সংক্ষিপ্ত স্কোর: বাংলাদেশ ৩৫.৫ ওভারে ১৬৭/১০ (মোস্তাফিজ ০*, ইমন ১৩, শান্ত ২৩, লিটন ০, তানজিদ ৬২, হৃদয় ১, মিরাজ ০, তানজিম ১, তাসকিন ০, তানভীর ৫, জাকের ৫১)
শ্রীলঙ্কা ৪৯.২ ওভারে ২৪৪/১০ (আসিথা ১*; নিসাঙ্কা ০, মাদুশকা ৬, কামিন্দু ০, মেন্ডিস ৪৫, লিয়ানাগে ২৯, মিলান ২২, হাসারাঙ্গা ২২, থিকশানা ১, আসালাঙ্কা ১০৬, মালিঙ্গা ৫)
ফল: শ্রীলঙ্কা ৭৭ রানে জয়ী।
১০০ রানে ২ উইকেট, সেখান থেকে ১০৫ রানে পড়লো ৮ উইকেট। ওয়ানডে ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ ব্যাটিং ধসের শিকার হলো বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত জাকের আলীর হাফ সেঞ্চুরিতে হারের ব্যবধান একশর নিচে নামাতে পেরেছে তারা। কলম্বোতে ৭৭ রানে হেরে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ শুরু হলো মেহেদী হাসান মিরাজের দলের।
২৪৫ রানের লক্ষ্যে নেমে বাংলাদেশ শুরুটা দারুণ করে। প্রথম ওভারে পারভেজ হোসেন ইমন টানা দুটি চার মারেন। ওয়ানডেতে অভিষেক ম্যাচ রাঙাতে পারেননি বাংলাদেশ ওপেনার। ১৩ রান করে থামেন তিনি। ২৯ রানে ওপেনিং জুটি ভাঙার পর তানজিদের হাফ সেঞ্চুরি ও নাজমুল হোসেন শান্তর প্রতিরোধে বাংলাদেশ যেন জয় দেখতে পাচ্ছিল। ১ উইকেট হারিয়ে যে তাদের স্কোরবোর্ডে রান ৯৯!
চমৎকার অবস্থানে থাকার পর হঠাৎ করে এলোমেলো বাংলাদেশ, যার শুরুটা হয়েছিল শান্তর রান আউটে। দ্বিতীয় রান নিতে গিয়ে স্ট্রাইকিং প্রান্ত থেকে তিনি দুই সেন্টিমিটার দূরে থাকতে মিলান রত্নায়েকের থ্রোতে স্টাম্প ভাঙেন কুশল মেন্ডিস। ১০০ রানে পড়ে ২ উইকেট।
পরের ওভারের ঘটনা। ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা বল হাতে নিয়েই ধসের সূচনা করলেন। ১৮তম ওভারে লিটন দাস ও তানজিদকে ফেরান লঙ্কান স্পিনার। পরের ওভারে কামিন্দু মেন্ডিস ফেরান তাওহীদ হৃদয়কে।
১০৩ রানে দলের অর্ধেক ব্যাটারের বিদায়ের পর হাল ধরতে পারেননি মেহেদী হাসান মিরাজ। ওয়ানডের নতুন অধিনায়ক ডাক মারেন হাসারাঙ্গার বলে। পরের ওভারে কামিন্দু জোড়া আঘাতে ফেরান তানজিম হাসান সাকিব ও তাসকিন আহমেদকে।
মাত্র ৫ রানের ব্যবধানে দ্বিতীয় থেকে অষ্টম উইকেট হারায় বাংলাদেশ, যা ছেলেদের ওয়ানডেতে সবচেয়ে বড় ধস। ১০৫ রানে ৮ উইকেট হারানোর পর বাংলাদেশের পরাজয় সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু তানভীর ইসলাম ও মোস্তাফিজুর রহমানকে নিয়ে সেই অপেক্ষা একটু লম্বা করেন জাকের আলী। নবম উইকেটে ২০ রানের জুটি গড়েন তিনি। তারপর মোস্তাফিজকে নিয়ে শেষ উইকেটে ৪৪ বলে ৪২ রান তোলেন জাকের। করেন হাফ সেঞ্চুরি। ৬৪ বলে চারটি করে চার-ছয়ে ৫১ রান করে তিনি এলবিডব্লিউ হলে বাংলাদেশ থামে। ৩৫.৫ ওভারে ১৬৭ রানে অলআউট হয় সফরকারীরা। ১২ বল খেলেও রানের খাতা না খুলে অপরাজিত ছিলেন মোস্তাফিজ।
শ্রীলঙ্কার পক্ষে হাসারাঙ্গা ৭.৫ ওভারে মাত্র ১০ রান দিয়ে চার উইকেট নেন। কামিন্দু ৫ ওভারে ১৯ রান খরচায় পান ৩ উইকেট।
জাকেরের হাফ সেঞ্চুরি, শ্রীলঙ্কাকে পাঁচ রানের শাস্তি
প্রতিকূলতা জয় করে জাকের আলী দাঁড়িয়ে গেলেন ২২ গজে। ৩৫তম ওভারের চতুর্থ বলে চার মেরে করলেন হাফ সেঞ্চুরিও। ওয়ানডেতে তৃতীয়বার ফিফটি হলো তার। ৫৮ বলে চারটি করে চার ও ছয় মারেন তিনি। পরের ওভার শুরু করতে সময় নেওয়ায় পাঁচ রানের শাস্তি পায় শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে সেই রান যুক্ত হয়।
বাংলাদেশের লক্ষ্য একশর নিচে
১০৫ রানে ৮ উইকেট হারানোর পর বাংলাদেশ বড় ব্যবধানে পরাজয়ের শঙ্কায় পড়েছিল। তবে জাকের আলী ও তানভীর ইসলামের ২০ রানের জুটিতে প্রতিরোধ গড়ে তারা। তানভীর (৫) ইনিংস বড় করতে পারেননি। তবে জাকের তার আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে লক্ষ্য একশর নিচে নামালো। ৩৪ ওভারে ৯ উইকেটে ১৫৬ রান তাদের। লক্ষ্য ২৪৫ রানের।
ভয়ঙ্কর ধসে হার দেখছে বাংলাদেশ
দলীয় ১০০ রানে নাজমুল হোসেন শান্ত দ্বিতীয় ব্যাটার হিসেবে রান আউট হন। তারপর ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা বল হাতে নিতে ধস নামে। দুই ওভারে ৩ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন তিনি। তাকে দারুণ সঙ্গ দিচ্ছেন কামিন্দু মেন্ডিস। সবশেষ তানজিম হাসান সাকিবকে ফেরান এই স্পিনার। ২১তম ওভারে দ্বিতীয় বলে মাহিশ থিকশানার অবিশ্বাস্য ক্যাচ হলেন বাংলাদেশি ব্যাটার। ৬ বলে ১ রান করেন তিনি। ১০৪ রানে সাত উইকেট নেই সফরকারীদের। একই ওভারে তাসকিন আহমেদকে (০) ফিরিয়ে বাংলাদেশের অষ্টম উইকেট পান কামিন্দু। রিভিউ নিয়েও সফল হননি বাংলাদেশি ব্যাটার। ২০.৫ ওভারে ১০৫ রানে আউট উইকেট হারালো বাংলাদেশ।
৫ রানে ৭ উইকেট হারানোর পর জাকের আলী ও তানভীর ইসলাম ছোট্ট প্রতিরোধ গড়েন। মাহিশ থিকশানা তাদের ৪৭ বলে ২০ রানের জুটি ভেঙে দেন। তানভীর কট বিহাইন্ড হন ৫ রান করে। ১২৫ রানে নবম উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ।
মিরাজের ডাক, ৩ রানে পাঁচ উইকেট হারিয়ে বিপাকে বাংলাদেশ
ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার ঘূর্ণি জাদুর পর কামিন্দু মেন্ডিস তুলে নিলেন তাওহীদ হৃদয়ের উইকটে। চার বলে ১ রান করেন বাংলাদেশি ব্যাটার। ১৮.৩ ওভারে ১০৩ রানে ৫ উইকেট পড়ে বাংলাদেশের। দলের এই সংকটময় মুহূর্তে মাঠে নেমে হাল ধরতে পারেননি মেহেদী হাসান মিরাজ। অধিনায়ক হিসেবে অভিষেক ম্যাচে ২ বল খেলে ডাক মারলেন তিনি। হাসারাঙ্গা তার পরের ওভারের প্রথম বলে তাকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন। রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি মিরাজ। ১ উইকেটে ১০০ রান করা বাংলাদেশ ১০৩ রানে হারালো ষষ্ঠ উইকেট। ৩ রানের মধ্যে পাঁচ ব্যাটারকে হারিয়ে বিপাকে সফরকারীরা।
হাসারাঙ্গার শততম শিকার লিটন, ফেরালেন তানজিদকেও
১ উইকেট হারিয়ে ৯৯ রান করা বাংলাদেশ হঠাৎ করে এলোমেলো। নাজমুল হোসেন শান্ত দলকে একশ রান এনে দিয়ে দ্বিতীয় রান নিতে গিয়ে রানআউট হলেন। দারুণ শুরুর পর বড় হোঁচটই খেলো বাংলাদেশ। এরপর ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা ১৮তম ওভারে বল হাতে নিয়ে এলোমেলো করে দিলেন সফরকারীদের। তিনি ওই ওভারে ২ রান দিয়ে দুটি উইকেট নিয়েছেন।
লিটন দাস চার বল খেলে ডাক মেরেছেন। ১৮তম ওভারের দ্বিতীয় বলে হাসারাঙ্গার এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন তিনি। নিজের দ্বিতীয় বলেই উইকেট পেয়েছেন এই স্পিনার, এটি তার শততম ওয়ানডে উইকেট। অবশ্য লিটনকে ফেরাতে রিভিউ নিতে হয়েছে স্বাগতিকদের। ১০১ রানে তৃতীয় উইকেট পড়ে বাংলাদেশের। দুই বল পড় তানজিদ হাসান তামিমকে ফেরান হাসারাঙ্গা। মিড অফে জানিথ লিয়ানাগে চমৎকার ক্যাচ নেন। ১০২ রানে চার উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ৬১ বলে ৯ চার ও ১ ছয়ে ৬২ রান করেন তানজিদ।
বাংলাদেশের সেঞ্চুরির পর শান্তর বিদায়
অপ্রয়োজনীয় রান নিতে গিয়ে নিজের উইকেট হারালেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ১৭তম ওভারে সিঙ্গেল নেওয়ার দ্বিতীয় রানটি নিতে গিয়ে স্ট্রাইকিং প্রান্তে রান আউট হন তিনি। ডিপ মিডউইকেট থেকে মিলান রত্নায়েকের থ্রোতে কুশল মেন্ডিস স্টাম্প ভাঙেন। ১৬.৩ ওভারে ১০০ রানে ২ উইকেট হারালো বাংলাদেশ।
২৬ বলে ২ চারে ২৩ রান করেন শান্ত। তানজিদ হাসান তামিমের সঙ্গে তার জুটি ছিল ৭১ রানের।
তানজিদের হাফ সেঞ্চুরি
১৫তম ওভারের শেষ বলে সিঙ্গেল নিয়ে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের চতুর্থ ফিফটির দেখা পেলেন তানজিদ হাসান তামিম। ৫১ বলে ৮ চার ও ১ ছয় মেরে পঞ্চাশ ছুঁয়েছেন তিনি।
তানজিদ-শান্ত জুটির পঞ্চাশ
তানজিদ হাসান তামিম ও নাজমুল হোসেন শান্তর জুটি শক্ত প্রতিরোধ গড়েছে। ৫২ বলে তাদের জুটি পঞ্চাশ ছুঁয়েছে। ২৯ রানে পারভেজ হোসেন ইমনের বিদায়ের পর জুটি গড়েন দুজন।
পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশের ৬১ রান
পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশ দারুণ পারফরম্যান্স করেছে। ১০ ওভারে ১ উইকেটে তাদের রান ৬১। নাজমুল হোসেন শান্ত ১৩ ও তানজিদ হাসান তামিম ৩২ রানে অপরাজিত আছেন। একমাত্র উইকেট পড়েছে পারভেজ হোসেন ইমনের। ১৩ রান করেন তিনি।
শান্তর সিঙ্গেলে বাংলাদেশের পঞ্চাশ
নবম ওভারে চারিথ আসালাঙ্কার প্রথম বলে নাজমুল হোসেন শান্ত সিঙ্গেল নিলেন। বাংলাদেশ পৌঁছালো পঞ্চাশে।
ইমনের বিদায়ে ভাঙলো ২৯ রানের ওপেনিং জুটি
শ্রীলঙ্কা ২৯ রানে হারিয়েছিল ৩ উইকেট। বাংলাদেশ হারালো প্রথম উইকেট। পঞ্চম ওভারে ১৬ বলে ১৩ রান করে মাঠ ছাড়েন পারভেজ হোসেন ইমন। অথছ ওয়ানডে অভিষেকে তার শুরুটা হয়েছিল দারুণ। প্রথম ওভারে আসিথা ফার্নান্ডোকে দুটি চার মারেন তিনি। বাংলাদেশের ওপেনার আউট হওয়ার আগের বলেও শ্রীলঙ্কার এই পেসারকে চার মারেন। তবে অপ্রত্যাশিত শট খেলে শর্ট থার্ডম্যানের দিকে বল মারেন। অনেক উঁচুতে ওঠা বল সহজেই গ্লাভসবন্দি করেন কুশল মেন্ডিস। ৪.৪ ওভারে ২৯ রানে ১ উইকেট নেই বাংলাদেশের।
প্রথম ওভারে ইমনের দুই বাউন্ডারি
আসিথা ফার্নান্ডোর প্রথম বল ইনসুইং ইয়র্কার ছিল, কোনোরকমে ঠেকালেন পারভেজ হোসেন ইমন। দ্বিতীয় বলে কভার পয়েন্ট ও ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টের মাঝ দিয়ে চার মারেন ওয়ানডেতে অভিষিক্তি এই ওপেনার। এক বল পর একস্ট্রা কভার ও কভার পয়েন্টের মাঝখান দিয়ে তার আরেকটি বাউন্ডারি। প্রথম ওভারে ৮ রান তোলে বাংলাদেশ।
শ্রীলঙ্কাকে আড়াইশ রানের আগে থামালো বাংলাদেশ
টসে জিতে চারিথ আসালাঙ্কা বাংলাদেশের বিপক্ষে ব্যাটিং নিয়েছিলেন। সিদ্ধান্তটা পক্ষে যায়নি। ২৯ রানের মধ্যে তিন উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। তবে শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক ঠিক দাঁড়িয়ে যান। দলকে লাইনচ্যুত হতে দেননি। কেবল দুটি জুটিতে ভালো সমর্থন পেয়েছেন তিনি। কুশল মেন্ডিসের সঙ্গে ৬০ ও জানিথ লিয়ানাগেকে নিয়ে ৬৪ রানের জুটি গড়েন আসালাঙ্কা। একপ্রান্ত আগলে রেখে নিজেও পেয়ে যান সেঞ্চুরি। লঙ্কান ব্যাটারের পঞ্চম শতকের পরও দারুণ বোলিংয়ে শ্রীলঙ্কাকে আড়াইশর আগেই থামিয়েছে বাংলাদেশ। ইনিংসের চার বল বাকি থাকতে ২৪৪ রানে অলআউট করেছে সফরকারীরা। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে শুভ সূচনা করতে বাংলাদেশের লাগবে ২৪৫ রান।
তাসকিন আহমেদ ১০ ওভারে ৪৭ রান দিয়ে সর্বোচ্চ চার উইকেট নেন। ৯.২ ওভারে ৪৬ রানে তিনটি পান তানজিম।
শেষ ওভারে আসালাঙ্কাকে থামালেন তানজিম
শেষ পর্যন্ত টিকে থাকতে পারলেন না চারিথ আসালাঙ্কা। ইনিংসের পাঁচ বল বাকি থাকতে তানজিম হাসান সাকিবের শিকার হলেন শ্রীলঙ্কা অধিনায়ক। ১২৩ বলে ৬ চার ও ৪ ছয়ে ১০৬ রান করে নাজমুল হোসেন শান্তর ক্যাচ হন তিনি। ২৪৩ রানে নবম উইকেট পড়ে। পরের বলে তাওহীদ হৃদয়ের থ্রোতে রান আউট হন ইশান মালিঙ্গা (৫)।
আসালাঙ্কার সেঞ্চুরি
তানজিম হাসান সাকিবের বল কভারে পাঠিয়েই এক দৌড় দিলেন চারিথ আসালাঙ্কা। একটু ঝুঁকিই নিয়েছিলেন। কিন্তু সরাসরি থ্রো কাজে লাগেনি। ঠিকই নন স্ট্রাইক ব্যাটিং প্রান্তে পৌঁছে গেলেন শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক। ১১৭ বলে করলেন সেঞ্চুরি। ব্যাট উঁচু করে হেলমেট খুলে উদযাপন করলেন ক্যারিয়ারের পঞ্চম ওয়ানডে সেঞ্চুরি। এনিয়ে তিন ম্যাচে দুটি শতক তার এবং এই ভেন্যুতে টানা তৃতীয় পঞ্চাশোর্ধ্ব ইনিংস। বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি আসালাঙ্কার। দলকে বিপদ থেকে টেনে তুললেন দারুণ এক শতকে।
একই ওভারে হাসারাঙ্গা-থিকশানাকে ফেরালেন তাসকিন
বাংলাদেশের সামনে বিপজ্জনক হয়ে উঠছিল চারিথ আসালাঙ্কা ও ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার জুটি। ৪৬তম ওভারের প্রথম বলে তাদের আলাদা হতে হলো। তাসকিন আহমেদের বলে এক হাতে বড় শট খেলতে গিয়ে বদলি ফিল্ডার শামীম হোসেন পাটোয়ারীর ক্যাচ হন হাসারাঙ্গা। ২২ বলে ৩ চারে ২২ রান করেন লঙ্কান ব্যাটার। ৩৪ বলে ৩৪ রানের জুটি ভাঙে। দুই বল পর মাহিশ থিকশানাকে জাকের আলীর ক্যাচ বানান তাসকিন। ৪৫.৪ ওভারে ২২৮ রানে ৮ উইকেট হারালো শ্রীলঙ্কা।
তানজিমের বলে বোল্ড মিলান, মাঠের বাইরে মোস্তাফিজ
চারিথ আসালাঙ্কার সঙ্গে মিলান রত্নায়েকের ৪৮ বলে গড়া ৩৯ রানের জুটি ভাঙলেন তানজিম হাসান সাকিব। টানা দুটি স্লোয়ারের পর তার গতিতে পরাস্ত হন মিলান। বল ইনসাইড এজ হয়ে অফস্টাম্পে আঘাত করে। ৩১ বলে ৩ চারে ২২ রান করেন তিনি। ৩৯.৩ ওভারে ১৯২ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারালো শ্রীলঙ্কা।
৪২তম ওভারে বল করতে নেমে রানআপের সময় ক্র্যাম্পের কারণে মাঠ ছাড়েন মোস্তাফিজ।
শান্তর ব্রেকথ্রু
৩২তম ওভারে বল হাতে নিয়ে শান্ত বাজিমাত করলেন। জানিথ লিয়ানাগেকে ২৯ রানে লং অনে তানজিম হাসান সাকিবের ক্যাচ বানান। ১৫৩ রানে পাঁচ উইকেট পড়লো শ্রীলঙ্কার। চারিথ আসালাঙ্কার সঙ্গে ৬৪ রানের জুটি ছিল লিয়ানাগের।
আসালাঙ্কার ফিফটি
২৫তম ওভারের তানভীরের শেষ বলে সিঙ্গেল নেন চারিথ আসালাঙ্কা। ৬১ বলে ক্যারিয়ারের ১৬তম ওয়ানডে ফিফটি করেন তিনি। বাংলাদেশের বিপক্ষে লঙ্কান অধিনায়কের এটি সাত ম্যাচে চতুর্থ হাফ সেঞ্চুরি।
কুশলকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙলেন অভিষিক্ত তানভীর
শুরুর ধাক্কার পর চারিথ আসালাঙ্কা ও কুশল মেন্ডিসের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ায় লঙ্কানরা। তাদের জুটিতে যোগ হয় ৬০ রান। ১৮.৬ ওভারে দারুণ এক ডেলিভারিতে এই জুটি ভাঙেন অভিষিক্ত বামহাতি স্পিনার তানভীর ইসলাম। তার বলে এলবিডাব্লিউ হন দারুণ খেলতে থাকা কুশল মেন্ডিস। লঙ্কান ব্যাটার রিভিউ নিয়েও রক্ষা পাননি। কুশল বিদায় নেন ৪৫ রানে। তার আগের বলটিতে অবশ্য রিভিউ নিয়ে ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশ। ক্যাচের আবেদন করলেও রিভিউতে দেখা গেছে বল ব্যাটে লাগেনি।
পাওয়ার প্লেতে ৩ উইকেট হারিয়ে লঙ্কানদের স্কোর পঞ্চাশ
পাওয়ার প্লেতে শুরুতেই লঙ্কানদের কাঁপিয়ে দেন দুই পেসার তানজিম সাকিব ও তাসকিন আহমেদ। তানজিমের আঘাতের পর দুটি উইকেট শিকার করেন তাসকিন। তাতে শুরুতে চাপে পড়ে স্বাগতিক দল। পরে অবশ্য কুশল মেন্ডিস ও চারিথ আসালাঙ্কা জুটি গড়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন। তাদের ব্যাটে দশ ওভারে লঙ্কানদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩ উইকেটে ৫০ রান।
তাসকিনের দ্বিতীয় আঘাত, ৩ উইকেট হারিয়ে বিপদে শ্রীলঙ্কা
শুরুতেই লঙ্কানদের চাপে ফেলেছে বাংলাদেশ। ৬.১ ওভারে আবার আঘাত হেনেছেন তাসকিন আহমেদ। তার দ্বিতীয় শিকারে এবার বিদায় নেন নতুন ব্যাটার কামিন্দু মেন্ডিস। শট খেলতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন লঙ্কান ব্যাটার। তিনি আউট হন শূন্য রানে।
তানজিমের পর তাসকিনের আঘাত
তানজিম সাকিবের পরের ওভারে আঘাত হানেন তাসকিন আহমেদও। ৪.৩ ওভারে তার অফ স্টাম্পের বাইরের বল টেনে খেলার চেষ্টা করতে গেলে বল ইনসাইড এজ হয়ে আঘাত করে স্টাম্পে। তাতে ৬ রানে ফিরে যান লঙ্কানদের আরেক ওপেনার।
বাংলাদেশকে শুরুতে সাফল্য এনে দিলেন তানজিম
টস জিতে ব্যাটিং নিলেও বাংলাদেশের ভালো বোলিংয়ে শুরুতে সতর্ক ছিল শ্রীলঙ্কা। যদিও পেস আক্রমণ বেশিক্ষণ সামাল দিয়ে রাখতে পারেনি। ৩.১ ওভারে তানজিম সাকিবের স্টাম্পের অনেক বাইরের বলটি বাউন্স করেছিল। সেই বলে কাট করতে গিয়ে লিটনের গ্লাভসবন্দি হয়েছেন ওপেনার পাথুম নিসাঙ্কা। লঙ্কান ব্যাটার ক্যাচ আউট হন শূন্যরানে।
টেস্ট সিরিজে একটি ড্র করলেও শেষটিতে ইনিংস ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ। এবার প্রিয় ফরম্যাট ওয়ানডে মিশন শুরু হচ্ছে বুধবার। তবে শুরুর ম্যাচে টসভাগ্য পাশে পায়নি সফরকারীরা। কলম্বোয় সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে টস হেরেছে বাংলাদেশ। শুরুতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা।
বাংলাদেশ দলের জন্য আজ নতুন শুরু। দীর্ঘদিন পর বাংলাদেশ ওয়ানডে দলে নেই সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, তামিম ইকবাল, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ কিংবা মাশরাফি বিন মুর্তজার কেউ। ১৮ বছর পর এই প্রথম পঞ্চপাণ্ডববিহীন ওয়ানডে একাদশ নিয়ে মাঠে নামছে বাংলাদেশ।
একাদশে কারা
কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে আজ অভিষেক হচ্ছে উইকেটকিপার ব্যাটার পারভেজ হোসেন এবং বামহাতি স্পিনার তানভীর ইসলামের। বাংলাদেশ আজ তিন পেসার নিয়ে মাঠে নেমেছে।
বাংলাদেশ একাদশ: তানজিদ হাসান, পারভেজ হোসেন, নাজমুল হোসেন শান্ত, লিটন দাস (উইকেটরক্ষক), তাওহীদ হৃদয়, মেহেদী হাসান মিরাজ (অধিনায়ক), জাকের আলী, তানজিম হাসান, তাসকিন আহমেদ, তানভীর ইসলাম ও মোস্তাফিজুর রহমান।
শ্রীলঙ্কাও আজ তিন পেসার নিয়ে মাঠে নামছে। অভিষেক হচ্ছে পেস বোলিং অলরাউন্ডার মিলান রত্নায়েকের।
শ্রীলঙ্কা একাদশ: নিশান মাদুশকা, পাথুম নিসাঙ্কা, কুশল মেন্ডিস, কামিন্দু মেন্ডিস, চারিথ আসালাঙ্কা (অধিনায়ক), জেনিথ লিয়ানাগে, মিলান রত্নায়েকে, ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা, মাহিশ থিকশানা, এহসান মালিঙ্গা ও আসিথা ফার্নান্ডো।