয়েছে, খেলোয়াড় ও সাপোর্ট স্টাফদের মধ্যে প্রায় ২ লাখ ২৫ হাজার মার্কিন ডলার জুলাইয়ের মধ্যে বিতরণ করা হবে।
প্রাইজমানি নিয়ে ঝামেলার কথা এই মাসের শুরুতে জানায় ক্রিকইনফো। তাদের প্রতিবেদনের মাধ্য জানা যায়, খেলোয়াড়রা সেই টুর্নামেন্টের অর্থ এখনও পাননি। অথচ টুর্নামেন্ট শেষ হয়েছে বছর খানেক হয়েছে।
অংশ নেওয়া বোর্ডগুলোর বাধ্যবাধকতা থাকে যে, আইসিসি ইভেন্ট থেকে অর্থ প্রাপ্তির ২১ দিনের মধ্যেই সেই টাকা খেলোয়াড়দের মধ্যে বিতরণ করতে হবে। আইসিসি এটা নিশ্চিত করেছে, যথাসময়েই তারা সেই অর্থ ওমানকে দিয়ে দিয়েছে। কিন্তু ওমান ক্রিকেটের দাবি সব কিছু বিলম্ব হয়েছে প্রক্রিয়াগত কারণে।
গত অক্টোবরেই বিষয়টা নিয়ে একরকম বিদ্রোহ করে বসে ওমানের ক্রিকেটাররা। তারা ইমার্জিং টিমস এশিয়া কাপ বয়কটের সিদ্ধান্ত নেন। যার ফলস্বরূপ তাদের একদিন আগেই চলে যেতে বলা হয়। পরে ১৫ সদস্যের দলে থাকা ১১ জনের কেন্দ্রীয় চুক্তি স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং বেশিরভাগকেই ওমান ছেড়ে যেতে হয়। অন্যান্য পারস্য উপসাগরীয় দেশের মতো ওমানে বসবাসের বিষয়টি কর্মসংস্থানের সঙ্গে জড়িত। ফলে এই ক্ষেত্রে অনেক খেলোয়াড়ের চাকরি বাতিল হওয়ায় তাদের দেশ ছাড়তে বাধ্য করা হয়।
ওমান ক্রিকেট স্বীকার করেছে যে খেলোয়াড়েরা বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। কিন্তু তারা আরও জানায়, বোর্ডের কর্মকর্তারা বিশেষ করে চেয়ারম্যান পঙ্কজ খিমজি বারবার খেলোয়াড়দের আশ্বস্ত করেছিলেন যে, আইসিসি থেকে বরাদ্দ নিশ্চিত হওয়ার পর সম্পূর্ণ অর্থ পরিশোধ করা হবে। বিপরীতে খেলোয়াড়রা দাবি করেন, তখন পর্যন্ত চার মাস বিলম্ব হওয়ায় এই আশ্বাসগুলো আর বিশ্বাসযোগ্য মনে হচ্ছিল না।
বোর্ড অবশ্য সার্বিক উত্তপ্ত পরিস্থিতির জন্য খেলোয়াড়দেরই দোষারোপ করেছে। বোর্ডের কথা হচ্ছে, খেলতে অস্বীকৃতি জানিয়ে ওমানের আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তিকে ‘গুরুতর ঝুঁকিতে’ ফেলেছেন তারা।
বোর্ডের চেয়ারম্যান খিমজি বিবৃতিতে বলেছেন, ‘খেলোয়াড়দের বিষয়টি পরিষ্কারভাবে জানার অধিকার ছিল এবং আমরা সময়সীমা নিয়ে স্বচ্ছ ছিলাম।’
ওমানের খেলোয়াড়েরা কানাডা ও নেপালের খেলোয়াড়দের কাছ থেকে সুরাহার পথ সম্পর্কে জানতে পেরে বিশ্ব ক্রিকেটারদের সংগঠন ডাব্লিউসিএ-এর থেকে সহায়তা চেয়েছিলেন। খিমজি অবশ্য ওই সংস্থার হস্তক্ষেপের সমালোচনা করে বলেন, আন্তর্জাতিক এই সংগঠন ‘খেলোয়াড়দের ভুল পথে পরিচালিত করেছে এবং অধিকার আদায়ের নামে তাদের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়াতে উৎসাহিত করেছে।’
ডাব্লিউসিএ-র প্রধান নির্বাহী টম মোফাট ক্রিকইনফোকে বলেছেন, ‘আমরা আনন্দিত যে ওমান ক্রিকেট খেলোয়াড়দের প্রাইজমানি পরিশোধে একটি সময়সীমা নির্ধারণ করেছে—যদিও আইসিসি থেকে অর্থ পাওয়ার প্রায় এক বছর পর এবং আইসিসি-র অংশগ্রহণ চুক্তির শর্ত অনুযায়ী খেলোয়াড়দের কাছে অর্থ পৌঁছানোর কথা ছিল ওই সময়েই।’