সাফ চ্যাম্পিয়নশিপকে সামনে রেখে হঠাৎ জাতীয় দলে ডাক পেয়েছেন মোরছালিন। মাত্র ১৯ বছর বয়সে ডাক পেলেও ফুটবলে মোরছালিন নিজেকে সঁপে দিয়েছেন সেই ১২ বছর বয়সে। তার পর থেকে ফুটবলই তার ধ্যান-জ্ঞান। অনূর্ধ্ব-১২ দলে জায়গা পেয়ে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। বিকেএসপিতে পড়াশোনা করে তৃতীয় বিভাগ হয়ে প্রিমিয়ার লিগে খেলার সুযোগ পেতেই তার ভাগ্য সুপ্রসন্ন হতে থাকে। গতবছর লোনে মোহামেডানে খেলে নিজেকে পাদপ্রদীপের আলোয় নিয়ে আসেন। এই বছর তো বসুন্ধরা কিংসের হয়ে মাত্র আটটি ম্যাচ খেলে (চারটিতে শুরুর একাদশে) জাতীয় দলের দরজাই খুলে গেছে তার। ভারতের বেঙ্গালুরুতে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপকে সামনে রেখে প্রথমবারের মতো ডাক পেয়েছেন।
হাভিয়ের কাবরেরার মন জয় করলেও মোরছালিন স্প্যানিশ কোচের মনোজগতে ঘুরপাক খাচ্ছিলেন অনেক দিন ধরে। তার ওপর দুই ফুটবলারের চোট এই অ্যাটাকিং মিডফিল্ডারকে রাখে সুবিধাজনক জায়গায়। বিশেষ করে প্রিমিয়ার লিগে ফিরতি পর্বে শেখ রাসেলের বিপক্ষে বক্সের বাইরে থেকে মোরছালিনের জোরালো শটে গোল করার দৃশ্যটি কাবরেরার বেশ মনে ধরেছে। এছাড়া সেই ম্যাচে রবিনিয়োকে দিয়ে দারুণ এক গোলও করিয়েছেন।
সব মিলিয়ে ফরিদপুরের চরভদ্রআসন থেকে উঠে আসা ফুটবলারকে নিয়ে বেশ আশাবাদী টিম ম্যানেজমেন্ট। সহকারী কোচ হাসান আল মামুন বাংলা ট্রিবিউনকে যেমন বলেছেন, ‘মোরছালিন প্রতিভাবান ফুটবলার। তাকে ঠিকমতো পরিচর্যা করলে বড়মাপের ফুটবলার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। শেখ রাসেলের বিপক্ষে তার করা গোল দেখে কাবরেরা বেশ মুগ্ধ হয়েছেন। তখনই তিনি বলেছিলেন, বক্সের বাইরে থেকে স্থানীয় খেলোয়াড়দের পায়ে এমন গোল সাধারণত দেখা যায় না। আর এখন তো সে জাতীয় দলে সুযোগই পেলো।’
পরিবার নিয়ে আক্ষেপ থাকলেও যে কারণে এতদূর পর্যন্ত আসা তা কিছুটা হলেও ঘুচেছে বলে মনে করেন মোরছালিন, ‘ফুটবলের জন্যই সবকিছু ছাড় দিয়েছি। আমাকে একসময় বড়মাপের ফুটবলার হতে হবে। সেই লক্ষ্যে পরিশ্রম করে যাচ্ছি। জাতীয় দলে ডাক পাওয়ার খবর শুনে বাবা-মাসহ সবাই খুশি।’
উঠতি ফুটবলার হয়ে নজর কেড়েছেন। খেলার পাশাপাশি পড়াশোনাতেও ভালো। এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ফাইভ পেয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পর এবার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিচ্ছেন। লক্ষ্য হলো পড়াশোনায় সর্বোচ্চ ডিগ্রি অর্জন। তবে মাত্র ১৯ বছর বয়সী মোরছালিনের আপাতত লক্ষ্য হলো চূড়ান্ত স্কোয়াডে জায়গা করে নেওয়া, ‘আমার জায়গায় সোহেল রানা ভাইসহ অন্যরা খেলেন। আমার বিশ্বাস অনুশীলন করে কোচের মন জয় করতে পারবো। তাহলে একসময় চূড়ান্ত স্কোয়াডে জায়গা করে নেওয়ার সুযোগ হবে।’