৮ উইকেটে ২২০ রানে প্রথম দিন শেষ করেছে বাংলাদেশ

বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে ৭১ ওভারে ২২০/৮ (এবাদত ৫*, তাইজুল ৯*, বিজয় ০, মুমিনুল ২১, শান্ত ৮, সাদমান ৪৬, লিটন ৩৪, মুশফিক ৩৫, মিরাজ ৩১, নাঈম ২৫)

কলম্বোয় সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে যে আশা নিয়ে বাংলাদেশ টস জিতে ব্যাটিং নিয়েছিল তাতে মোটেও সফল হয়নি শান্তর দল। প্রথম দিনটি শেষ করেছে হতাশায়। বৃষ্টি বিরতির আগে পড়ে মিলিয়ে ৪ উইকেট হারিয়ে শুরুর দিনেই সফরকারীরা ব্যাক ফুটে পড়ে গেছে। মূল আঘাতটা হেনেছেন অভিষিক্ত স্পিনার সোনাল দিনুশা। লিটন, মুশফিককে ফিরিয়ে প্রতিরোধ দুর্বল করেছেন তিনি। 

ভালো ইঙ্গিত দিয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি ওপেনার সাদমান ইসলাম (৪৬)। একই অবস্থা হয়েছে লিটন দাস (৩৪), মুশফিকুর রহিম (৩৫) ও মেহেদী হাসানেরও (৩১)। তাতে প্রথম ইনিংসে প্রথম দিনে ২০৮ রান তুলতেই ৮ উইকেট পড়েছে সফরকারীদের। বৃষ্টির কারণে পুরো ৯০ ওভারের জায়গায় হয়েছে ৭১ ওভার। শেষটাতেও আলোর স্বল্পতায় খেলা বন্ধ করতে হয়েছে। ক্রিজে আছেন এবাদত হোসেন ৫* ও তাইজুল ইসলাম ৯*। 

প্রথম দিনে লঙ্কানদের হয়ে দুটি করে উইকেট নিয়েছেন আসিথা ফার্নান্ডো, বিশ্ব ফার্নান্ডো ও সোনাল দিনুশা। একটি করে নিয়েছেন থারিন্দু রত্নায়েকে ও ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা।     

নাঈমের বিদায়ে পড়লো অষ্টম উইকেট

অভিজ্ঞরা ব্যর্থ হওয়ার দিনে শেষ দিকে প্রতিরোধ গড়ে লঙ্কানদের হতাশা বাড়াচ্ছিলেন নাঈম। তাইজুলকে সঙ্গে করে পার করেছেন দুইশ রান। কিন্তু তার প্রতিরোধ খুব বেশি বড় হতে দেননি পেসার আসিথা ফার্নান্ডো। শেষ বিকালে নাঈমকে বোল্ড করেছেন তিনি। নাঈম ফিরেছেন ২৫ রানে। 

দুইশ রানের আগেই ফিরলেন মিরাজ

মুশফিকের আউটের পর বাংলাদেশকে টেনে নিচ্ছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। নাঈমকে নিয়ে ৩৭ রান যোগ করেছিলেন। স্কোর দুইশ হওয়ার আগেই অযথা বাইরের বল খোঁচা মারতে গিয়ে কাটা পড়েন তিনি। বিশ্ব ফার্নান্ডোর অফস্টাম্পের বাইরের বল খেলতে গেলে সেটা ব্যাটের কানায় লেগে জমা পড়ে স্লিপ ফিল্ডারের কাছে। মিরাজ আউট হন ৩১ রানে।   

মুশফিকের বিদায়ে বিপদে বাংলাদেশ

চা বিরতির আগে একবার জীবন পেয়েছিলেন মুশফিকুর রহিম। কিন্তু বিরতির পর আর শেষ রক্ষা হয়নি তার। অযথা শট খেলতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনেন তিনি। দিনুশার বলে স্লগ সুইপ খেলতে গিয়ে ডিপ স্কয়ার লেগে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। তার বিদায়ে ষষ্ঠ উইকেট পড়ায় বিপদেই পড়েছে সফরকারীরা। মুশফিক ৭৫ বলে থেমেছেন ৩৫ রানে।

চা বিরতিতে বাংলাদেশের ১৪৪ রান

লাঞ্চ ব্রেকের পর বাংলাদেশ দ্রুত দুই উইকেট হারায়। তারপর বৃষ্টিতে দেড় ঘণ্টা খেলা বন্ধ ছিল। তারপর ফিরে মুশফিক-লিটন পঞ্চম উইকেটে ৬৭ রানের জুটি গড়েন। সোনাল দিনুশা এই জুটি ভাঙেন। মুশফিক ৩৪ ও মিরাজ রানের খাতা না খুলে অপরাজিত আছেন।

এই সেশনে ৭৩ রান এসেছে। চা বিরতিতে ৫ উইকেটে ১৪৪ রান বাংলাদেশের।

টেস্টে দিনুশার প্রথম শিকার লিটন

অভিষেক টেস্টে সোনাল দিনুশা পেয়ে গেলেন তার প্রথম উইকেট। লিটন দাসকে ফিরিয়ে ভেঙে দিলেন ৬৭ রানের জুটি। ৪৭.৫ ওভারে ১৪৩ রানে ৫ উইকেট হারালো বাংলাদেশ।

৫৬ বলে ২ চার ও ১ ছয়ে ৩৪ রান করেন লিটন। বল তার ব্যাট ছুঁয়ে কুশল মেন্ডিসের হাতে জমা পড়ে। প্রথমবার বল ধরতে গিয়ে তালগোল পাকান, পরেরবার ধরে ফেলেন।

বাংলাদেশের ১০০, মুশফিক-লিটন জুটির পঞ্চাশ

৩৬তম ওভারে আসিথা ফার্নান্ডোর তৃতীয় বলে সিঙ্গেল নেন লিটন দাস। তাতে বাংলাদেশের স্কোর ১০০ হয়েছে। তার সঙ্গে মুশফিকুর রহিমের জুটি পঞ্চাশ ছাড়িয়েছে।

বৃষ্টি শেষে খেলা শুরু

হঠাৎ করে নামা বৃষ্টি থামলেও ফের শুরু হয়েছিল। কিছুক্ষণ পর বৃষ্টি থেমেছে। পৌনে দুই ঘণ্টা পর খেলা শুরু হয়েছে ২টা ২৫ মিনিটে। ৮১ ওভারের খেলা হবে। চা বিরতি ৪-৩০ মিনিটে। মুশফিক ৭ ও লিটন ৮ রানে অপরাজিত আছেন। বাংলাদেশের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ৯০ রান।

কলম্বোয় ভারী বৃষ্টিতে বন্ধ খেলা

লাঞ্চের পর বাংলাদেশ দ্রুত ‍দুই উইকেট হারায়। তারপর ক্রিজে নেমেছেন লিটন দাস ও মুশফিকুর রহিম। দুজনের জুটি ১৪ রান যোগ করতেই বিরূপ আবহাওয়ার কারণে খেলা বন্ধ হয়ে গেছে। কলম্বো আকাশে ঘন কালো মেঘ, বৃষ্টির আভাস মিলতেই মাঠকর্মীরা ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন। ভারী বৃষ্টিতে লম্বা সময় বিরতির আভাস মিলছে। দুই দলের খেলোয়াড়রা ফিরে গেছেন ড্রেসিংরুমে। বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩৩.২ ওভারে ৪ উইকেটে ৯০ রান। মুশফিক ৭ ও লিটন ৮ রানে অপরাজিত আছেন।

লাঞ্চের পর শান্ত-সাদমান আউট

লাঞ্চের আগে অপরাজিত থাকা দুই ব্যাটার সাদমান ইসলাম ও নাজমুল হোসেন শান্ত দ্বিতীয় সেশনের শুরুতে আউট হলেন। দুপুরের সেশনে দ্বিতীয় ওভারে বিশ্ব ফার্নান্ডোর বলে কুশল মেন্ডিসের ক্যাচ হন শান্ত। ফর্মে থাকা বাংলাদেশ অধিনায়ক মাত্র ৮ রানে থামেন। তাকে অনুসরণ করে পরের ওভারে বিদায় নেন সাদমান ইসলাম। পরের ওভারে থারিন্দু রত্নায়েকের শিকার হন সাদমান। ৯৩ বলে ৭ চারে ৪৬ রান করে ধনঞ্জয়া ডি সিলভার হাতে ধরা পড়েন তিনি। ২৯ ওভারে ৭৬ রানে চার উইকেট হারালো বাংলাদেশ। 

৭১ রানে লাঞ্চে বাংলাদেশ

সকালের সেশনে দুই উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ। কলম্বো টেস্টে শুরুতেই দুইবার জীবন পেয়েও সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি এনামুল হক বিজয়। ১০ বলে শূন্যতে বোল্ড হন আসিথা ফার্নান্ডোর বলে। ৫ রানে ভাঙে ওপেনিং জুটি।

মুমিনুল হক ও সাদমান ইসলাম সতর্ক ব্যাটিংয়ে এগোতে থাকেন। ধনঞ্জয়া ডি সিলভা বল হাতে নিয়ে প্রথম ডেলিভারিতে মুমিনুলকে ২১ রানে বদলি ফিল্ডার পবন রত্নায়েকের ক্যাচ বানান।

৪৩ রানে ২ উইকেট হারানোর পর বাংলাদেশকে স্বস্তিতে রেখেছেন সাদমান ও শান্ত। সফরকারীরা ৭১ রানে লাঞ্চে গেছে। ৭ রানে শান্ত ও ৪৩ রানে সাদমান অপরাজিত আছেন।

মুমিনুলকে আউট করেন ধনঞ্জয়া

বাংলাদেশের ৫০

২১তম ওভারে ধনঞ্জয়া ডি সিলভার পঞ্চম বলে সিঙ্গেল নেন নাজমুল হোসেন শান্ত। তাতে বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে জমা হয় ৫০ রান।

আউট মুমিনুল

ধনঞ্জয়া ডি সিলভা বল হাতে নিয়েই ভেঙে দিলেন মুমিনুল হক ও সাদমান ইসলামের ৩৮ রানের জুটি। ১৬.১ ওভারে ৪৩ রানে ২ উইকেট হারালো বাংলাদেশ।

শ্রীলঙ্কার স্পিনারের বলে বদলি ফিল্ডার পবন রত্নায়েকের ক্যাচ হন মুমিনুল। ২১ রান করেন তিনি। তার ৩৯ বলের ইনিংসে ছিল ৩ চার। চারে নেমেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত।

আসিথার আপিল

প্রথম ঘণ্টায় বাংলাদেশের ২৩ রান

কলম্বো টেস্টে বাংলাদেশ ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম ঘণ্টাতে ২৩ রান করেছে। পঞ্চম ওভারে এনামুল হক বিজয় আসিথা ফার্নান্ডোর শিকার হন। ডাক মারেন এই ওপেনার। তারপর মুমিনুল হক ও সাদমান ইসলাম সতর্ক ব্যাটিং করছেন।

১০ বল খেলে বোল্ড বিজয়

জীবন পেয়েও বিজয়ের ডাক

তিন বল খেলেই বিদায় নিতে পারতেন এনামুল হক বিজয়। তৃতীয় ওভারে প্রথম বলে জীবন পান তিনি। আসিথা ফার্নান্ডোর বলে আউটসাইড এজ হয়ে স্লিপে ছুটেছিল। কুশল মেন্ডিসের আঙুল ছুঁয়ে বল গ্লাভসে জমা হয়নি। পরের বলে একটুর জন্য ক্যাচ হননি বিজয়। তখনও রানের খাতা খোলেননি তিনি।

আসিথার পরের ওভারে ১০ বলে শূন্যতেই বোল্ড হন বিজয়। বল ইনসাইড এজ হয়ে স্টাম্পে লাগে। সিরিজে দ্বিতীয়বারের মতো প্রথম ইনিংসে ডাক মারলেন তিনি। ৪.২ ওভারে ৫ রানে ভাঙলো ওপেনিং জুটি।

অভিষেক হলো দিনুশার (ডানে)

টস জিতে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ, একাদশে মিরাজ

গল টেস্টের মতো কলম্বোতেও টস জিতেছে বাংলাদেশ, এবারও প্রথমে ব্যাটিং করবে তারা। শ্রীলঙ্কার অলরাউন্ডার সোনাল দিনুশার অভিষেক হচ্ছে। ছয় নম্বরে ব্যাট করবেন তিনি।

বাংলাদেশের একাদশে জাকের আলীকে সরিয়ে মেহেদী হাসান মিরাজকে নেওয়া হয়েছে। হাসান মাহমুদ চোট নিয়ে ছিটকে গেছেন।

শ্রীলঙ্কা: পাথুম নিসাঙ্কা, লাহিরু উদারা, দিনেশ চান্দিমাল, কামিন্দু মেন্ডিস, ধনঞ্জয়া ডি সিলভা (অধিনায়ক), কুশল মেন্ডিস (উইকেটরক্ষক), সোনাল দিনুশা, থারিন্দু রত্নায়েকে, প্রবাথ জয়াসুরিয়া, বিশ্ব ফার্নান্ডো, আসিথা ফার্নান্ডো।

বাংলাদেশ: সাদমান ইসলাম, এনামুল হক বিজয়, মুমিনুল হক,  নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), মুশফিকুর রহিম, লিটন দাস (উইকেটরক্ষক), মেহেদী হাসান মিরাজ, নাঈম হাসান, তাইজুল ইসলাম, নাহিদ রানা, ইবাদত হোসেন।

সাদমানের একটি শট

কলম্বোতে জয়ের খোঁজে বাংলাদেশ 

শ্রীলঙ্কা সফরের শুরুটা হয়েছিল গল টেস্ট দিয়ে। সেখানে দারুণ খেলেছে বাংলাদেশ। স্বাগতিকদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে লড়াই করে দাপটের সঙ্গে ড্র করেছে নাজমুল হোসেন শান্তর দল। রাত পোহালে শুরু হবে কলম্বো টেস্ট। আগের টেস্টের মতো এটিও আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ। কলম্বোর সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব মাঠে বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে দশটায় ম্যাচটি শুরু হবে। এই ম্যাচ জিতে সিরিজও নিশ্চিত করতে চায় বাংলাদেশ।

শ্রীলঙ্কার ঐতিহাসিক ভেন্যু সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব মাঠে বাংলাদেশ এর আগে তিনটি ম্যাচ খেলেছিল- ২০০১, ২০০২ এবং ২০০৭ সালে। ১৮ বছর পর বাংলাদেশ আবার এই ভেন্যুতে টেস্ট খেলতে যাচ্ছে। কলম্বোর এসএসসিতেই মোহাম্মদ আশরাফুল টেস্ট ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ ব্যাটার হিসেবে করেছিলেন সেঞ্চুরি। এখনও অক্ষত সেই রেকর্ড। আরও দুই ম্যাচ খেলে সবখানেই রান পেয়েছিলেন সাবেক অধিনায়ক। আশরাফুলের জন্য মাঠটা পয়মন্ত হলেও বাংলাদেশের জন্য উল্টো। যে তিন ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ, দুটিতে ইনিংস ব্যবধানে হেরেছে। এমনিতেও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২৭ টেস্টে মাত্র একটি জয় বাংলাদেশের। ড্র আছে ৬টি। গল টেস্টে ভালো পারফরম্যান্সের পর কলম্বোতে জয়ের খোঁজে বাংলাদেশ দল।