চলে গেলেন ‘হিরো অব মিউনিখ’

দুর্ঘটনায় পড়া বিমানটির ছবির সামনে হ্যারি গ্রেগফুটবলের হৃদয়বিদারক ঘটনার তালিকায় ওপরের দিকে থাকবে ‘মিউনিখ ট্র্যাজেডি’। ১৯৫৮ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি যুগোশ্লাভিয়ার রেড স্টার বেলগ্রেডের বিপক্ষে ইউরোপিয়ান ক্লাব কাপের (বর্তমান উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ) ম্যাচ খেলে মিউনিখ থেকে ফিরছিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। কিন্তু মিউনিখ বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের ঠিক পরেই বিধ্বস্ত হয় ব্রিটিশ ইউরোপিয়ান এয়ারওয়েজের বিমানটি। নিহত ২৩ যাত্রীর ৮ জন ছিলেন ম্যানইউর ফুটবলার।

নিহতের সংখ্যা বাড়তে পারতো, যদি না হ্যারি গ্রেগ থাকতেন। গ্রেগ নিজেও ছিলেন বিমানে। ‘ক্র্যাশ’ করার পর কোনও রকমে বেরিয়ে এসে নিজের দিকে তাকাননি, ‍দুই সতীর্থ ববি চার্লটন ও ডেনিস ভায়োলেট, মারাত্মক আহত এক অন্তঃসত্ত্বা মহিলা এবং তার ২০ মাস বয়সী মেয়েকে বের করে নিয়ে আসেন বিমানের ভেতর থেকে। সেই থেকে তার নাম ‘হিরো অব মিউনিখ’।

মিউনিখের সেই বীর ৮৭ বছর বয়সে চলে গেলেন পৃথিবী ছেড়ে। সোমবার হ্যারি গ্রেগ ফাউন্ডেশন দুঃসংবাদটি দিয়েছে। উত্তর আয়ারল্যান্ডের একটি হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াইয়ে হার মেনেছেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সাবেক গোলকিপার।

মিউনিখ ট্র্যাজেডির ৫০তম বার্ষিকীর স্মরণসভায় ববি চার্লটন ও হ্যারি গ্রেগপ্রিয় বন্ধুকে হারিয়ে মর্মাহত স্যার ববি চার্লটন। ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য বলেছেন, ‘মিউনিখে যা করেছে তার জন্য সে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। তবে সেই বীরত্ব ছাড়াও সে ছিল একজন দুর্দান্ত গোলকিপার।’

১৯৫৭ সালে সেই সময়ের সবচেয়ে দামি গোলকিপার হিসেবে ম্যানইউতে যোগ দেন গ্রেগ। এক বিবৃতিতে গভীর শোক প্রকাশ করে ইংল্যান্ডের জনপ্রিয় দলটি জানিয়েছে, ‘মিউনিখ বিমান দুর্ঘটনায় গ্রেগ শুধু নিজে বাঁচেননি, বিমানে ফিরে এসে অবিশ্বাস্য বীরত্বে সতীর্থ আর যাত্রীদের বাঁচিয়েছিলেন। এমনকি ওই ঘটনার সপ্তাহ দুয়েক পরে মাঠেও নেমেছিলেন। অসাধারণ ছিল তার ক্যারিয়ার।’

‘মিউনিখ ট্র্যাজেডি’র ঠিক ১৩ দিন পর এফএ কাপে শেফিল্ড ওয়েন্সডের বিপক্ষে খেলেছিলেন গ্রেগ। ম্যাচটি জিতেছিল ম্যানইউ। উত্তর আয়ারল্যান্ডের জার্সিতে ২৫টি ম্যাচ খেলা গ্রেগের হাতে উঠেছিল ১৯৫৮ বিশ্বকাপের সেরা গোলকিপারের পুরস্কার। গত বছর পেয়েছেন অর্ডার অব ব্রিটিশ এম্পায়ার (ওবিই)। আর এ বছর পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে পাড়ি দিলেন অন্য ভুবনে।