বড় জয়ে কোচ বিস্মিত, অধিনায়ক নন

বাংলাদেশের কোচ জেমি ডে এবং অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়াএকটি জয়ের জন্য বাংলাদেশ চাতক পাখির মতো তৃষ্ণার্ত ছিল। সেই কবে ভুটানের বিপক্ষে ঢাকায় দুটি প্রীতি ম্যাচে বড় ব্যবধানে জিতেছিল। এরপর থেকে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে জয়হীন জেমি ডের ছাত্ররা। পাঁচ ম্যাচের একটিতে ড্র ও বাকিগুলোতে হারের যন্ত্রণায় পুড়ছিল! বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ আন্তর্জাতিক ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে শিরোপাকে করা হয়েছে পাখির চোখ। তারপরও ফিলিস্তিনের কাছে হারতে হয়েছে প্রথম ম্যাচে। সেমিফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে যেখানে জয় ছাড়া বিকল্প ছিল না, সেখানে বাংলাদেশ পেয়েছে বড় জয়। শ্রীলঙ্কাকে তিন গোলে উড়িয়ে দিয়ে নকআউট পর্বে উঠেছে। বাংলাদেশের কোচ জেমি ডে তো ভাবতেই পারেননি এত বড় জয় পাবে তার দল!

এমন জয়ে বাংলাদেশের ইংলিশ কোচের বিস্মিত হওয়ার কারণও আছে। বাংলাদেশের ফরোয়ার্ডরা গোল পাচ্ছিলেন না। আত্মবিশ্বাসের জায়গাটা যে নড়বড়ে হয়ে যাচ্ছিল! সেখানে হঠাৎ ঘুরে দাঁড়িয়ে প্রতিপক্ষকে তছনছ করে ফেলবে, এটা তো অবাক করার মতোই। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জিতবে বাংলাদেশ। কিন্তু ব্যবধান হয়তো এক কিংবা দুই গোলের হতে পারে। এমনটিই ধারণা করেছিলেন ডে, ‘শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আমাদের জিততে হবে। এমন কঠিন সমীকরণের সামনে দল আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলেছে। আমি ভেবেছিলাম, দল হয়তো ন্যূনতম ব্যবধানে জিতবে। কিন্তু একপেশে পারফরম্যান্সে তিন গোলে জিতবে, এমনটা ভাবিনি!’

আসলে তেমন ভাবার সুযোগ বাংলাদেশ দলের স্ট্রাইকাররাই দেননি! এক নাবীব নেওয়াজ জীবনের ওপর ভরসা করে এতদিন আক্রমণভাগ সাজিয়ে আসছিলেন ডে। কিন্তু জীবন তো ভুটানের বিপক্ষে দুই গোল ছাড়া তেমন কিছুই করতে পারেননি। এবার তার চোটের কারণে মতিন-সাদদের কপাল খুলে যায়। বিশেষ করে মতিন মিয়ার।

ফিলিস্তিনের বিপক্ষে ভালো খেলতে পারেননি মতিন। কিন্তু শ্রীলঙ্কা ম্যাচে প্রতিপক্ষের রক্ষণ ভেঙে চুরমার করেছেন। দুটি গোলই এসেছে ‘ক্লিনিকাল ফিনিশিংয়ে’। মতিনের ওপর ভর করেই বলতে গেলে বাংলাদেশ এখন সেমিফাইনালে। ডে তাই আবারও তার প্রশংসা করেছেন, ‘মতিনের পারফরম্যান্স দেখে আমি খুব খুশি। আমি যেমনটা চেয়েছিলাম সে তাই করতে পেরেছে। আশা করছি এমন পারফরম্যান্স সামনের ম্যাচগুলোতেও দেখা যাবে।’

অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া চোটের কারণে শ্রীলঙ্কা ম্যাচে ছিলেন রিজার্ভ বেঞ্চে। সেখানে বসে দলের আক্রমণাত্মক ফুটবল উপভোগ করেছেন। সেই তিনিও মতিনকে দিচ্ছেন লেটার মার্কস, ‘নিঃসন্দেহে জয়ের নায়ক মতিন। আমি মনে করি সে আমাদের দলের গোল মেশিন হতে পারবে।  সে-ই জোড়া গোল করে দলকে এগিয়ে নিয়েছে।’

তবে বড় জয়ে ডের মতো বিস্মিত হচ্ছেন না জামাল, ‘ফিফা র‌্যাংকিংয়ে শ্রীলঙ্কা তো আমাদের পেছনে। তাই বড় ব্যবধানে ম্যাচ জিতে আমি মোটেও অবাক হইনি। আমরা জানতাম ম্যাচ জেতার সামর্থ্য আামাদের আছে। সেটাই প্রমাণিত মাঠে।’