পার্থক্য এতটুকু- এবার ঘরের মাঠ নয়, যেতে হচ্ছে স্পেনে, আর বার্সেলোনার জায়গায় প্রতিপক্ষ রিয়াল মাদ্রিদ। জায়গা ও প্রতিপক্ষ বদল হলেও উত্তেজনার পারদ থাকছে একই জায়গায়; বলা ভালো, কয়েক ডিগ্রি এগিয়ে!
লড়াইটা সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে হলেও ফুটবল বিশ্লেষকদের বিচারে ফেভারিট পিএসজি। তবে কে না জানে, প্রতিযোগিতার নাম যখন চ্যাম্পিয়নস লিগ, তখন রিয়াল হাজির হয় নিজেদের সেরাটা নিয়ে। বাংলাদেশ সময় বুধবার দিবাগত রাত পৌনে ২টায় শুরু হওয়া উত্তেজনাকর এই দ্বৈরথ দেখা যাবে ‘টেন টু’ চ্যানেলে। একই সময়ে পোর্তোর মাঠে আতিথ্য নেবে লিভারপুল।
বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে প্যারিস উৎসবের রঙে রঙিন হলেও ইতিহাসের সবচেয়ে বড় হতাশা নিয়ে তাদের মাঠ ছাড়তে হয়েছিল শেষ ষোলোর পরের লেগে। ৪-০ গোলে পিছিয়ে থেকে নকআউট পর্বে অন্তত কারও জেতার রেকর্ড ছিল না। কিন্তু অসম্ভব এই সমীকরণ মিলিয়ে ৬-১ গোলের জয়ে ফরাসি ক্লাবকে বিদায় করে দিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে নাম তোলে কাতালানরা। অসম্ভবকে সম্ভব করার পথে সবচেয়ে অবদান রাখা নেইমারকে অবশ্য এবার নিজেদের দলেই পাচ্ছে পিএসজিকে। গত গ্রীষ্মের দলবদলে রেকর্ড ২২২ মিলিয়ন ইউরো দিয়ে ন্যু ক্যাম্প থেকে ‘উঠিয়ে’ নিয়ে গেছে তারা।
গত মৌসুমে ড্র ভাগ্য বার্সেলোনার বিপক্ষে পিএসজিকে দাঁড় করিয়ে দেওয়ার পর পরিষ্কার ফেভারিট ছিল কাতালানরা। তবে রিয়াল মাদ্রিদ বর্তমান চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরও তাদের টপকে এগিয়ে রাখা হচ্ছে ফরাসি ক্লাবকে। কারণ পিএসজির দুর্দান্ত ফর্ম, আর রিয়ালের নিজেদের হারিয়ে খোঁজা। ঘরোয়া ফুটবল তো আছেই, চ্যাম্পিয়নস লিগে গোলের বন্যা বইয়ে উঠেছে শেষ ষোলোতে। নেইমার, এদিনসন কাভানি ও কাইলিয়ান এমবাপেকে নিয়ে গড়া আক্রমণভাগ গ্রুপ পর্বেই প্রতিপক্ষের জালে বল জড়িয়েছে ২৫বার।
রিয়ালের আশার প্রদীপ হয়ে জ্বলে আছে কেবল চ্যাম্পিয়নস লিগ। লিগ টেবিলে অনেক পিছিয়ে থাকার সঙ্গে বিদায় নিয়েছে কোপা দেল রে থেকে। ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতার পারফরম্যান্সও ঠিক যায় না তাদের ঐতিহ্যের সঙ্গে। টটেনহামের মতো দলের পেছনে থেকে গ্রুপ পর্ব শেষ করতে হয়েছে দ্বিতীয় হয়ে। তবে ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় রিয়াল কতটা ভয়ঙ্কর, তা ফুটবলপ্রেমীদের অজানা থাকার কথা নয়।
ঠিক সময়ে জ্বলেও উঠেছে মাদ্রিদের অভিজাতরা। রিয়াল সোসিয়েদাদের বিপক্ষে লিগের সবশেষ ম্যাচ জিতেছে ৫-২ গোলে, সেখানে আবার ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো প্রস্তুতি সেরেছেন হ্যাটট্রিক দিয়ে। গ্রুপ পর্বে ৯ গোল করা পর্তুগিজ যুবরাজ ফিরছেন তার পছন্দের প্রতিযোগিতায়।
চ্যাম্পিয়নস লিগে মুখোমুখি লড়াইয়ে অবশ্য দু’দল সমানে সমান। ছয়বারের সাক্ষাৎকারে দুটি করে জয় পেয়েছে রিয়াল ও পিএসজি। শেষ ষোলোর প্রথম লেগ দিয়ে এগিয়ে যাওয়ার পালা। মিশনটা সহজ হওয়ার কথা নয় পিএসজির জন্য, কারণ বার্নাব্যুতে গত ১৭ ম্যাচে হারানো যায়নি স্বাগতিকদের।
ফুটবল উত্তেজনা নিয়ে আবার হাজির চ্যাম্পিয়নস লিগ। একদিকে ইতিহাস-ঐতিহ্যে পরিপূর্ণ রিয়াল মাদ্রিদ, অন্যদিকে ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় মাথা উঁচিয়ে ধরার অপেক্ষায় পিএসজি। একদিকে ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো, আরেকদিকে নেইমার। ভালোবাসা দিবসে ফুটবলপ্রেমীদের জন্য এর চেয়ে ভালো উপলক্ষ আর কী হতে পারে!