সেরা পাঁচে থাকতে পারলেই ব্রাদার্স খুশি

আগামী ১৮ জানুয়ারি শুরু হবে প্রিমিয়ার ফুটবল লিগ। ১৩ দলের এবারের প্রতিযোগিতায় দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস। লিগ শুরুর আগে দলগুলোর প্রস্তুতি কেমন, কী তাদের প্রত্যাশা, আর তা পূরণে লক্ষ্যই বা কী- তা নিয়ে বাংলা ট্রিবিউনের এই ধারাবাহিক আয়োজন। আজ  থাকছে গত আসরে সপ্তম ব্রাদার্স ইউনিয়নকে নিয়ে-

ব্রাদার্স ইউনিয়নএক সময় আবাহনী-মোহামেডানের পাশাপাশি ব্রাদার্স ইউনিয়নের নামও উচ্চারিত হতো। ঢাকার ফুটবলে ‘তৃতীয় শক্তি’ হিসেবে বিবেচিত হতো গোপীবাগের দলটি। তবে সত্তর, আশি বা নব্বই দশকে আবাহনী-মোহামেডানের সঙ্গে সমানে পাল্লা দিলেও লিগ শিরোপার স্বাদ পায়নি তারা।

অনেক দিন ব্যর্থতার সঙ্গে কাটানোর পর ২০০৩-২০০৪ মৌসুমে ঘুরে দাঁড়ায় ব্রাদার্স। সেবার প্রথমবারের মতো ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা উঠেছিল তাদের ঘরে। জাতীয় লিগ এবং ভারতের বরদলুই ট্রফিও জিতে নিয়ে সাফল্যের সঙ্গে মৌসুম শেষ করেছিল তারা।

পরের মৌসুমও ছিল ব্রাদার্সের সাফল্যে উজ্জ্বল। ফেডারেশন কাপ জয়ের পর প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা ধরে রেখেছিল তারা। কিন্তু এরপর ছন্দপতন, সাফল্যের সোনালী দিন শেষে শুরু হয় ব্যর্থতার কালো দিন। ২০০৫ প্রিমিয়ার লিগের পর আর কোনও ট্রফি জিততে পারেনি।

এবার ফেডারেশন কাপের গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিলেও স্বাধীনতা কাপে সেমিফাইনালে উঠেছে ব্রাদার্স। তবে লিগ শিরোপার কথা ভাবতেও পারছে না এক সময়ের ‘তৃতীয় শক্তি’। গতবারের মতো মাঝামাঝি অবস্থানে থাকতে পারলেই তারা সন্তুষ্ট। দীর্ঘদিন ব্রাদার্সে খেলার পর এখন দলটির ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করছেন আমের খান। তার লক্ষ্য, ‘বিভিন্ন কারণে আমরা ভালো দল গড়তে পারিনি। তবে লড়াকু দল হিসেবে অন্যরকম সুনাম আছে আমাদের। এবার লিগে মাঝামাঝি অবস্থানে থাকতে পারলেই আমরা খুশি। দীর্ঘ বিরতি না হলে আর ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারলে আশা করি ভালো জায়গায় থেকে লিগ শেষ করতে পারবো।’

মৌসুমের শুরুতে ব্রাদার্সের দায়িত্ব নিয়েছিলেন পেরুর কোচ জর্জি ফারফান। ফেডারেশন কাপে ব্যর্থতার পর তিনি বিদায় নিলে আবারও ভারতের সৈয়দ নাইমুদ্দিনের দ্বারস্থ হয়েছে দলটি। দীর্ঘদিন ব্রাদার্সের কোচিংয়ের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা নাইমুদ্দিনের কণ্ঠে কিছুটা আক্ষেপ, ‘ছেলেরা কঠোর পরিশ্রম করছে। তবে ওদের আরেকটু বেশি সময় পেলে ভালো হতো। আসলে একটা দলকে একটানা তিন/চার বছর অনুশীলন করাতে পারলে সাফল্যের আশা করা যায়।’

অভিজ্ঞ গোলকিপার বিপ্লব ভট্টাচার্য সহ ১৫ জন এবার যোগ দিয়েছেন ব্রাদার্সে। স্থানীয় খেলোয়াড়দের মধ্যে অবশ্য তরুণদের সংখ্যাই বেশি। তাদের সঙ্গে আছেন ব্রাজিলের ফরোয়ার্ড ভিয়েরা লিমা লিওনার্দো ও মিডফিল্ডার এভারটন সান্তোস সুজা এবং পানামার ফরোয়ার্ড জ্যাক দানিয়েলস মেজা। দলের চতুর্থ বিদেশি ইরাকের ডিফেন্ডার মুয়াদ খালিদ।

তারুণ্য নির্ভর দল নিয়ে সেরা পাঁচে থাকার স্বপ্ন অধিনায়ক ইমরুল হাসানের, ‘আমাদের প্রস্তুতি ভালো। দীর্ঘদিন পর স্বাধীনতা কাপের সেমিফাইনালে খেলেছি আমরা। এটা লিগে অনুপ্রাণিত করবে। চ্যাম্পিয়ন হবো কিনা বলতে পারছি না। তবে প্রথম পাঁচ দলের মধ্যে থাকতে পারলে ভালো লাগবে।’

স্থানীয় খেলোয়াড়: সুজন চৌধুরী, উত্তম রায়, খান মোহাম্মদ তারা, আব্দুল হামিদ শেখ ভাসানী, আশরাফুল করিম, শফিকুল ইসলাম শাফি, ইমরুল হাসান, মান্নাফ রাব্বি, মোহাম্মদ মোকারম, মোস্তাকিম শাহরিয়ার শেখ, মিনহাজুল আবেদীন বাল্লু, মোহাম্মদ আরিফ, শাকিল আহমেদ, সুমন দে, সবুজ বিশ্বাস, আরিফুল ইসলাম শান্ত, সোহেল রানা, কামাল হোসেন টিটু, জাহাঙ্গীর আলম সজীব, মোহাম্মদ সজল, মহিউদ্দিন রানু, মইনুল ইসলাম মামুন, জোসেফ নূর, রাশেদ হোসেন বিপ্লব, সুজন আলী, বিপ্লব ভট্টাচার্য, আশিক খন্দকার ও নাইম হোসেন।

বিদেশি খেলোয়াড়: ভিয়েরা লিমা লিওনার্দো, এভারটন সান্তোস সুজা, জ্যাক দানিয়েলস মেজা ও মুয়াদ খালিদ।