‘চিরদিন এখানে পড়ে থাকবে আমার মন’

মাইক্রোফোন হাতে অশ্রুসিক্ত ইনিয়েস্তাসুরের মূর্ছনায় শেষ ১০ মিনিট বার্সেলোনার ভক্তদের নিমগ্ন রাখা ডিজে হঠাৎ করে চুপ হয়ে গেলেন। হাজার হাজার ভক্তদের হাত ঘুরে মাইক্রোফোন পৌঁছাল আন্দ্রেস ইনিয়েস্তার হাতে, যাকে ঘিরে ন্যু ক্যাম্পে তৈরি হয়েছে আবেগঘন এক পরিবেশ। শেষ ম্যাচ খেলার পর বিদায়ী বক্তব্য দিতে গিয়ে চোখের পানি আটকাতে পারলেন না স্প্যানিশ মিডফিল্ডার।

১৫ সেকেন্ডের একটি ভিডিওতে ইনিয়েস্তার জাদুকরী মুহূর্তগুলো দেখানো হলো। কিন্তু বার্সার মাঝমাঠের এই কিংবদন্তি স্ক্রিনে তাকিয়ে থাকলেও তার হৃদয় ছিল ভারাক্রান্ত। ২২ বছরের সম্পর্কের ইতি টানা যে কতটা কষ্ট সেটাই জানালেন ইনিয়েস্তা, ‘আজ আমার জীবনের কঠিন একটি দিন, কিন্তু এই ২২টি বছর ছিল অবিশ্বাস্য। এই ক্লাব ও ব্যাজের প্রতিনিধিত্ব করা সম্মানের, আমার কাছে এটা বিশ্বের সেরা ক্লাব।’

মাঠ ছাড়ার পর কোচের সঙ্গে ইনিয়েস্তাসতীর্থ ও ভক্তদের কৃতজ্ঞতা জানালেন ৩৪ বছর বয়সী মিডফিল্ডার, ‘আমার সতীর্থ ও স্টেডিয়ামে উপস্থিত প্রত্যেককে আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই। এখানে এসেছিলাম ছোট বালক হয়ে, এখন বার্সা ছেড়ে যাচ্ছি ৩৪ বছর বয়সে। আমি শুধু এটুকু বলতে চাই যে আমার মন চিরদিন এখানে পড়ে থাকবে। আপনাদের সবাইকে আমার হৃদয়ে ধারণ করে রাখব।’

প্রায় ৯০ হাজার দর্শকের চোখ ছিল কেবল ইনিয়েস্তার ওপর। বক্তব্য শেষ হতেই সতীর্থরা পিঠ চাপড়ে দিলেন, আর গ্যালারি থেকে শোনা গেল তার নামে হর্ষধ্বনি।

গ্যালারি শূন্য হলেও মাঠে বসে ছিলেন ইনিয়েস্তাবার্সায় ইনিয়েস্তার শেষ কোচ এরনেস্তো ভালভারদে আপ্লুত হয়ে বলেছেন, ‘আমি ভবিষ্যতে বলতে পারব যে যেই ম্যাচ দিয়ে সে বার্সেলোনাকে বিদায় জানাল সেটার কোচ ছিলাম আমি। সে এমন একজন, যার মতো আর কাউকে পাওয়া যাবে না। আমি মনে করি এটা ছিল প্রত্যেকের জন্য আবেগঘন এক রাত। এখানে সে একজন লিজেন্ড। সে বার্সেলোনার পতাকা বাহক।’

কোচের স্তুতিতে ভেসে যাওয়ার পর ইনিয়েস্তা হাতে নেন তার ক্যারিয়ারের নবম লা লিগা শিরোপা। উৎসব শেষে যখন সবাই বাড়ি ফিরে গেলেন, তখনও কিন্তু ন্যু ক্যাম্পেই বসে ছিলেন তিনি। যেখানে আর কখনও ফেরা হবে না লাল-নীলের এই জার্সিতে।