ইউরো ফাইনালে ফ্রান্স-পর্তুগাল দ্বৈরথ আজ

france-vs-portugal-adtube-indiaকোথায় শোভা পাবে ইউরো ২০১৬ এর শিরোপা জয়ীর পতাকা? ফ্রান্সের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মন্ত ব্লাঁ'র শিখরে না পর্তুগালের মাউন্ট পিকোর চুড়ায়? সে প্রশ্নের উত্তর জানার জন্য অপেক্ষায় আছে সারা বিশ্বের ফুটবল ভক্তরা। রাত একটায় সেন্ট ডেনিসের স্তাদে দে ফ্রান্সের সবুজ গালিচায় আয়োজক ফ্রান্সের সামনে আত্মবিশ্বাসী পর্তুগাল।

ফাইনালের আড়ালে মাদ্রিদীয় শত্রুতা

ফ্রান্সের নবীন তারকা আন্তোনিও গ্রিজম্যান খেলেন অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদে। ছয় গোল করে তিনি এখন টুর্নাামেন্টের শীর্ষ গোলদাতা। পর্তুগাল সুপারস্টার ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো অ্যাটলেটিকো নগর প্রতিদ্বন্দী রিয়াল মাদ্রিদে। আজ ফাইনালে দুই দলের অনেক আশা-প্রত্যাশার ভার বহন করছেন দুইজন। ফাইনাল মানে বিগ ম্যাচ, আর বিগ ম্যাচে যে দলের বিগম্যানরা ভাল খেলেন তাদেও জয়ের সম্ভাবনাও থাকে বেশি। রোনালদোর কিন্তু রয়েছে বাড়তি চাপ। ফ্রান্সের বিপক্ষে তিনটি ম্যাচ খেললেও তিনি এখনও লা ব্লুজদের বিপক্ষে কোনও গোল করতে পারেননি।

পর্তুগাল-ফ্রান্স অসম পরিসংখ্যান

বিগত ১০টি আন্তর্জাতিক মোকাবেলায় পর্তুগাল ফ্রান্সের কাছে পরাজিত হয়েছ। এর মাঝে রয়েছে তিনটি সেমিফাইনাল। ইউরো ১৯৮৪, ইউরো ২০০০ ও বিশ্বকাপ ২০০৬। পর্তুগাল এ পর্যন্ত কোনও বড় মাপের আন্তর্জাতিক শিরোপা জিততে পারেনি। ২০০৪ সালের ইউরোর ফাইনালে গ্রিসের কাছে হেরে রানার্স-আপ হওয়াই তাদের সেরা সাফল্য। অন্যদিকে ফ্রান্স ১৯৮৪ ও ২০০০ সালের ইউরো চ্যাম্পিয়ন ও ১৯৯৮ সালের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। ২০০৬ সালের বিশ্বকাপ রানার্স-আপও তারা।

পর্তুগাল-যোগ্যতা প্রমাণিত

পর্তুগালের ট্রেডমার্ক তাদের নিশ্চিদ্র ডিফেন্স, নকআউট পর্ব শুরু হওয়ার পর তারা মাত্র একটি গোল খেয়েছে। হোসে ফন্টে, ড্যানিলো, ও ব্রুনো আলভেস সবকটি ম্যাচে খেলেছেন অটল আত্মবিশ্বাসে। রিয়াল মাদ্রিদ তারকা, পেপে ও আরেক নির্ভরযোগ্য নাম রিকার্ডো কারভালহো ইনজুরি ও কার্ড সাসপেনশন কাটিয়ে আবার ফেরার জন্য তৈরি। তার মানে পর্তুগাল ডিফেন্সে ফাঁকা জায়গা পাওয়া কষ্টকর হবে ফ্রান্সের ফরোয়ার্ডদের। পর্তুগিজ কোচ ফার্নান্দো সান্তোস এ পর্যন্ত সব ম্যাচেই ৪-৪-২ ফর্মেশন ব্যবহার করেছেন। আক্রমণে রোনালদো- নানি ও ১৮ বছর বয়সী রেনাতো সানচেজকে ব্যবহার কারেছেন। কারেশমা ও গুয়েরেরো আক্রমণে আনেন বাড়তি ধার যেটি নিয়ে সতর্ক থাকবে ফ্রান্স। পর্তুগাল গোলরক্ষক রুই প্যাট্রিসিয়ো দলের আস্থার প্রতীক। সব মিলিয়ে টিমওয়ার্ক পর্তুগালের সাফল্যের মধ্য নাম। ক্রোয়েশিয়া, পোল্যান্ড ও ওয়েলসকে হারিয়ে ফাইনালে পৌঁছানো পর্তুগাল ধাক্কা খেয়ে খেয়েই এসেছে ফাইনালে। সঙ্গে ছিল ভাগ্যের ছোঁয়াও।

ফ্রান্স- নিজ মাঠে অপ্রতিরোধ্য

নিজ মাঠে ফ্রান্স হয়ে উঠেছে এক দূর্ভেদ্য নামে। ছয়টি ম্যাচে এ পর্যন্ত ১৩টি গোল করে তারা ফেভারিট হিসেবেই নামছে মাঠে। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো নিজ মাঠে গত ১৮টি আন্তর্জাতিক ম্যাচে অপরাজিত ফরাসিরা। যার মধ্যে ১৬টি জয় ও মাত্র দুটি ড্র। গোলবারের নিচে অধিনায়ক হুগো লরিস দলের আস্থার প্রতীক। ডিফেন্সের দুই পরীক্ষিত নাম প্যাট্রিক এভরা ও বারকে সাগমা। সঙ্গে আছেন কসচিয়েলনি। এই তিনজনকে নিয়ে গড়া ফ্রান্সের ডিফেন্স সর্বদাই যে কোনও চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য তৈরি। তবে অক্রমণাত্বক খেলাই ফ্রান্সের বৈশিষ্ট্য। আর এ জন্য তাদের অস্ত্রাগারে অস্ত্র রয়েছে প্রচুর। পগবা, সিসোকো, গ্রিজম্যান, পায়েত ও জিরুদ ম্যাচের পুরোটাই প্রতিপক্ষকে রাখেন ব্যতিব্যস্ত। গতি, নিয়ন্ত্রণ ও সমঝোতায় ফ্রান্স অনন্য। ৪-২-৩-১ ফর্মেশনে খেলা ফ্রান্স যদি তাদের আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলতে পারে তবে শেষ পর্যন্ত জয়ের হাসি হাসবে স্বাগতিকরাই।

/এমআর/