মগিনি বোনদের দুরন্ত ছুটে চলা

আনুচিং মগিনি ও আনাই মগিনি। বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৬ নারী ফুটবল দলের দুই নির্ভরযোগ্য নাম। নিজ দক্ষতায় তারা নজর কেড়েছেন দেশের ক্রীড়ামোদীদের। তবে অনেকের এটি অজানা যে, তারা দুজন যমজ বোন। ২০০৪ সালে পাঁচ মিনিটের ব্যবধানে তাদের জন্ম। আর জাতীয় পর্যায়ের কোনও ফুটবল দলে যমজ ভাই বা বোনের অংশগ্রহণ আছে কিনা তা নিশ্চয়তা দিয়ে বলতে পারেননি কেউই।১০ নং জার্সিতে আনুচিং মগিনি (ডানে) ও ১৭ নং জার্সিতে আনাই মগিনি (বামে)

যমজ বোন হলেও দুজনের চরিত্র কিন্তু ভিন্ন। আনুচিং ফরোয়ার্ড। ইতোমধ্যেই তার মার-মার, কাট-কাট খেলা সবার নজরে পড়েছে। প্রতিপক্ষের গোলমুখে তার বুক ভরা সাহস নিয়ে দুরন্ত পদচারণা যে কোনও ডিফেন্সের মাথাব্যথার কারণ। আছে ড্রিবলিং ও গতি। দলের ১০ নম্বর জার্সিটাও তাই তিনিই পড়েন। অন্যদিকে আনাই মগিনি ডিফেন্ডার। ঠাণ্ডা মাথায় নিজ দায়িত্ব পালনে তার জুড়ি নেই। আত্মবিশ্বাস তার মূল অস্ত্র। কখনই ঘাবড়ে যান না তিনি।

কোচ গোলাম রাব্বানি ছোটনের ভাষায়, 'আনা দলের সবচেয়ে স্বল্পভাষী সদস্যদের একজন। কথাবার্তা তেমন একটি বলেই না। কিন্ত শোনে মনোযোগ দিয়ে। যখন তার পায়ে বল থাকে আমি নিশ্চিন্ত থাকি। ভুল খেলোয়াড়রা করবেই তবে তার ভুলের মাত্রাটা কম। আর তাকে প্রয়োজনে স্টপার কিংবা রাইট ব্যাক দুই পজিশনেই খেলানো যায়।'

অন্যদিকে আনুচিংয়ের ব্যাপারে কোনও নির্দেশনা লাগে না কোচ ছোটনের, 'ভেঙে-চুড়ে ফেলো, এটিই আমি তাকে বলি। সে যে প্রতিপক্ষ ডি-বক্সে কী করবে তা সেই নিজেই জানে না। গোল করার অদম্য নেশাই তার পথচলার শক্তি। আর সবচেয়ে বড় গুণ হলো, তার সাইডভলি প্রচণ্ড ভালো। আমি তার মধ্যে শেখ মো. আসলামের প্রতিচ্ছবি দেখি। বল একটু বাতাসে উঠলেই হলো, সাইডভলিটা তার মজ্জাগত।'

দুজনের জন্ম খাগড়াছড়ি হলেও তাদের জেলা মহিলা ফুটবলে দল না করাতে দুই বোন ২০১৩ সালে নারায়ণগঞ্জের হয়ে জাতীয় পর্যায়ের ফুটবলে নাম লেখান। তারপর থেকে তারা আছেন কোছ ছোটনের অধীনে। দুজনের মধ্যে আনাই বড়।তবে আনুচিংয়ের আচরণে তাকেই বড় মনে হয। ফুটবল সম্পর্কে বেশি জানা নেই আনুচিংয়ের। তিনি বলেন, 'মেসি আর ফুটবল আমার প্রিয়, আমি চাই বড় ফুটবলার হতে।' এতুটকু অনেক কষ্ট করেই বের করতে হলো আনুুিচংয়ের মুখ থেকে।

/এমআর/