যার হাতে গড়া জাতীয় হকি দল

জাতীয় হকি দলকে শতাধিক খেলোয়াড় উপহার দিয়েছেন কাওসার আলী। ছবি-ফেসবুকসকাল থেকে ব্যস্ত থাকতেন খেলোয়াড় গড়ার কাজে। কিন্তু গত রবিবার থেকে তার হাতে অফুরন্ত অবসর। দীর্ঘ ৩১ বছর বিকেএসপিতে চাকরি করে অবসর নিয়েছেন কাওসার আলী। একই সঙ্গে ফুটবল আর হকি খেললেও কোচিং হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন পরেরটিকে। সেই ১৯৮৭ সালে শুরু করে অবসরে যাওয়ার আগ পর্যন্ত জাতীয় হকি দলকে উপহার দিয়েছেন শতাধিক খেলোয়াড়।

বিকেএসপির হকি মূলত তার হাতে গড়া। জাতীয় দলের সাবেক তারকা মামুনুর রশীদ থেকে শুরু করে বর্তমান জিমি-চয়ন কিংবা রোমান-আরশাদদের তিনিই ‘গুরু’। বর্তমান জাতীয় দলের সব সদস্যই বিকেএসপির সাবেক ছাত্র। গত মাসে অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপে বাংলাদেশ দলের ১৮ জনই ছিলেন কাওসার আলীর ছাত্র।

অবসর জীবনের শুরুতে এটাই বেশি তৃপ্তি দিচ্ছে তাকে। বাংলা ট্রিবিউনকে কাওসার আলী বললেন, ‘আমি কোচ হওয়ার পর অনেক খেলোয়াড় বিকেএসপি থেকে উঠে এসেছে। তাদের মধ্যে জাতীয় দলেই খেলেছে ১২০ জন। বর্তমান জাতীয় দলের সবাই বিকেএসপির। ভাবতেই ভালো লাগছে যে কাজের পুরস্কার পেয়েছি আমি।’

ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন হকি দিয়ে। জাতীয় দলের সাবেক খেলোয়াড় কাওসার আলীর পজিশন ছিল রাইট উইং। একই সঙ্গে ফুটবল খেলেছেন, কিছুদিন প্রতিনিধিত্বও করেছেন জাতীয় দলকে। তবে অবসরের পর ফুটবলে থাকেননি। কারণটাও জানালেন নিজেই, ‘ফুটবলে অনেক মারপ্যাঁচ ছিল। তাই কোচিংয়ে আসার সময় হকিতে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।’

শিষ্যদের সঙ্গে কাওসার আলী। ছবি-ফেসবুকদীর্ঘ কোচিং-জীবন যেমন তৃপ্তি দিয়েছে, তেমনি হতাশাও কম নয় তার, ‘অতীতে অনেক ক্রীড়াপ্রেমীর মধ্যে হকি নিয়ে উন্মাদনা ছিল। এখন আর তা নেই। বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমরা এগিয়ে যেতে পারিনি। এটা আমাকে ভীষণ কষ্ট দেয়।’

হকি ফেডারেশনের কর্মকাণ্ডে তিনি বিরক্ত, ‘হকিতে কোনও পরিকল্পনা নেই, ভালো কর্মকর্তা নেই, সারা দেশে হকির চর্চাও নেই। স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা জেলায় তেমন খেলা হচ্ছে না। হকি এখন বিকেএসপি নির্ভর। হকি ফেডারেশনের সৌভাগ্য যে সরকারি অর্থায়নে বিএকএসপি হয়েছে। যে কারণে হকি ধুঁকে ধুঁকে চললেও বেঁচে আছে।’

বিকেএসপি থেকে অবসর নিলেও হকির সঙ্গেই থাকার ইচ্ছে কাওসার আলীর, আর সেটা খেলোয়াড় তৈরির কারিগর হিসেবে।