বেশ কিছু দিন ধরে অসুস্থ ছিলেন জাতীয় দলের তারকা রাসেল মাহমুদ জিমির বাবা। ব্রেইন স্ট্রোক, কিডনি জটিলতা সহ বেশ কিছু রোগ বাসা বেঁধেছিল তার শরীরে। গত কয়েকটা দিন হাসপাতাল থেকে বাসা আর বাসা থেকে হাসপাতাল করে কেটেছে তার।
দিন চারেক আগে হকি ফেডারেশন থেকে জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কারের জন্যে সোনা মিয়ার নাম প্রাথমিকভাবে বাছাই হয়েছিল। কিন্তু এই খবর শোনার মতো অবস্থা ছিল না তার। মৃত্যুকালে স্ত্রী ও দুই ছেলে রেখে গেছেন তিনি। সোনা মিয়ার দুই ছেলেই হকি খেলোয়াড়, একজন জিমি, অন্যজন রাকিন আহমেদ।
পুরনো ঢাকার গোলাম মোস্তফা লেনে জন্ম নেওয়া সোনা মিয়া আরমানিটোলা স্কুল ও তৎকালীন জগন্নাথ কলেজে পড়াশোনা করেছেন। স্কুলে থাকতেই হকিতে হাতেখড়ি। ১৯৬৩ সালে আজাদ স্পোর্টিং দিয়ে শুরু ক্যারিয়ার। এরপর কম্বাইন্ড, ভিক্টোরিয়া ও আবাহনীতে খেলে অবসর নিয়েছেন ১৯৮৮ সালে।
পাকিস্তান জুনিয়র দলে খেলার সুযোগ হলেও মূল দলে তা আর হয়নি। প্রাথমিক দলে নানা কারণে জায়গা হয়নি। তবে লাল-সবুজ দলের হয়ে একাধিকবার স্টিকওয়ার্কে কারিকুরি দেখিয়েছেন। খেলোয়াড়ি জীবন শেষে আবাহনী, মেরিনার্স, ঊষা ও অ্যাজাক্সের কোচ ছিলেন। ১৯৮৯ সালে এশিয়া কাপে বাংলাদেশ খেলেছে তার অধীনে। ‘এ’ গ্রেড আম্পায়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন করার অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। হকি ফেডাশেনের নির্বাহী কমিটির সদস্য হিসেবেও দক্ষতার স্বাক্ষর রেখে গেছেন।
শুধু যে হকি খেলতেন কিংবা সংশ্লিষ্ট ছিলেন, তা নয়। ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে অ্যাথলেটিকস ও ক্রিকেটও খেলেছেন। অ্যাথলেটিকসের বিভিন্ন ইভেন্টে আন্তঃকলেজ চ্যাম্পিয়ন ছিলেন। এমন এক কিংবদন্তির মৃত্যুতে হকি ফেডারেশন শোক প্রকাশ করেছে। ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সাদেক স্মৃতিচারণ করে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছেন, ‘আমরা এক সঙ্গে খেলছি। সবাই পছন্দ করতো তাকে। হাসিখুশি ছিলেন। পাকিস্তানিরা ঢাকায় এসে সোনা মিয়ার খেলা দেখে তার নাম দিয়ে গেছে বাংলার টাইগার। তার খেলাতে অন্যরকম আগ্রাসী মনোভাব ছিল। স্কোরিং ভালো ছিল, শুটিংয়েও ছিলেন দারুণ।’
বেলা ২টায় মওলানা ভাসানী হকি স্টেডিয়ামে প্রথম নামাজে জানাজা এবং বাদ আসর চকবাজার শাহী মসজিদে দ্বিতীয় জানাজার পর সোনা মিয়াকে আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হয়। হকি ফেডারেশন, আবাহনী, বিএসপিএ, বিএসজেএ সহ বেশ কয়েকটি সংগঠন তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে।