দারিদ্র্যকে হারিয়ে সাদিয়ার বিশ্বজয়ের স্বপ্ন

ক্রীড়াঙ্গনে বহুদূর যাওয়ার স্বপ্ন সাদিয়ারবিকেল হলেই খেলার মাঠে দৌড়ঝাঁপ। উদ্দেশ্য ব্যাটে-বলে নিজেকে ঝালিয়ে নেওয়া। খেলার মাঠ রাজমিস্ত্রি বাবার মেয়েকে দেখায় বিশ্বজয়ের স্বপ্ন। সৈয়দপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী সাদিয়া আক্তার পড়াশোনার পাশাপাশি খেলার মাঠেও সমানতালে দেখিয়ে চলছে দাপট। ক্রিকেট, ফুটবল, হ্যান্ডবলের সঙ্গে ভলিবলেও তার সমান পারদর্শিতা। আবার ১০০ ও ২০০ মিটার দৌড়ের পাশাপাশি সাঁতারেও চলছে তার একক রাজত্ব।

জেলা পর্যায়ে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে সাদিয়া জিতেছে অসংখ্য পুরস্কার। চলতি বছরই যেমন বাংলাদেশ মহিলা ক্রীড়া সংস্থা কর্তৃক আয়োজিত ১০০ মিটার দৌড় প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়ে জিতেছে সোনার পদক।

বছর চারেক আগে মা হারানো সাদিয়া এখন পর্যন্ত কোনও একক ইভেন্টে অংশ নিয়ে প্রথম ছাড়া দ্বিতীয় হয়নি। অ্যাথলেটিকসে দাপট দেখানো সাদিয়ার স্বপ্ন অবশ্য ক্রিকেটার হওয়ার। ব্যাটে-বলে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানকে সামনে রেখে সাদিয়া নিজেকে নিয়ে যেতে চায় অনেক দূর। যদিও আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল পরিবারের এই তরুণীর স্বপ্ন পূরণ হবে কিনা, সেটা ভবিষ্যতের হাতে।

তবে দারিদ্র্যের কাছে হার মানবে না সাদিয়া। বাংলা ট্রিবিউনকে নিজের স্বপ্নের কথা ভাগাভাগি করেছে সে এভাবে, ‘সবসময় জেতার জন্য খেলি। প্রত্যেকটা খেলায় নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করি। কোনও ভয় নেই আমার, কোনও কিছু আমাকে আটকাতে পারবে না।’ সঙ্গে যোগ করেছে, ‘বেশিরভাগ মেয়ে বড় হওয়ার সঙ্গে খেলাধুলাকে এড়িয়ে চলতে থাকে, কিন্তু আমি ঠিক এর উল্টো। প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে এই ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছি। খেলাধুলায় নিজের একটা জায়গা তৈরি করতে চাই। সেই সঙ্গে বাবা, ভাই-বোনের আর্থিক সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে চাই।’

বাবার সঙ্গে সাদিয়াসৈয়দপুরের ক্রিকেট ক্লাব রাইজিং স্টারের কোচ বাবলু হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছেন, ‘খেলার প্রতি মেয়েটির খুবই আগ্রহ। ব্যাটিংয়ে যেমন পারদর্শী, তেমনি ফাস্ট বোলিংয়েও গতিতে তার জুড়ি নেই। অস্বচ্ছল পরিবারের মেয়ে হয়েও খেলার প্রতি তার আগ্রহের শেষ নেই। সহযোগিতা পেলে সাদিয়া জেলার মুখ উজ্জ্বল করবে।’

সাদিয়া জিততে ভালোবাসে। পরিবারের মুখে ফোটাতে চায় হাসি। এজন্য পাড়ি দিতে চায় বহুদূরের পথ। একটু সহযোগিতা হয়তো ক্রীড়াঙ্গনে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ তারকা বানাতে পারে নীলফামারীর এই তরুণীকে।