বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে ৭৭ রানের জয়ে দারুণ ফিল্ডিংকে কৃতিত্ব দিয়েছেন শ্রীলঙ্কার লেগ স্পিনার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। অথচ এক পর্যায়ে ম্যাচটা হেলে ছিল বাংলাদেশের দিকে। ১ উইকেটে স্কোর ছিল ১০০ রান। এমন স্বাচ্ছন্দ্যে খেলছিল মনে হচ্ছিল নিশ্চিত জয় পাবে সফরকারী দল। এরপরই পতনের শুরু। যার সূচনা দুর্দান্ত ফিল্ডিংয়ে। মিলান রত্নায়েকে ডিপ স্কয়ার থেকে সরাসরি থ্রোয়ে রানআউটে বিদায় দেন নাজমুল হোসেন শান্তকে। লিটন দাসও শূন্য রানে আউট হওয়ার পর ম্যাচটিকে গভীরে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব ছিল হাফসেঞ্চুরি করা তানজিদ হাসানের ওপর। কিন্তু সেটাও শেষ হয়ে যায় মিড-অফে জেনিথ লিয়ানাগের একটি চমৎকার ক্যাচের মাধ্যমে। তার পর দেখা গেছে এক অভূতপূর্ব ব্যাটিং ধস!
ম্যাচের পর তাই দারুণ ফিল্ডিংকে টার্নিং পয়েন্ট বলে মন্তব্য করে হাসারাঙ্গা, ‘মিলান রত্নায়েকে অসাধারণ ছিল। জেনিথ লিয়ানাগেও তাই। আমরা দেখিয়েছি কীভাবে ফিল্ডিংয়ের মাধ্যমে ম্যাচের গতিপথ বদলানো যায় এবং এই ম্যাচ তার আরও একটি প্রমাণ।’
হাসারাঙ্গাও স্বীকার করেছেন, ম্যাচটা বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণে ছিল, ‘তারা এক সময় নিয়ন্ত্রণে ছিল। মিলানের সেই রান আউট ম্যাচটি বদলে দেয়। এরপর জেনিথের সেই ক্যাচ খেলার মোড় ঘুরিয়ে দেয় আমাদের পক্ষে।’
হাসারাঙ্গা বলেছেন, তারা প্রায় ২৫০ রান তুলতে পেরেও আত্মবিশ্বাসী ছিল যে সেটি তারা ডিফেন্ড করতে পারবে, ‘এটি স্বাভাবিক প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামের উইকেট। আমরা যখন অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের বিপক্ষে খেলেছি, তখন জানতাম যে প্রথম ইনিংসে ২৪০-২৫০ রান করতে পারলে আমাদের বোলিং দিয়ে সেটা রক্ষা করা সম্ভব।’
তিনি বলেছেন, ‘আমি মনে করি ওরা পেস নির্ভর আক্রমণে যাওয়ার চিন্তা করেছিল। কিন্তু কন্ডিশনের সঙ্গে দ্রুত মানিয়ে নিতে হয়। আমাদের স্পিনারদের সামলানো কঠিন হবে জেনে হয়তো বাংলাদেশি ব্যাটাররা আমাদের পেসারদের ওপর চড়াও হয়েছিল। আসিথা সবসময় যেমন করে, এবারও ভালো বোলিং করেছে। বোলাররা যেভাবে নিজেদের মানিয়ে নিয়েছে তা দেখেও ভালো লেগেছে।’
এছাড়া তিনি জানান, কৌশলগত কারণে ১৮তম ওভারে তাকে আনা হয়েছিল, ‘চারিথ, কুশল আর আমি একসাথে আলোচনা করি এবং সিদ্ধান্ত নেই যে আমাকে পিছনে রাখা হবে। কারণ তাদের টপ অর্ডারে অনেক বাঁহাতি ব্যাটার আছে, তাই আমি যেন ডানহাতিদের বিরুদ্ধে পরে এসে আক্রমণ করতে পারি।’
হাসারাঙ্গা ওয়ানডে দলের উন্নতির জন্য ব্যাটিং ইউনিটের প্রশংসা করেছেন এবং বলেছেন চারিথ আসালাঙ্কার নেতৃত্বে তারা সঠিক পথে এগোচ্ছে, ‘চারিথ অনেক পরিণতভাবে নিজের দায়িত্ব পালন করছে। সে মাঝখানের পরিস্থিতিগুলো ভালোভাবে সামলায় এবং অন্যান্য ব্যাটারদের নিয়ে জুটি গড়তে সাহায্য করে। গত ১৮ মাসে সে ধারাবাহিকভাবে রান করছে। এখন প্রত্যেক ব্যাটার অবদান রাখছে—যেটা কয়েক বছর আগেও ছিল না। এখন আমরা নিয়মিত জয় পাচ্ছি, কারণ ব্যাটাররা দায়িত্ব নিচ্ছে এবং বোলারদের কাজ সহজ হয়ে যাচ্ছে।’