মিরাজের আউটে দিন শেষ, ইনিংস হারের শঙ্কায় বাংলাদেশ

তৃতীয় দিন শেষে- বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৮.৪ ওভারে ১১৫/৬ (লিটন ১৩*;  এনামুল ১৯, সাদমান ১২, মুমিনুল ১৫, শান্ত ১৯, মুশফিক ২৬, মিরাজ ১১), ৯৬ রানে পিছিয়ে।

শ্রীলঙ্কা প্রথম ইনিংসে ১১৬.৫ ওভারে ৪৫৮/১০ (বিশ্ব ২*; উদারা ৪০, চান্ডিমাল ৯৩, নিসাঙ্কা ১৫৮, ধনাঞ্জয়া ৭, প্রবাথ ১০, কামিন্দু ৩৩, দিনুশা ১১, থারিন্দু ১০, কুশল ৮৪, আসিথা ০) লিড ২১১।

বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে ৭৯.৩ ওভারে ২৪৭/১০ (রানা ০*: বিজয় ০, মুমিনুল ২১, শান্ত ৮, সাদমান ৪৬, লিটন ৩৪, মুশফিক ৩৫, মিরাজ ৩১, নাঈম ২৫, এবাদত ৮, তাইজুল ৩৩১)

থারিন্দু রত্নায়েকে জোরালো এলবিডব্লুর আবেদন। আম্পায়ার আঙুল তোলেননি। বেশ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে রিভিউ নিতে বললেন শ্রীলঙ্কান স্পিনার। ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা আস্থা রেখে টিভি আম্পায়ারের সাহায্য চাইলেন। অনফিল্ড আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত বদলে গেলো। মিরাজ হাঁটা ধরলেন। তার সঙ্গে অন্যরাও। বাংলাদেশ যেন হাফ ছেড়ে বাঁচলো। ব্যাটিং ধসে এক রাতের জন্য বিরতি পড়লো।

মাত্র চার উইকেট হাতে নিয়ে চতুর্থ দিন খেলতে নামবে বাংলাদেশ। ৬ উইকেটে তাদের রান ১১৫। ইনিংস হারের শঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। ইনিংস হার ঠেকাতে এখনও ৯৬ রান করতে হবে বাংলাদেশকে।

এর আগে শ্রীলঙ্কা কুশল মেন্ডিসের ৮৪ রানের সুবাদে প্রথম ইনিংসে ২১১ রানের লিড নেয়। তারপর প্রবাথ জয়াসুরিয়া ও ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার আঘাতে বিপাকে পড়ে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের ১০০ হওয়ার পর মুশফিক বোল্ড

দ্বিতীয় ইনিংসেও বাংলাদেশের ব্যাটাররা ব্যর্থ। ৩৪তম ওভারে প্রবাথ জয়সুরিয়ার বল বাঁক খেয়ে অফস্টাম্পে আঘাত করে। বাংলাদেশের রান তখন ১০০। ২৬ রান করেছে পঞ্চম ব্যাটার হিসেবে প্যাভিলিয়নে মুশফিক। তার ৫৩ বলের ইনিংসে ছিল ২ চার।

শান্তকেও ফেরালেন ধনাঞ্জয়া

মুমিনুল হককে ফিরিয়ে প্রতিরোধ ভাঙেন ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা। দ্রুততম সময়ে নাজমুল হোসেন শান্তকেও বিদায় দিয়ে বাংলাদেশকে বিপদে ফেলেছেন লঙ্কান অধিনায়ক। তার আর্ম বলে পুরোপুরি পরাস্ত হন বাংলাদেশ অধিনায়ক। বল প্যাডে লাগলে স্বাগতিকদের জোরালো আবেদনে সাড়া দেন আম্পায়ার। শান্ত রিভিউ নিয়েও রক্ষা পাননি। ৪৮ বল খেলা শান্ত আউট হন ১৯ রানে।  

মুমিনুলকে ফিরিয়ে প্রতিরোধ ভাঙলেন ধনাঞ্জয়া

তৃতীয় সেশনের শুরুতেই ওপেনার সাদমানকে হারানোর পর প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টায় ছিলেন মুমিনুল ও শান্ত। তৃতীয় উইকেটে ৩২ রান যোগ করেন তারা। নিজের প্রথম ওভারে বল করতে এসেই তাদের প্রতিরোধ ভেঙেছেন ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা। তার বাতাসে ভাসানো বল মুমিনুলকে এগিয়ে এসে খেলতে প্রলুব্ধ করে। ফলাফল বল ব্যাটের কানায় লেগে জমা পড়ে প্রথম স্লিপে। ৩৩ বল খেলা মুমিনুল বিদায় নেন ১৫ রানে।    

শেষ সেশনের শুরুতে ফিরলেন সাদমানও

চায়ের বিরতির আগে ফিরেছেন ওপেনার এনামুল হক। বিরতি থেকে ফেরে সেশনের তৃতীয় বলে কাটা পড়েন আরেক ওপেনার সাদমান ইসলামও। প্রবাথ জয়াসুরিয়ার বলে ড্রাইভ করতে গেলে তা ব্যাটের কানায় লেগে জমা পড়ে কিপারের গ্লাভসে। সাদমান ২৪ বলে ১২ রানে ফিরেছেন। 

চায়ের বিরতির আগে এনামুলের বিদায়

দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ভালো জবাব দিচ্ছিলেন দুই ওপেনার সাদমান ইসলাম ও এনামুল হক বিজয়। দ্রুত গতিতে রান তুলছিলেন তারা। একটু বেশি আগ্রাসী ছিলেন এনামুল। কিন্তু প্রথম ইনিংসে পুরোপুরি ব্যর্থ এনামুল দ্বিতীয় ইনিংসে ভালো ইঙ্গিত দিয়েও বেশি দূর যেতে পারেননি। চায়ের বিরতির আগে শেষ বলটি শর্ট লেংথে দিয়েছিলেন আসিথা। মেরে খেলার চেষ্টায় এনামুল পুল করতে গিয়েই বিপদ ডেকে আনেন। ক্যাচ দিয়েছেন ১৯ রানে। দ্বিতীয় সেশন শেষে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংসে সংগ্রহ ১ উইকেটে ৩১ রান। ব্যাট করছেন সাদমান ১২*। তারা এখনও পিছিয়ে ১৮০ রানে।  

৫ উইকেট নিয়েছেন তাইজুল।তাইজুলের ৫ উইকেট শিকারে ৪৫৮ রানে শেষ শ্রীলঙ্কার ইনিংস

নড়বড়ে শুরুর পর শ্রীলঙ্কাকে টেনে নিয়েছেন মূলত কুশল মেন্ডিস। তার ব্যাটে ভর করেই লিড দুইশ ছাড়ায় শ্রীলঙ্কার। ১১৬.১ ওভারে ৮৪ রানে রানআউটে কাটা পড়েন তিনি। তার পর শ্রীলঙ্কার গুটিয়ে যেতেও সময় লাগেনি। একই ওভারের পঞ্চম বলে তাইজুলের পঞ্চম শিকারে পরিণত হন আসিথা ফার্নান্ডো। দশম উইকেটের পতনে ৪৫৮ রানে শেষ হয় শ্রীলঙ্কার প্রথম ইনিংস। তারা লিড পেয়েছে ২১১ রানের। 

এটি ছিল তাইজুলের ১৭তম পাঁচ উইকেট শিকারের নজির। ৪২.৫ ওভারে রান খচর করেছেন ১৩১। তাছাড়া ৮৭ রানে তিনটি নিয়েছেন নাঈম হাসান। একটি নিয়েছেন নাহিদ রানা।  

যেভাবে গতকাল ব্যাটিং করেছিল তাতে লিড আরও বেশি হওয়ার কথা ছিল শ্রীলঙ্কার। সেখান থেকে তৃতীয় দিন প্রায় দুই সেশনে তাইজুলের দারুণ বোলিংয়ে ম্যাচে ফেরার সুযোগ পায় বাংলাদেশ। তার পরেও শ্রীলঙ্কা প্রায় দুই সেশন ব্যাট করেছে। ৩৮.৫ ওভার ব্যাট করে ৮ উইকেট হারিয়ে যোগ করেছে ১৬৮ রান। 

তাইজুলের চতুর্থ শিকার থারিন্দু

লেজের দিকে থারিন্দু রত্নায়েকে নিয়ে লিড বাড়িয়ে নিচ্ছিলেন কুশল মেন্ডিস। থারিন্দু বড় শট খেলার চেষ্টায় ছিলেন। সেই চেষ্টাতেই তাকে ফাঁদে ফেলে নিজের চতুর্থ শিকারে পরিণত করেছেন তাইজুল ইসলাম। মেরে খেলতে গিয়ে থারিন্দু আউট হয়েছেন ১০ রানে। 

কুশল মেন্ডিসের ফিফটি

লঙ্কানদের নড়বড়ে ব্যাটিংয়ের তৃতীয় দিনে হাল ধরে খেলছেন কুশল মেন্ডিস। তুলে নিয়েছেন ক্যারিয়ারের ২২তম ফিফটি। তিনি ফিফটির দেখা পেয়েছেন ৬০ বলে। 

লাঞ্চ থেকে ফিরে দিনুশাকে ফেরালেন নাঈম

লাঞ্চ থেকে ফিরে দ্বিতীয় ওভারেই আঘাত হেনেছেন নাঈম হাসান। পড়েছে লঙ্কানদের সপ্তম উইকেট। নাঈমের ফুল লেংথের ডেলিভারিতে বোল্ড হয়েছেন সোনাল দিনুশা। পুরোপুরি পরাস্ত লঙ্কান ব্যাটার ফিরেছেন ১১ রানে। এটি ছিল নাঈমের তৃতীয় শিকার।   

৪ উইকেট নিয়ে প্রথম সেশন বাংলাদেশের

শ্রীলঙ্কা ২ উইকেটে ২৯০ রান নিয়ে তৃতীয় দিন শুরু করেছিল। যেভাবে ব্যাট করছিল তাতে মনে হচ্ছিল লিড অনেক বড় হবে স্বাগতিকদের। কিন্তু বাংলাদেশের বোলাররা প্রথম সেশনে ৪ উইকেট তুলে শ্রীলঙ্কার লিড দুইশর নিচে রাখার স্বপ্ন দেখছে। স্বাগতিকরা ৬ উইকেটে ৪০১ রান তুলে লাঞ্চ বিরতিতে গেছে। ব্যাট করছেন কুশল মেন্ডিস ৪২* ও সোনাল দিনুশা ৮*। শ্রীলঙ্কার লিড এখন ১৫৪।   

দিনের নড়বড়ে শুরুর প্রথম ঘণ্টায় পাথুম নিসাঙ্কা (১৫৮) ও ধনাঞ্জয়া ডি সিলভাকে (৭) ফিরিয়ে লঙ্কানদের বড় লিডের পথে কাঁটা বিছিয়ে দেন তাইজুল ইসলাম। নাহিদ রানা প্রবাথ জয়াসুরিয়াকে (১০) ফিরিয়ে তুলে নেন আরও একটি উইকেট। তার পর কামিন্দু-কুশল মিলে প্রতিরোধ গড়লেও লাঞ্চের একটু আগে দারুণ এক ডেলিভারিতে তাদের প্রতিরোধ ভাঙেন নাঈম। বোল্ড হন কামিন্দু মেন্ডিস (৩৩)।  

কামিন্দুকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙলেন নাঈম

সকালে দ্রুত তিন উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া শ্রীলঙ্কাকে দিশা দেখাচ্ছিলেন কামিন্দু মেন্ডিস ও কুশল মেন্ডিস। ৪৯ রানের জুটি গড়েন তারা। তাদের ব্যাটে ভর করেই শ্রীলঙ্কার লিড একশ ছাড়িয়ে সমৃদ্ধ হতে থাকে। মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ানো এই জুটি ভেঙেছেন নাঈম হাসান। তার দারুণ ডেলিভারিতে বোল্ড হয়েছেন কামিন্দু। লঙ্কান ব্যাটার বিদায় নেন ৩৩ রানে।  

প্রবাথকে ফিরিয়ে অবশেষে উইকেট পেলেন নাহিদ

তাইজুল ইসলামের আঘাতে দ্রুত দুই উইকেট পতনের পর প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টায় ছিলেন কামিন্দু মেন্ডিস ও নাইটওয়াচম্যান প্রবাথ জয়াসুরিয়া। প্রবাথকে বিদায় দিয়ে লঙ্কানদের আরও চেপে ধরার মঞ্চ গড়েছেন পেসার নাহিদ রানা। প্রবাথ তৃতীয় স্লিপে মিরাজকে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন ১০ রানে।

প্রবাথকে ফিরিয়ে অবশেষে উইকেটের দেখা পেয়েছেন নাহিদ। প্রথম টেস্টে কোনও উইকেটই পাননি তিনি। 

শুরুতে আঘাত হানেন তাইজুল। নিসাঙ্কার পর তাইজুলের শিকার ধনাঞ্জয়া

পাথুম নিসাঙ্কাকে থামানোর পর নতুন ব্যাটার ধনাঞ্জয়া ডি সিলভাকেও বিদায় দিয়েছেন তাইজুল ইসলাম। দ্রুত সময়ে দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়েছে শ্রীলঙ্কা। 

তাইজুলের ঘূর্ণি বলে পরাস্ত হন লঙ্কান অধিনায়ক। বল প্যাডে আঘাত করলে বাংলাদেশের এলবিডাব্লিউর আবেদনে সাড়া দেন আম্পায়ার। ধনাঞ্জয়া রিভিউ নিলেও লাভ হয়নি। তিনি বিদায় নেন ৭ রানে। 

অবশেষে নিসাঙ্কাকে থামালেন তাইজুল

বাংলাদেশের ওপর ছড়ি ঘুরাতে থাকা নিসাঙ্কা তৃতীয় দিনের শুরুতেই পূরণ করেন ১৫০। তার পর প্রথম ইনিংসের স্কোর তিনশ পার করে শ্রীলঙ্কা। তাতে লিডও ছাড়িয়েছে পঞ্চাশ। কিন্তু ৮৩.১ ওভারে নিসাঙ্কাকে ১৫৮ রানে থামান তাইজুল। তার ঘূর্ণি বল এগিয়ে এসে খেলার চেষ্টা করলে শর্ট কভারে এনামুল হকের তালুবন্দি হন লঙ্কান ওপেনার। তার ২৫৪ বলের ইনিংসে ছিল ১৯টি চার।   

লঙ্কানদের দ্রুত বেঁধে ফেলার আশায় তৃতীয় দিন শুরু বাংলাদেশের

প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ ২৪৭ রানে অলআউটের পর শক্ত জবাব দিচ্ছে শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশের বোলারদের ওপর ছড়ি ঘুরিয়েছে স্বাগতিক ব্যাটাররা। ওপেনিংয়ে লাহিরু উদারার সঙ্গে পাথুম নিসাঙ্কা ৮৮ রানের জুটি গড়েন। তারপর দ্বিতীয় দিন পুরোটা সময় দিনেশ চান্ডিমালকে নিয়ে ২২ গজ শাসন করেছেন নিসাঙ্কা। শেষ বিকালে দুজনের ১৯৪ রানের জুটি ভাঙেন নাঈম হাসান।। ৯৩ রান করে আউট হন চান্ডিমাল।

তাদের যতদ্রুত সম্ভব বেঁধে ফেলার লক্ষ্যে তৃতীয় দিন খেলতে নেমেছে বাংলাদেশ। ক্রিজে আছেন নাইটওয়াচম্যান প্রবাথ জয়াসুরিয়া এবং দাপট দেখানো পাথুম নিসাঙ্কা।। শ্রীলঙ্কা ২ উইকেটে ২৯০ রান নিয়ে খেলতে নেমেছে। নিসাঙ্কা ১৪৬ ও প্রবাথ ৫ রানে অপরাজিত থেকে দিন শুরু করেছেন।