বিশ্বকাপ বাছাইয়ে প্রতিপক্ষ লাওস বলেই খুশি বাংলাদেশ

বাংলাদেশ ফুটবল দলের গোল উদযাপন (ফাইল ছবি)বিশ্বকাপ ফুটবল খেলবে বাংলাদেশ- এই স্বপ্ন দেখাটাও বাড়াবাড়ি। অন্তত ফুটবলে বাংলাদেশ এখন যে অবস্থানে দাঁড়িয়ে আছে, তাতে বাছাই পর্বে ভালো করতে পারাটাই বড় প্রাপ্তি। সেদিকেই তাকিয়ে বাংলাদেশ। ২০২২ সালের কাতার বিশ্বকাপকে সামনে রেখে বাছাই পর্বের শেষ ধাপ থেকে শুরু করছে লাল-সবুজ জার্সিধারীরা।

শুধু কাতার বিশ্বকাপ নয়, একই সঙ্গে হবে ২০২৩ সালের এশিয়ান কাপের বাছাইও। যে বাছাইয়ের শুরুতে উতরাতে হবে লাওস বাধা। ৬ ও ১১ জুন হোম ও অ্যাওয়ে দুই লেগে জিততে পারলে মিলবে বাছাই পর্বে অন্তত আটটি ম্যাচ খেলার সুযোগ।

আর এই সুযোগ কোনও রকমেই হারাতে চান না বাংলাদেশ দলের কোচ জেমি ডে থেকে শুরু করে জীবন-সুফিলরা। তাদের দৃঢ় প্রত্যয়, যে করেই হোক লাওস বাধা অতিক্রম করে বিশ্বকাপের বাছাই পর্বে নিজেদের ‘সম্মানজনক’ জায়গায় নেওয়া।

গতবারের তিক্ত অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে চান না কেউই। রাশিয়া বিশ্বকাপকে সামনে রেখে ২০১৬ সালে ভুটানের কাছে হেরে সবকিছু বিসর্জন দিয়ে হয়েছিল। এবার তাই আটঘাট বেঁধেই বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য।

বাছাই পর্বে বাংলাদেশকে স্বপ্ন দেখাচ্ছেন কোচ জেমি ডে, যার অধীনে দল একটু একটু করে পাল্টে যাচ্ছে। চেনা প্রতিপক্ষ লাওসকে পেয়ে কিছুটা হলেও কি স্বস্তি কাজ করছে না? বাংলা ট্রিবিউনকে বাংলাদেশের ইংলিশ কোচ বললেন, ‘ড্র আমাদের জন্য ভালোই হয়েছে। লাওসের বিপক্ষে আগেও খেলার অভিজ্ঞতা আছে। দলের সবার ধারণা আছে। আমরা ওদের মাঠে খেলেছি, আবার সিলেটেও খেলেছি। তাই চেনা প্রতিপক্ষের বিপক্ষে খেলতে কিছুটা সুবিধা হবে।’

গত বছরের মার্চে লাওসের মাঠে পিছিয়ে পড়েও বাংলাদেশ ২-২ গোলে ড্র করে ফিরেছিল। আর সিলেটে বঙ্গবন্ধু কাপে তো বিপলু আহমেদের গোলে জয় নিয়েই মাঠ ছেড়েছিল লাল-সবুজের দল। যদিও ম্যাচ দুটিতে দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকায় জেমি সতর্ক, ‘সর্বশেষ দুটি ম্যাচেই বেশ প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে। তাতে ফল যে কারও পক্ষেই যেতে পারতো। সে জন্য আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা দিয়ে খেলতে হবে, যেন বাছাই পর্বের পরের ধাপে জায়গা করে নিতে পারি।’

বাংলাদেশের কোচে চোখ অনেক দূর থাকলেও আপাতত লাওস ম্যাচ নিয়েই তার ভাবনা, ‘লাওসের ম্যাচ জিততে পারলে তখন অনেক ম্যাচ খেলার সুযোগ থাকবে। আমাদের লক্ষ্য হলো যতদূর এগোনো যায়। সে্ই লক্ষ্যে আমরা মাঠে নামব।’

ফিফা র‌্যাংকিংয়ে দুই দলের পার্থক্য খুব বেশি নয়। বাংলাদেশ ১৮৮ নম্বরে, আর লাওস রয়েছে ১৮৪তম স্থানে। এই লাওসের বিপক্ষে গত বছরের মার্চে গোল করা মাহবুবুর রহমান সুফিল এবারও আত্মবিশ্বাসী, ‘ওদের মাঠে আমি গোল পেয়েছিলাম। ওখানে খেলা কিছুটা কঠিন হলেও আমরা ভালো খেলে শেষ পর্যন্ত ড্র করেছি। আবার সিলেটেও খেলেছি। আমার মনে হয় তাদের বিপক্ষে আমাদের জেতা সম্ভব। আর সুযোগ পেলে তো গোল করার চেষ্টা থাকবেই।’

সিলেটের ম্যাচে ফরোয়ার্ড বিপলু আহমেদের গোলে জয় এসেছিল। সেই তিনিও বলছেন, ‘লাওসকে পেয়ে আমরা ভয় পাচ্ছি না। সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার মিশনে তাদের হারাতেই হবে। আগে গোল করে দলকে জেতাতে ভূমিকা ছিল, এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না।’

এই মুহূর্তে ঘরোয়া ফুটবলে ফর্মে থাকা নাবীন নেওয়াজ জীবনের বক্তব্য, ‘বিশ্বকাপ ফুটবল বাছাইয়ে লাল-সবুজ পতাকাকে সামনে রেখে খেলব। আশা করছি লাওসের বিপক্ষে জিতে এগিয়ে যেতে পারব।’

তাদের মতো প্রত্যাশা বাংলাদেশের সব ফুটবলভক্তের। বিশ্বকাপে খেলার স্বপ্ন দেখার দুঃসাহস না দেখালেও বাছাই পর্বে অনেকটা পথ পাড়ি দিতে পারাটাও হবে অনেক বড় প্রাপ্তি।