চার তরুণের ভাবনায় শুধুই ব্রাজিল

(উপরে বাঁ থেকে) নাজমুল ও নাহিদ, (নিচে বাঁ থেকে) মিঠু ও লাকরাব্রাজিলের নাম উচ্চারিত হলেই শিহরণ জাগে ফুটবলপ্রেমীদের মনে। পেলে-গ্যারিঞ্চা-জিকো-রোনালদো সহ অজস্র গ্রেট ফুটবলারের জন্মভূমি ব্রাজিল দারুণ জনপ্রিয় বাংলাদেশেও। উন্নত প্রশিক্ষণের জন্য সেই স্বপ্নের দেশে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছেন চার তরুণ ফুটবলার।

সাও পাওলোর ভাস্কো দা গামা একাডেমিতে এক বছর প্রশিক্ষণের সুযোগ পেয়ে উচ্ছ্বসিত ডিফেন্ডার নাজমুল আকন্দ, ফরোয়ার্ড জোগেন লাকরা এবং দুই মিডফিল্ডার ওমর ফারুক মিঠু ও লতিফুর রহমান নাহিদ। ডেভেলপমেন্ট কাপ ও বঙ্গবন্ধু অনূর্ধ্ব-১৭ ফুটবল টুর্নামেন্ট থেকে বাছাই করা হয়েছে তাদের। মার্চের শেষ দিকে ব্রাজিল যাবেন তারা।

চার তরুণ ফুটবলারের এমন সুযোগ প্রাপ্তিকে অভিনব বলতে হবে। গত বছর রাশিয়া বিশ্বকাপের সময় বাংলাদেশে ফুটবল উন্মাদনা বিস্মিত করেছিল ঢাকার ব্রাজিলিয়ান দূতাবাসের কর্মকর্তাদের। সেই সময় তাদের সঙ্গে যোগাযোগ হয় সাবেক জাতীয় ফুটবলার শেখ মোহাম্মদ আসলামের। দুই পক্ষের আলোচনার পর বাংলাদেশের কয়েকজন তরুণ ফুটবলারকে প্রশিক্ষণের জন্য ব্রাজিলে নিয়ে যাওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন দূতাবাসের কর্মকর্তারা। সেই প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে এ বছর।

এ প্রসঙ্গে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব ওমর ফারুক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছেন, ‘চার তরুণ ফুটবলার ব্রাজিল যাবে। এ বিষয়ে শিগগিরই দুই দেশের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হবে।’

এই কর্মসূচির সমন্বয়কারী আসলাম জানিয়েছেন, ‘বিশ্বকাপের সময় ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূত ফোন করে বলেছিলেন, ‍ফুটবল উন্মাদনা নিয়ে অনুষ্ঠান করতে বাংলাদেশে আসবেন ব্রাজিলের একটি টিভি চ্যানেলের কয়েকজন কর্মকর্তা। তাদের সাহায্য করার অনুরোধ করেছিলেন রাষ্ট্রদূত। ধীরে ধীরে দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আমাদের অন্তরঙ্গ সম্পর্ক হয়। আমরা প্রস্তাব দিয়েছিলাম, কীভাবে বাংলাদেশের ফুটবল উন্নয়নে এক সঙ্গে কাজ করা যায়। এরপর ব্রাজিলে গিয়ে উন্নত প্রশিক্ষণের প্রস্তাব আসে আমাদের কাছে।’

ব্রাজিলের যাওয়ার সুযোগ পেয়ে উচ্ছ্বসিত এসএসসি পরীক্ষার্থী জোগেন লারকা। জীবনের অন্যতম কঠিন পরীক্ষা দিলেও তার মন পড়ে আছে পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের দেশে, ‘এসএসসি পরীক্ষার মধ্যেও আমার মনের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে ব্রাজিলের কথা। এত ভালো লাগছে যে ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না। আমাকে বাছাই করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ।’

ফুটবলে ব্রাজিলের সমর্থক নাহিদও উচ্ছ্বসিত, ‘আমি ব্রাজিলকে সমর্থন করি, আর সেই দেশেই যাওয়ার সুযোগ পেয়েছি। পেলে-নেইমারের দেশে যাওয়ার সুযোগ পেয়ে খুব ভালো লাগছে। ব্রাজিলে প্রশিক্ষণ শেষে দেশে ফিরে কোনও বড় ক্লাবে খেলতে চাই। আমার স্বপ্ন জাতীয় দলে খেলা।’

নেইমারের দেশে যাচ্ছেন বলে মিঠুও দারুণ খুশি, ‘এটাকে আমাদের দেশের বিশাল প্রাপ্তি বলতে হবে। কখনও ব্রাজিলে যাওয়ার কথা কল্পনাও করিনি। নেইমারের খেলা আমি ভীষণ পছন্দ করি, আর এখন তার দেশেই যাচ্ছি। এই অর্জন ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়।’

আর নাজমুলের কথা, ‘ব্রাজিলে যাওয়ার সুযোগ পেয়ে খুব ভালো লাগছে। সুখবরটা পেয়ে আমার পরিবারের সদস্যরা দারুণ খুশি।’