ধৈর্য ধরে আছেন জয়া চাকমা

২০১৯ সালে তার ক্যারিয়ারের বড় সুখবরটা এসেছিল। বাংলাদেশের প্রথম মহিলা ফিফা রেফারি হয়ে চারদিকে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলেন জয়া চাকমা। এরইমধ্যে গত বছর ঢাকায় বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া প্রীতি ম্যাচে বাঁশি বাজানোর অভিজ্ঞতাও হয়েছে। কিন্তু ফিফা কিংবা এএফসির স্বীকৃত ম্যাচ পরিচালনা করার সুযোগ এখনও হয়নি। টানা দুবার পরীক্ষা দিয়েও কোথায় যেন আটকে যাচ্ছেন ‘পাহাড়ি কন্যা।’

নিয়ম অনুযায়ী ফিফা-এএফসির স্বীকৃত ম্যাচ পরিচালনা করতে হলে এএফসি এলিট রেফারি হতে হয়। এর জন্য চার ধাপের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া বাধ্যতামূলক। ভারতের বেনারসে ফিজিক্যাল এডুকেশনের ওপর উচ্চতর পড়াশোনা করে জয়া চাকমা নিজেকে সমৃদ্ধ করেছেন। গত বছরের আগস্টে প্রথমবারের মতো জামশেদপুরে পরীক্ষা দিলেও সেখানে কাঙ্ক্ষিত ফলটা আসেনি। ভাগ্য বদলায়নি এবারও। মাসের শুরুতে মালয়েশিয়ায় পরীক্ষা দিয়েও চূড়ান্ত পর্বের তিন ধাপের পরীক্ষাতেও জায়গা হয়নি। বাংলাদেশ থেকে নাসির উদ্দিন ও সালমা আক্তার শুধু প্রাক বাছাই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন।

বারবার ব্যর্থ হওয়ায় যেখানে মনোবলই হারিয়ে ফেলার কথা, সেখানে ৩০ বছর বয়সী সাবেক ফুটবলার এখনই হাল ছেড়ে দিচ্ছেন না। বাংলা ট্রিবিউনের কাছে জয়ার কথাতেই বোঝা গেলো ধৈর্য ধরে আছেন তিনি, ‘আমি চেষ্টা করে যাচ্ছি। জানি না কবে হবে। দেওয়ার মালিক ওপরে (সৃষ্টিকর্তা) একজন আছেন। আমি চেষ্টাই করতে পারি, আর কিছু না। তাই চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমি যে চেষ্টা করে যাচ্ছি তা আপনারা খালি চোখে দেখবেন না। এটা শুধু আমি ও আমার পরিবার জানে।’
জয়া একই সঙ্গে রেফারিং, বিকেএসপিতে মেয়েদের ফুটবল কোচিং ও পড়াশোনার কাজ করেছেন। অনেক কষ্ট হলেও রুটিন করেই সবকিছু চালাতে হচ্ছে তাকে। জয়া আগেও বলেছিলেন, ‘সবকিছু একসঙ্গে করতে কষ্ট তো হয়ই। ভারসাম্য করে করতে হয়। রেফারিং করে তো জীবন নির্বাহ করা যায় না। কোচিং দিনশেষে অর্থনৈতিক নিরাপত্তা দেয়। বলতে পারেন কোচিংয়ের টাকা দিয়ে রেফারিং চালিয়ে যাচ্ছি। রেফারিংয়ের প্রতি আলাদা ভালোবাসা আছে। আর পড়াশোনার তো কোনও বিকল্প নেই।’
পাহাড়ি কন্যার মনে দৃঢ় সংকল্প- কঠিন বাধা পেরিয়ে জয় করবেন সবকিছু। বাফুফের হেড অব রেফারিজ আজাদ রহমানও তাকে নিয়ে আশাবাদী, ‘এএফসির এলিট রেফারি হতে কোর্সের প্রাথমিক পরীক্ষাতে মালয়েশিয়ায় জয়া চাকমা উত্তীর্ণ হতে পারেনি। কঠিন পরিশ্রম করলে হয়তো সামনের দিকে দরজা খুলে যাবে। আমরা আশাবাদী।’