শিরোপা উৎসবের মাঝে একটু আক্ষেপ

ছয় বছর পর হকি লিগের শিরোপা জিতেছে মোহামেডানপ্রায় পাঁচ মাস ভাগ্য ঝুলে থাকার পর ফেডারেশনের সিদ্ধান্তে প্রিমিয়ার হকি লিগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে মোহামেডান। দীর্ঘ ছয় বছর পর লিগ শিরোপা জিতে ঐতিহ্যবাহী ক্লাবটি উৎফুল্ল। শনিবার ক্লাব প্রাঙ্গণে শিরোপা উৎসব করেছেন দলটির কোচ-খেলোয়াড়-কর্মকর্তারা। কিন্তু উচ্ছ্বাসের মাঝেও একটা আক্ষেপ কুরে কুরে খাচ্ছে মোহামেডানকে। শিরোপা উদযাপন যে মাঠে করতে পারেনি তারা!

গত ৭ জুন সুপার ফাইভের শেষ ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল মোহামেডান ও মেরিনার্স। সেদিন মওলানা ভাসানী হকি স্টেডিয়ামে ড্র করলেই শিরোপা জিততো মোহামেডান। কিন্তু ৪৪ মিনিট পর এক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় খেলা শেষ হয়নি। ম্যাচে তখন ১-১ সমতা ছিল। গত ৩০ অক্টোবর নির্বাহী কমিটির সভায় ম্যাচটা ড্র ধরে নিয়ে মোহামেডানকে চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করে হকি ফেডারেশন। রানার্স-আপ হয় আবাহনী, তৃতীয় মেরিনার্স। তিন দলের পয়েন্ট ৪০, ৩৯ ও ৩৭।

মোহামেডান চেয়েছিল মাঠের লড়াইয়ে জিতে শিরোপা উৎসব করতে। কিন্তু সেই আশা পূরণ হয়নি। দলটির কোচ মওদুদুর রহমান শুভর কণ্ঠে তাই আক্ষেপ ধরা পড়লো স্পষ্ট। বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বললেন, ‘মাঠে জয়ের আনন্দ অন্যরকম। মাঠে খেলা হবে, খেলার পর রেজাল্ট আসবে। এক দল জিতবে, এক দল হারবে। এটাই তো স্বাভাবিক। কিন্তু টেবিলে শিরোপা জয়ের ঘোষণায় উৎসবের আমেজ সেভাবে থাকে না।’

২০০৪-০৫ মৌসুমে শুভর অধিনায়কত্বে প্রথমবারের মতো লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ঊষা ক্রীড়া চক্র। আবাহনীর জার্সিতেও শিরোপার মধুর স্বাদ পেয়েছেন তিনি। মাঠের ভেতরে আর বাইরের সিদ্ধান্তে শিরোপা জয় নিয়ে তার তুলনামূলক বিশ্লেষণ, ‘ঊষা আর আবাহনীর হয়ে মাঠে খেলেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলাম। সেই আনন্দর সঙ্গে এই শিরোপাকে মেলানো যাবে না। আসলে এটা আমাদের সমস্যা। আমরা পরাজয়কে সহজভাবে নিতে পারি না, উদার হতে পারি না।’

ক্লাবগুলোকে আরও উদার হওয়ার আহ্বান জানিয়ে শুভর মন্তব্য, ‘সবার মধ্যে আত্মত্যাগের মানসিকতা থাকতে হবে। আজকে আমি চ্যাম্পিয়ন হলাম, কালকে আপনি হবেন। এভাবেই তো চলতে হবে। নইলে হকিকে এগিয়ে নেওয়া কঠিন। কই ফুটবলে তো কখনও সমস্যা হয় না! ফুটবলে তো মাঠের লড়াইয়ে শিরোপা নিষ্পত্তি হচ্ছে। তাহলে হকিতে কেন হবে না? এটা থেকে বের হতে না পারলে হকি আরও পিছনের দিকে যাবে।’